চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

সু স্থ থা কু ন

‘সাবধানে’ দাঁত না মাজলে ক্ষতির আশঙ্কা

২৩ নভেম্বর, ২০১৯ | ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ

নিয়মিত দাঁত মাজা জরুরি, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু টুথপেস্ট বাছাই ও টুথব্রাশ চালনার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল না রাখলে উলটো দাঁতের ক্ষতি হতে পারে। তাই সঠিক মাত্রায় ঠিকমতো দাঁতের পরিচর্যা জরুরি।

প্রতি বছর মাথাপিছু টুথপেস্টের ছয়টি টিউব, অর্থাৎ বছরে ৪০ কোটি টিউব ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে দাঁত সাদা করে, এমন টুথপেস্টের চাহিদা খুব বাড়ছে। এমন টুথপেস্ট ব্যবহার করলে সত্যি দাঁতের রং কিছুটা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। মনে হয়, দাঁত যেন কিছুটা পরিষ্কারও হয়েছে। কিন্তু দাঁত মাজার সময় বাড়াবাড়ি করাও ভালো নয়। বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ড. ফাল্ক শ্ভেনডিকে বলেন, ‘‘আমাদের এখানে দাঁত নিয়ে চিন্তিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। অনেকেই দাঁতের গুরুত্ব ও মুখ পরিষ্কার রাখার বিষয়ে সামগ্রিকভাবে অত্যন্ত সচেতন। এই রোগীরা অনেক সময় নিয়ে খুব ভালো করে দাঁত পরিষ্কার করেন। কিন্তু অনেকে বড্ড বেশি সময় ধরে দাঁত মাজেন।’’ এমনটা করলে বরং দাঁতের ক্ষতির আশঙ্কা বেড়ে যায়। বিশেষ করে মাড়ির কাছে ‘ডেন্টাল নেক’-এর ক্ষতি হতে পারে। ড. ফাল্ক শ্ভেনডিকে ও তাঁর সহকর্মীরা প্রায়ই দাঁত মাজার এমন ক্ষতিকর চিহ্ন শনাক্ত করেন। ৩৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে এমন ক্ষতির মাত্রা প্রায় ৪৫ শতাংশ ছুঁয়েছে। ৬৫ থেকে ৭৪ বছরের মধ্যে সেই মাত্রা প্রায় ৫৮ শতাংশ।

বিশেষ করে যে সব টুথপেস্টের মধ্যে আরডিএ-র মাত্রা বেশি, সেগুলি দাঁতের ক্ষতি করতে পারে। আরডিএ টুথপেস্টের মধ্যে অ্যাব্রেসিভ বা ক্ষয়কারী পদার্থের পরিমাণ তুলে ধরে। সেই পরিমাণ যত বেশি, দাঁতের উপর ততই ঘষা লাগে। ড. শ্ভেনডিকে মনে করেন, ‘‘বিশেষ করে দাঁত সাদা করে তোলা টুথপেস্ট বেশি ক্ষয় করে। মোড়কের উপর ‘ব্লিচিং’ বা ‘হোয়াইটেনিং’ লেখা থাকলে তা শনাক্ত করা যায়। অন্যদিকে যে টুথপেস্ট অত্যধিক সংবেদনশীল দাঁতের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, তার মধ্যে অ্যাব্রেসিভের মাত্রা কম। অর্থাৎ যে টুথপেস্ট সংবেদনশীল দাঁতের পরিচর্যার জন্য বিপণন করা হয়, অ্যাব্রেসিভ এড়ানোর জন্য সেগুলিই উপযুক্ত।’’

উচ্চ মাত্রার আরডিএ-সহ দাঁত সাদা করার টুথপেস্ট একমাত্র সত্যিকারের প্রয়োজনেই ব্যবহার করা উচিত। এক থেকে দুই সপ্তাহের জন্য তার ব্যবহার সীমিত রাখা ভালো।

টুথব্রাশের চাপের মাত্রাও দাঁতের পরিচর্যার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর ফলে টুথপেস্টের ঘর্ষণের প্রভাব বাড়তে পারে। আসলে মাত্র ৭০ থেকে ১০০ গ্রামের বেশি পরিমাণ ব্যবহার করার অনুমতি নেই। ড. শ্ভেনডিকে বলেন, ‘‘এই সঞ্চালন সহজ নয়। সব সময় মানুষের কাছে ওজন মাপার যন্ত্র থাকে না। টেবিলের উপর পরীক্ষা করা যেতে পারে। টুথব্রাশ পুরোপুরি না বাঁকিয়ে হালকাভাবে সেটি চালনা করা উচিত।’’

তাই ইলেকট্রিক টুথব্রাশের মধ্যে প্রায়ই চাপ মাপার এক সেন্সর থাকে। আলোর সঙ্কেতের মাধ্যমে সতর্ক করে দেওয়া হয়। দাঁত মাজার আগে কী খাওয়া হয়েছিল, দাঁত মাজার সময় ঘর্ষণের ক্ষেত্রে সেই প্রশ্নও গুরুত্বপূর্ণ। ড. ফাল্ক শ্ভেনডিকে বলেন, ‘‘টক জাতীয় কিছু খাদ্য পা পানীয় নিয়ে থাকি, যেমন কিছু ফল বা ফলের রস – এমনকি এনার্জি ড্রিংক বা দই খেলে খেয়াল রাখতে হবে, যে দাঁতের এনামেল নরম হয়ে যায়। তখন দ্রুত ক্ষতি হতে পারে। তখন কমপক্ষে আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করা উচিত। মাঝে এক-দুই গ্লাস পানিও খেয়ে ফেললে ভালো। তারপর দাঁত মাজা উচিত।’’ পরিষ্কার ও উজ্জ্বল দাঁত অবশ্যই ভালো। তবে দাঁতের ক্ষতি করে সে কাজ করা উচিত নয়। সূত্র- ডয়চে ভেলে

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট