চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পিটাইরিয়াসিস রোসিয়া

৭ নভেম্বর, ২০১৯ | ১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

চর্মরোগটির ডাক্তারী নাম পিটাইরিয়াসিস রোসিয়া। এটি এদেশে
মোটামুটি দেখা যায় এমন একটি রোগ। ১০-৩৫ বছর বয়সী ও গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে বেশী দেখা যায়। রোগটির কারণ পুরাপুরি জানা যায়নি। তবে এটি কোন এলার্জি বা একজিমা নয়, আবার ফাংগাস বা ব্যাকটেরিয়া জনিত কোন প্রদাহও নয়। ভাইরাস একটি কারণ হতে পারে, কেননা রোগটির চিত্র অনেকটা ভাইরাল র‌্যাশের মতন। কিছুক্ষেত্রে এই চর্মরোগের সাথে হারপিস ভাইরাস ৬ এবং ৭ জড়িত থাকার ইতিহাস পাওয়া গেছে। এছাড়া রয়েছে কিছু

অনুঘটক- যেগুলো মাঝে মধ্যে এই চর্মরোগটিকে খুঁচিয়ে দিতে পারে।

যেমন- ইনফ্লুয়েনজা, টিকা, কিছু ঔষধ ইত্যাদি। চর্মচিত্র একটু ভয়ানক মনে হতে পারে কিন্তু এটি নিরীহ একটি চর্মরোগ। ৬-১২ সপ্তাহের মধ্যে ঔষধ ছাড়াই ভাল হয়ে যেতে পারে। তবে গর্ভাবস্থায় কিছু সমস্যা হয়।
আমাদের দেহকা-ে গোলাকার বা ডিম্বাকৃতি প্রাথমিক একটি মাত্র চর্মচিহ্ন দিয়ে রোগটির যাত্রা শুরু। এই প্রাথমিক লালচে বা বাদামি চিহ্নটি হেরাল্ড প্যাচ নামে পরিচিত, যা দেখতে অনেকটা দাদ এর মতন। প্যাচটি দেখা যাবার ১-২০ দিনের মধ্যে শুরু হয় পরবর্তী ধাপ। হেরাল্ড প্যাচের মত কিন্তু আকারে ছোট ছোট চর্মচিহ্ন দেখা দিতে থাকে সমস্ত দেহকা-ে। বুক, পেট, পিঠ বা পশ্চাৎ দেশ ছাড়াও এগুলো গলায়, বাহুতে কিংবা উরুতে বিস্তৃত হতে পারে। সাধারণত মাথা, মুখ বা

হাত-পায়ের তালুতে দেখা যায় না, তবে মুখের ভেতরে হতে পারে। পাতলা ও খসখসে গোলাকার প্যাচগুলি কিছু ক্ষেত্রে উঁচু বা মোটা হয়ে প্ল্যাকে পরিণত হয়। পরবর্তী ধাপের চর্মচিত্রটি দেখতে অনেকটা ক্রিসমাস ট্রি এর মত। সব সময় রোগটি এই দুই ধাপে অগ্রসর নাও হতে পারে। প্রাথমিক বা পরবর্তী ধাপ ধারাবাহিক না হয়ে একক ভাবেও দেখা দিতে পারে। এই চর্মরোগে উপসর্গ থাকে খুবই কম। অনেক সময় হালকা গলা ব্যথা, সর্দ্দি-জ্বর, শরীর ম্যাজম্যাজ করার কয়েকদিন পর লক্ষণ ফুটে উঠতে থাকে। সামান্য একটু চুলকানি থাকতে পারে- যা গরমে ঘামে বাড়ে। আগেই বলা হয়েছে রোগটি নিরীহ প্রকৃতির তবে মাঝে মধ্যে ব্যাপক হতে পারে।

যেহেতু এই চর্মরোগটির কারণ পুরাপুরি জানা যায়নি, তাই প্রতিরোধক চিকিৎসা তেমন একটা কাজে আসে না। তবে জানা অনুঘটকগুলি থেকে একটু সাবধানতা নেওয়া যেতে পারে। রোগটি ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে এমনিতেই চলে যায়, তাই প্রতিকারক চিকিৎসার খুব একটা প্রয়োজন হয় না। তবে রোগ নির্ণয় সহ জটিলতা বোঝার জন্য বা গর্ভাবস্তায় একজন অনুমোদিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুব দরকার। ক্ষেত্র বিশেষে ত্বকে লাগানোর জন্য মৃদু স্টেরয়েড বা চুলকানি বেশি হলে মুখে খাবার
এন্টি-হিস্টামিন দেওয়া হয়। পাশাপাশি রোদ ঘাম এড়িয়ে চলা, বাথ অয়েল বা সাবানের পরিপূরক দিয়ে স্নান, ত্বক মসৃণ রাখার জন্য
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার ইত্যাদি উপদেশ মেনে চলা আবশ্যক।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট