চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সু স্থ থা কু ন

রাতে না খেয়ে ঘুমানোর পাঁচ পরিণতি

২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:১৪ পূর্বাহ্ণ

ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য রাতে কিছু না খেয়ে সকালে সবকিছু গোগ্রাসে পেটে ভরতে থাকলে ওজন তো কমবেই না, বরং আরে বেড়ে যেতে পারে। একজন মানুষ যে কারণেই ডিনার থেকে বিরত থাকুক না কেন, তাকে কিছু পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে। এখানে রাতের খাবার না খেয়ে ঘুমানোর পাঁচ পরিণতি আলোচনা করা হলো।

* গভীর ঘুম আসবে না : ডিনার বা রাতের খাবার না খেয়েই ঘুমাতে গেলে আপনাকে বিছানায় এপাশ-ওপাশ করতে হতে পারে, অর্থাৎ খালিপেটে বিছানায় গেলে ঘুম বিঘ্নিত হতে পারে। ডিনার এড়িয়ে গেলে আপনি ভালো অনুভব করতে পারেন, কিন্তু যখন আপনি শেষপর্যন্ত ঘুমিয়ে পড়বেন তখন এ ক্ষুধা আপনার মস্তিষ্ককে মানসিকভাবে সতর্ক রাখবে, যার ফলে আপনার রাতে পর্যাপ্ত গভীর ঘুম হবে না, বলেন অ্যাকাডেমি ফর নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটেটিক্সের মুখপাত্র ওয়েসলি ডেলব্রিজ।
* ওজন বেড়ে যেতে পারে : ডা. ডেলব্রিজ বলেন, ‘অনেক লোকে মনে করেন যে তারা খালি পাকস্থলি নিয়ে বিছানায় গিয়ে শরীরের ওজন কমাতে ভূমিকা রাখছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো তারা নিজেদের ওজন আরো বাড়িয়ে তোলার ঝুঁকিতে আছেন- কারণ আপনি রাতে যত বেশি ক্ষুধার্ত হবেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠে তত বেশি খাওয়ার প্রবণতা দেখা দেবে।’ যদি আপনি অত্যধিক ক্ষুধার্ত না হওয়া পর্যন্ত খাবার খেতে অপেক্ষা করেন, তাহলে আপনার ব্লাড সুগারের মাত্রা এত বেশি কমে যেতে পারে যে চোখের সামনে যা দেখবেন তা মুখে দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খাবার এড়িয়ে যেতে চাইলে অন্তত ডার্ক চকলেটের একটি বর্গ অথবা এক মুঠো বাদাম অথবা অন্যান্য স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন, যেন সকালে জেগে ওঠে যা দেখেন তা খাওয়ার প্রবণতা রোধ হয়।
* পেশির ঘনত্ব কমে যেতে পারে : জিমে গিয়ে ব্যায়াম করলেও লাভ হবে না, যদি আপনি রাতে খালি পাকস্থলি নিয়ে ঘুমাতে যান। রাতে খাবার না খাওয়ার মানে হলো, প্রোটিনকে পেশিতে কনভার্ট করতে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি নেই- এর ফলে আপনার শরীর শক্তির জন্য পেশিকে ভাঙ্গতে শুরু করে, ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব কার্ডিওলজির একটি গবেষণা অনুসারে। এভাবে (খালিপেটে রাতে ঘুমানো) দীর্ঘদিন চললে আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পেশি বা হার্টের পেশিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দিনে ব্যায়াম থেকে সর্বোচ্চ উপকার পেতে চাইলে রাতে বিছানায় যাওয়ার কয়েক ঘন্টা পূর্বে ডিনার সেরে নেয়ার চেষ্টা করুন এবং নিশ্চিত হোন যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন খাচ্ছেন, পরামর্শ দেন এ গবেষণার গবেষকরা।
* শরীর শক্তির অভাবে ভুগতে পারে : ভাবছেন যে আপনার শরীরের জন্য রাতের খাবার প্রয়োজন নেই। আবার ভাবুন- আসলে কি তাই? এ প্রসঙ্গে ডা. ডেলব্রিজ বলেন, ‘আপনার শরীর দিনের ২৪ ঘন্টাই প্রতিনিয়ত শক্তি ব্যবহার করছে ও সবসময় ক্যালরি পুড়ছে- এর মানে হলো শরীরের কার্যক্রম ভালোভাবে সম্পাদনের জন্য ঘুমের সময়ও এটির জ্বালানি প্রয়োজন হয় আর এ জ্বালানি আসে খাবার থেকে।’ ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা পেয়েছেন, যেসব পুরুষ বিছানায় ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে ৩০ গ্রাম প্রোটিন সমৃদ্ধ শেক খেয়েছিল তাদের রেস্টিং এনার্জি সেসব পুরুষদের তুলনায় বেশি ব্যয় হয়েছিল যারা রাতে কিছুই খাননি- রেস্টিং এনার্জি এক্সপেনডিচারের মানে হলো, বিশ্রামের সময় শরীর যতটুকু শক্তি বা ক্যালরি পুড়ে। যদি আপনি কিছু না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েন, তাহলে নিঃশেষিত শক্তি মাত্রার প্রভাবে দিনের অবশিষ্ট সময়েও ভুগতে পারেন। তাই ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে অন্তত প্রোটিন সমৃদ্ধ স্ন্যাকস খাওয়ার কথা বিবেচনা করুন।
* মেজাজ খারাপ হতে পারে : কেউ রাতে খাবার না খেয়ে ঘুমালে পরের দিন তার মারাত্মক মুড সুইং হতে পারে, অর্থাৎ মেজাজ খারাপ হতে পারে অথবা রেগে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। তথ্যসূত্র : দ্য হেলদি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট