চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বন্দরের চিঠিতে শিপিং এজেন্টদের অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক 

২৬ নভেম্বর, ২০২০ | ১:১১ অপরাহ্ণ

জাহাজ শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণে গত অক্টোবর মাসে চিটাগাং চেম্বারকে দায়িত্ব দেয়ার কথা বলেছিল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই উদ্যোগের পরিসমাপ্তি না করেই চার বছর আগের মজুরি হার উল্লেখ করে স্টেক হোল্ডারদের পুনরায় চিঠি দেয়ায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে শিপিং এজেন্টদের মধ্যে।

তাদের বক্তব্য, একটি সালিশী উদ্যোগের পরিণতি না দেখেই বন্দর কর্তৃপক্ষের দেয়া মজুরির পুরনো চিঠি সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করবে।  প্রতিক্রিয়ায় বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহেই সালিশীর দায়িত্ব দিয়ে মজুরির বিষয়টির গ্রহণযোগ্য সমাধানের জন্য সহযোগিতা চেয়ে চিটাগাং চেম্বারকে চিঠি দেয়া হবে।

খবর নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ২৪ নভেম্বর শ্রমিক মজুরি কনটেইনার জাহাজের ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ ও কার্গো জাহাজের ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ বৃদ্ধির কথা বলে স্টেক হোল্ডারদের চিঠি দেয়। এতে উল্লেখ করা হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে বন্দরের সাথে বার্থ অপারেটর, টার্মিনাল অপারেটর ও শিপ হ্যান্ডেলিং অপারেটরদের সাথে চুক্তি অনুসারে কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী শ্রমিক কর্মচারীদের মজুরি বৃদ্ধির ফলে বার্থ, টার্মিনাল ও শিপ হ্যান্ডেলিং অপারেটরদের অধীনে নিয়োজিত শ্রমিকদের মজুরি কখন থেকে বৃদ্ধি পাবে এবং কি হারে বাড়বে তা উল্লেখ করা আছে। চিঠিতে ৬ষ্ঠ ও ৭ম দফায় কত তারিখে শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধি পাবে তাও উল্লেখ করা আছে। তবে এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে একাধিকবার বন্দরে সভা হয়েছিল। সর্বশেষ সভা অনুযায়ী এটি চেম্বারকে সমাধান করতে চিঠি দেওয়ার কথাও ছিল। চেম্বার কর্তৃপক্ষ উভয় পক্ষকে নিয়ে সমন্বয় করে দিবে এমনটাই কথা ছিল। কিন্তু পূর্বের চুক্তির দোহাই দিয়ে চিঠি পাঠানো হলে গত কয়েকটি সভা কেন হয়েছিল? সেগুলোরতো সমাধান এখনো চেম্বার থেকে হয়নি?

এদিকে, চেম্বার সূত্র জানিয়েছে এখনো বন্দরের শ্রমিক মজুরির বিষয়ে সমাধান করতে বন্দর থেকে কোন চিঠি পাননি তারা। এমনকি সর্বশেষ ২৪ নভেম্বরে সব স্টেকহোল্ডারদের পাঠানো চিঠিও চেম্বারকে দেওয়া হয়নি।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম পূর্বকোণকে বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে কয়েকবার উভয় পক্ষকে নিয়ে সভা করে শ্রমিক মজুরির বিষয়ে সমাধান করতে চেয়েছে। কিন্তু কোন পক্ষই এক হতে পারছে না। আর শ্রমিক মজুরির বিষয় বন্দরের দুই স্টেকহোল্ডাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাও বন্দর চেষ্টা করেছে সমাধান করে দিতে।

বন্দর থেকে পাঠানো সর্বশেষ চিঠি প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, এটি আগের চুক্তি অনুযায়ী নিয়মিত চিঠি। বন্দর থেকে আগামী সপ্তাহে চেম্বারকে এই বিষয়ে সমাধান করতে চিঠি দেওয়া হবে।

তবে, বন্দরের পাঠানো চিঠি যৌক্তিক বলে মন্তব্য করে বার্থ অপারেটরস, টার্মিনাল অপারেটস ও শিপ হ্যান্ডেলিং অপারেটরস ওনার্স এসোসিয়েশন সভাপতি ফজলে ইকরাম চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, পূর্বচুক্তি অনুযায়ী বন্দরের চিঠিতে উল্লেখিত শ্রমিক মজুরি যুক্তিযুক্ত। কিছু শিপিং এজেন্ট শ্রমিকদের ন্যায্য বর্ধিত মজুরি পরিশোধে অনীহা দেখায়। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী মজুরি প্রতি বছর বাড়ার কথা। আমরা শ্রমিকদের মজুরি প্রতি বছর বাড়াই, কিন্তু শিপিং এজেন্টরা তা পরিশোধে নারাজ।

এদিকে, শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি শফিকুল আলম জুয়েল পূর্বকোণকে বলেন, শ্রমিকদের অন বোর্ড অপারেশন বিল শুধুমাত্র শ্রমিক মজুরির উপর বাড়ালে আমাদের কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু মোট বিলের উপর ৯ শতাংশ ও ৪ শতাংশ বৃদ্ধি যুক্তিযুক্ত নয়।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট