চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

শেয়ার বাজারে রবি’র প্রভাব

ইফতেখারুল ইসলাম

২৫ নভেম্বর, ২০২০ | ১২:৫১ অপরাহ্ণ

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদনকে কেন্দ্র করে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর রবি শেয়ার বাজারে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। গত সোমবার ছিল রবি’র আইপিও আবেদনের শেষ তারিখ। এই সময়টাতে আইপিও আবেদনের হিড়িক পড়ে। আইপিও পেতে বিও একাউন্ট খোলার হিড়িক পড়ে। এমনকি পেশাদার শেয়ার ব্যবসায়ীদের অনেকেই কম দামে শেয়ার বিক্রি করে রবি’র আইপিওতে আবেদন করেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রবি’র আইপিও আবেদনের টাকা যোগাড় করতে অনেকেই কম দামে শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। কারণ কোনভাবেই রবি’র আইপিও পেয়ে গেলে কয়েকগুন লাভ হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন ধারণা থেকেই সবাই আবেদন করছেন। সিডিবিএলের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ৩০ দিনে এক লাখ ৪৬ হাজার ৩৪টি বিও একাউন্ট বেড়েছে, যা আগের চেয়ে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। গত সোমবার পর্যন্ত ২৪ লাখ ৯৪ হাজার ৪৩টি বিও একাউন্ট খোলা হয়েছে, যা এক মাস আগে ছিল ২৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯টি। মূলত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটার আইপিও বিনিয়োগ করতেই বিও একাউন্ট খোলার হিড়িক। সর্বশেষ এক মাসের মধ্যে তিন কোম্পানির আইপিওর চাঁদা জমা নেয়ার নির্ধারিত সময় ছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আইপিও (৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ) রবি আজিয়াটার চাঁদার টাকা জমা নেয়ার সময় ছিল ১৭ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর। তবে গত পাঁচ কার্যদিবসে দেশের দুই শেয়ার বাজারে সূচকের পতন ছিল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ার বাজার উঠানামা করাটাই স্বাভাবিক। উঠানামা না করলে মানুষ এই ব্যবসায় কেন আসবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে, কোন শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ছে বা কমছে কিনা। যদি এই ধরনের কিছু ঘটতে দেখা যায় তখন বুঝতে হবে সেখানে কোন ঘটনা আছে।

টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের পর দেশের শেয়ারবাজারে গতকাল মঙ্গলবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ছিল। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং আরেক শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। তালিকাভুক্ত প্রতিটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট কেনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা মার্জিন ঋণ পাবেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে এমন ঘোষণা আসায় গতকাল লেনদেনের শুরুতে সবকটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দাম বেড়ে যায়। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতেও। যা দিনের লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ফলে দিনভর ডিএসই লেনদেনে অংশ নেয়া ১৭৭ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ে। দাম কমেছে ৭১টি এবং ১০১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়ে যাওয়ায় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৮৩৩ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ধসঢ়; আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১১২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৬৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে গতকাল মঙ্গলবার মোট লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৪২ লাখ টাকা। ৪,৮৭৬টি লেনদেনের মাধ্যমে ৭১.৭৪ লাখ শেয়ার হাতবদল হয়েছে। প্রধান ইনডেক্স সিএসই সার্বিক শেয়ার মূল্যসূচক ৬৩.৪৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ১৩,৮৭০.৫৮ পয়েন্টে। সিএসই-৫০ সূচক ৪.১৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০৬.২০ তে। সিএসই শরিয়াহ ইনডেক্স ৭.৬৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০৫.৮৭ তে। সিএসই’তে ৩৩৫ স্ক্রিপ্ট এর মধ্যে গতকাল লেনদেন হয়েছে ২৩৫টির, এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১২৯টির, কমেছে ৫২টির। দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৪টির।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট