চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ব্যবসায়ীদের খরচ-সময় দুটোই কমবে

‘কনটেইনার রাউন্ড ইউজ’ ব্যবস্থা চালু ইপিজেডে

নিজস্ব প্রতিবেদক 

১৪ নভেম্বর, ২০২০ | ১২:৪২ অপরাহ্ণ

দেশের নয়টি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) থেকে আমদানি-রপ্তানির কাজে ব্যবহৃত কন্টেইনার পরিবহন কার্যক্রম আরও সহজ করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ইপিজেডগুলোতে পণ্য পরিবহনে ‘কনটেইনার রাউন্ড ইউজ’ ব্যবস্থা চালু করেছে। ১৪ অক্টোবর জারি হওয়া এনবিআর-এর এক সার্কুলারে বলা হয়, এ পদ্ধতি চালুর ফলে আমদানি ও রপ্তানিকারকদের খরচ কমার পাশাপাশি সময়ের অপচয় হ্রাস পাবে। একই সাথে সড়কের ওপরেও চাপ কমবে।

এখন থেকে কাঁচামাল নিয়ে যেসব কনটেইনার ইপিজেডে আসে সেগুলোকে আর খালি অবস্থায় ফিরে যেতে হবে না। রপ্তানি পণ্য নিয়ে ফিরবে একই কনটেইনার। এই সিদ্ধান্তের আগে একটি কন্টেইনার আমদানি পণ্য নিয়ে ইপিজেডে প্রবেশ করে পণ্য খালাস করে খালি অবস্থায়ই অফডকে চলে যেত। আবার রপ্তানি অর্ডার পেলে ওই খালি কন্টেইনার পুনরায় ইপিজেডে প্রবেশ করে রপ্তানি পণ্য নিয়ে বন্দরে প্রবেশ করতো। কিন্তু এখন থেকে আমদানি পণ্য খালাস করে দিয়ে কারো রপ্তানি পণ্য থাকলে সেটি লোড করে সরাসরি বন্দরে প্রবেশ করবে। এ পদ্ধতিকে বলা হচ্ছে ‘কন্টেইনার রাউন্ড ইউজ’ ব্যবস্থা।

কনটেইনার ব্যবস্থাপনা সহজ করতেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বন্ড সুবিধার আওতায় কাঁচামাল বহনকারী কন্টেইনারের ক্ষেত্রে এমন নির্দেশনা দিয়েছে।

এ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ইপিজেডের প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ড সুবিধার আওতায় সাধারণত কন্টেইনারে করে কাঁচামাল আমদানি করে থাকে। শিপিং এজেন্টরা ইপিজেডে পণ্য খালাসের পর ওই খালি কন্টেইনারগুলো তাদের ইয়ার্ডে নিয়ে রাখে। পরে ওই কারখানা কিংবা অন্য কারখানার রপ্তানি পণ্য নেওয়ার জন্য খালি কনটেইনারগুলোকে আবার ইপিজেডে নিয়ে যেতে হয়। এতে অতিরিক্ত সময় ও খরচ লাগতো। এসব ব্যয় কমাতে ইপিজেডে খালি কন্টেইনারে রপ্তানি পণ্য বোঝাই করা যাবে।

এ জন্য এনবিআর একটি প্রমিত কর্মপদ্ধতি (স্ট্যান্ডার্ড অব প্রসিডিউর) অনুসরণের আদেশ জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ইপিজেডের যেসব কোম্পানি এফসিএল বা এলসিএল কনটেইনারে পণ্য রপ্তানি করবে, সেগুলোকে শিপিং এজেন্টের কাছে অনলাইনে অর্ডার নিতে হবে। রপ্তানিকারকদের প্রতিটি রপ্তানি আদেশ সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের থেকে অনুমোদন করে রাখতে হবে। সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বা পদমর্যাদায় তার চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শিপিং অর্ডারসহ অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই করবেন। ওই কনটেইনারে জিপিএস ট্রাকিং সিস্টেম ও ইলেকট্রনিক সিল লাগানো হবে। তবে এ ট্রাকিং সিস্টেম চালু না হওয়া পর্যন্ত প্রচলিত বুলেট সিলই ব্যবহার করা হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জহির পূর্বকোণকে বলেন, ইপিজেডগুলোতে কন্টেইনারের রাউন্ড ট্রিপ সুবিধাটি এখন আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্টদের কাছে নতুন। তবে এই সুবিধা ব্যবহার করতে থাকলে সবার কাছে সহজবোধ্য ও সুবিধাজনক হবে। রাজস্ব বোর্ড এই সুবিধা দেওয়ার ফলে পরিবহন খরচ কমবে, সময় বাঁচবে এবং পরিবেশ অর্থাৎ রাস্তায় এই কন্টেইনার দুইবার যাতায়াত কমবে। তবে এই সুবিধা পুরোপুরি কাজে আসবে যদি আমদানি ও রপ্তানির শিপিং এজেন্ট একজনই হয়। আর কন্টেইনারের পরিমাণও সমান হয়। অর্থাৎ আমদানি কন্টেইনার এক টিইইউস হলে রপ্তানিও এক টিইইউস পরিমাণ হতে হবে। তবেই এর সুবিধা পুরোপুরি কাজে লাগবে।

এনবিআরের এই সিদ্ধান্তকে একটি যুগোপুযোগী সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে বাংলাদশে ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স এসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন পূর্বকোণকে বলেন, অনেক সময় বন্দরে এবং বিশেষ করে অফডকগুলোতে খালি কন্টেইনার পড়ে থাকে। এই খালি কন্টেইনার দুইবার যাতায়াতে পরিবহন খরচ যেমন বাঁচবে, তেমনি সময়েরও সাশ্রয় হবে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট