চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

করোনায় প্রণোদনা পাচ্ছেন ২১ হাজার ডেইরি খামারি

ইফতেখারুল ইসলাম

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ২:০১ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের ২১০৩৩ খামারি করোনাকালীন প্রণোদনা পাচ্ছেন। তালিকা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এরমধ্যে ডেইরি খামারি রয়েছেন ১৮২৮৬ জন, পোল্ট্রি খামারি ২৭৩৫ জন এবং হাঁসের খামারি রয়েছেন ১২ জন। তাদেরকে সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এককালীন প্রণোদনা দেয়া হবে। খামারের আকারের ভিত্তিতে প্রণোদনার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রণোদনা পাওয়ার জন্য চট্টগ্রামে দুই থেকে পাঁচটি গরুর ১৪৯৬১ জন খামারি, ৬ থেকে ৯টি গরুর ২৩৩৩ জন খামারি এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারির সংখ্যা ৯৯২ জন নির্ধারণ হয়েছে। মোট ১৮২৮৬ জন। অপরদিকে, চট্টগ্রামে সোনালী মুরগির খামার রয়েছে ৮৭টি। এর মধ্যে ১০০ থেকে ৫০০ মুরগির খামারের সংখ্যা ৩৩টি, ৫০০ থেকে ১০০০ মুরগির খামারের সংখ্যা ২০টি এবং এক হাজারের অধিক মুরগির খামারের সংখ্যা ২০টি। ৫০০ থেকে ১০০০ ব্রয়লার মুরগির খামারের সংখ্যা ৯৫৭টি, ১০০০ থেকে ২০০০ ব্রয়লার মুরগির খামারের সংখ্যা ৮৩৩টি এবং দুই হাজারের অধিক ব্রয়লার মুরগির খামারের সংখ্যা ৪২৮টি। ২০০ থেকে ৫০০ লেয়ার মুরগির খামারের সংখ্যা ২৩৪টি, ৫০০ থেকে এক হাজার লেয়ার মুরগির খামারের সংখ্যা ১৬৫টি এবং এক হাজারের অধিক লেয়ার মুরগির খামারের সংখ্যা ৩২টি। ১০০ থেকে ৩০০ হাঁসের খামারের সংখ্যা দুইটি, ৩০১ থেকে ৫০০ হাঁসের খামারের সংখ্যা চারটি এবং ৫০১ এর অধিক হাঁসের খামারের সংখ্যা ৬টি।

তালিকা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মিরসরাই উপজেলায় দুই থেকে পাঁচটি গরু আছে এমন খামারির সংখ্যা ৯১০জন, ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১৬৪ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ৫৫ জন। ফটিকছড়িতে দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ২১১৮ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১৫২ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ৭১ জন। সন্দ্বীপে দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ৮৩২ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ৯৫ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ৪৮ জন। সীতাকু-ে দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ৯৮৬ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১২৩ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ৪৮ জন। হাটহাজারীতে দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ৯০১ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১৭৩ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ৭২ জন। রাউজানে দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ৬৯২ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১৩৫ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ৫৭ জন। রাঙ্গুনিয়ায় দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ৮২১ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১২৬ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ৩৩ জন। বোয়ালখালীতে দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ৮৫১ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১২৮ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ১৪ জন। পটিয়ায় দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ১২১৪ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১৫৮ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ১৫৬ জন। কর্ণফুলীতে দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ৪৬৩ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১৫৬ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ২৩৬ জন। আনোয়ারায় দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ৭৫৩ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১২৯ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ৩২ জন। চন্দনাইশে দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ৬৭২ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১৪৭ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ১৫ জন। সাতকানিয়ায় দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ১৮৫১ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১৬৯ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ৩৭ জন। লোহাগাড়ায় দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ৭৩৯ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১২৩ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ১৯ জন। বাঁশখালীতে দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ৯০৪ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ১৪৪ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ১৪ জন। কোতোয়ালী থানায় দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ১৬ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ২৩ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ৮ জন। ডবলমুরিংয়ে দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ৭৫ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ৯৭ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ৩০ জন। পাঁচলাইশে দুই থেকে পাঁচটি গরুর খামারি ১৬৪ জন। ৬ থেকে ৯টি গরুর খামারি ৯১ জন এবং ১০ থেকে ২০টি গরুর খামারি ৪৯ জন।

চিটাগং ডেইরি ফার্ম এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হানিফ পূর্বকোণকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। যেসব খামারির নাম তালিকায় উঠেনি, কিংবা কোন কারণে বাদ পড়েছেন তাদেরকে চিটাগং ডেইরি ফার্ম এসোসিয়েশনের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সরকার চায় সব ক্ষতিগ্রস্ত খামারি যেন প্রণোদনা পায়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক পূর্বকোণকে জানান, সংখ্যাটা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদন হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম মেট্টো অঞ্চলের তালিকা এখনো তৈরি হয়নি। কারণ মেট্টো এলাকায় এখনো কমিটি গঠন হয়নি। কমিটি গঠনপূর্বক দ্রুত তালিকা তৈরি করে পাঠানো হবে।

তিনি জানান, প্রতিটি উপজেলা এবং থানা থেকে খামারিদের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি খামারির কাছে প্রণোদনার টাকা পৌঁছে যাবে।

উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতায় ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি-উন্নয়ন’ (দ্য লাইভস্টক এন্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট-এলডিডিপি) শীর্ষক একটি প্রকল্প ২০১৯ সাল থেকে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ৪ হাজার ২৮০ কোটি ৩৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকার এ প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। এ অর্থের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা হচ্ছে ৩ হাজার ৮৮৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটির কার্যক্রম চলছে পার্বত্য ৩টি জেলা ব্যতীত দেশের ৮ বিভাগের ৬১টি জেলার সব উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায়।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট