চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

নিরাপদ ভেবেই স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা

মোহাম্মদ আলী

১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ২:০৬ অপরাহ্ণ

স্বর্ণের বাজারে বেশ কিছুদিন ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। কখনো ঊঠছে। কখনো নামছে। চলতি বছরের সাড়ে ৮ মাসে দফায় দফায় ৬ বার স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশেষ করে করোনা মহামারীর কারণে বিশ্বের সবকিছু যখন স্থবির সেই সময়ে শুরু হয় স্বর্ণের উল্লম্ফন। স্বর্ণের উর্ধ্বগতির নেপথ্য কারণ নিরাপদ বিনিয়োগ।
স্বর্ণ ব্যবসায়ী এবং অর্থনীতিবিদরা স্বর্ণের দাম বাড়ার প্রসঙ্গে বলছেন, মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জন্য বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগ স্থবিরতা, তেল ও ডলারের দরপতনে অস্থির হয়ে ওঠে স্বর্ণের বাজার। ফলে স্বর্ণের রেকর্ড পরিমাণ দাম বেড়েছে। এছাড়াও স্বর্ণের চাহিদার শীর্ষে থাকা দেশগুলোতে (যুক্তরাষ্ট-চীন-ভারত) চলছে বাণিজ্যযুদ্ধ। এ কারণেও দাম বাড়ছে। এমনকি ভবিষ্যতে দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে তাও এই তিনটি দেশের স্থিরতার উপর নির্ভর করছে বলে মনে করেন তারা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সভাপতি এনামুল হক খান গণমাধ্যমকে বলেন, করোনায় বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমে গেছে উল্লেখযোগ্য হারে। এছাড়া ডলারেরও দর কমেছে। এসব কারণে মানুষ স্বর্ণে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। তাই দামও বাড়ছে।

তিনি বলেন, ‘করোনার আগে প্রতিদিন ব্যাগেজ রুলসের আওতায় ছয় হাজার থেকে আট হাজার ভরি সোনা দেশে আসত। কিন্তু করোনাকালে সেটি শূন্যের কোটায় নেমে যায়। তবে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলতে শুরু করায় বর্তমানে প্রতিদিন দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার ভরি সোনা আসছে। সরবরাহ ভালো থাকলেও শুধুমাত্র ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার দুর্বল হওয়ায় সোনার দাম বাড়াতে হয়েছে।’

বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি- বাজুসের তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম অস্থির হয়ে ওঠে। এতে ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৬১ হাজার ৫২৮ টাকা। এটি ছিল ওই সময় দেশের বাজারে সোনার সর্বোচ্চ দাম। এর ৬ মাসের ব্যবধানে ৬ আগস্ট সেই একই মানের সোনা বিক্রি হয় ৭৭ হাজার ২১৬ টাকা। এর আগে দেশে সোনার দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছিল ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর। সে সময় প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়িয়েছিল ৬০ হাজার ৬৫৩ টাকা।

বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস) চট্টগ্রামের সভাপতি মৃণাল কান্তি ধর দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘বৈশ্বিক এ মহামারির মধ্যে ৬ বার সোনার দাম বাড়ায় বাজুস। আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় করে এ দাম বাড়ানো হয়। এর মধ্যে ৬ আগস্ট দেশে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম সর্বোচ্চ ৭৭ হাজার ২১৬ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। বর্তমানে স্বর্ণের দাম কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। সর্বশেষ ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনা বিক্রি হয় ৭৪ হাজার টাকায়।’

মৃণাল কান্তি ধর বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সঙ্কট, চীন-যুক্তরাষ্টের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে ইউএস ডলারের প্রাধান্য খর্ব, জ্বালানি তেলের দর পতন এবং নানাবিধ অর্থনৈতিক সমীকরণের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের মূল্য দফায় দফায় বাড়ানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দেশীয় মার্কেটেও সোনার দাম বেড়ে গেছে।’

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট