চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পাইকাররা বলছেন সুদিনে যাচ্ছে দুর্দিন

মসলার বাজারে স্বস্তির হাওয়া

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

১৬ জুলাই, ২০২০ | ২:০২ অপরাহ্ণ

ঈদুল আজহাকে ঘিরে মসলাজাতীয় পণ্যের বাড়তি চাহিদা থাকে। এসময়ে বাজার থাকে সরগরম ও জমজমাট। বেচাবাট্টাও ভালো থাকে। দামও থাকে বাড়তি। ব্যস্ত সময় কাটায় পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। কিন্তু চলতি বছর করোনার কারণে উল্টোপথে হাঁটছে কোরবানের অত্যাবশকীয় পণ্য মসলার বাজার। বেচাকেনা কম থাকায় দামও কমতির দিকে রয়েছে।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মসলা আমদানিকারক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে তিন মাস ধরে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম ক্রমাগত কমছে। বিশ্ববাজারের চেয়ে অনেক দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গুয়েতেমালা থেকে আমদানি করা ভালোমানের এলাচি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৪’শ টাকা দরে। গত সপ্তাহে তা ২৫৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। ১৫-২০ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ২৬৫০ টাকা দরে। মধ্যমানের এলাচি বিক্রি হচ্ছে ২৩’শ টাকা দরে। কয়েকদিন আগে তা বিক্রি হয়েছিল ২৪৫০ টাকা দরে। করোনা সংক্রমণের আগে তা ৩৫’শ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। ভারতীয় আমদানি করা জিরা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৪০-২৫০ টাকা দরে। কয়েক দিন আগে তা ৩৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। ১৫-২০ দিন আগেও জিরা বিক্রি হয়েছিল তিন’শ টাকায়। আর রোজায় বিক্রি হয়েছিল ৪৫০ টাকা পর্যন্ত। সিরিয়া থেকে আমদানি করা জিরা বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা দরে। কয়েকদিন আগে তা ৩৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। রোজায় তা ৪৯০-৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল। মিষ্টি জিরা একশ টাকা থেকে কমে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬৩০ টাকা দরে। কয়েকদিন আগে ৬৬০-৬৭০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। রমজান মাসে ৭২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। জাইফল বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৩৫০ টাকা দরে। কয়েকদিন আগে তা ৪’শ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। গত মাসে তা ৬৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। রোজায় বিক্রি হয়েছিল ৭’শ টাকা দরে। দারুচিনি বিক্রি করা হয়েছে কেজিতে ২৬০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে পণ্যটি বিক্রি হয়েছিল ২৭৫ টাকা দরে। গত মাসে তা ৩’শ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। যত্রিক বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২২৫০ টাকা দরে। আগে তা বিক্রি হয়েছিল ২৬-২৭’শ টাকা দরে। রোজায় বিক্রি হয়েছিল ২৯’শ টাকায়। গোল মরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৩৭০ টাকা। কিছুদিন আগেও তা ৪’শ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। ধনিয়া কেজিতে ৭৫ টাকা থেকে কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা দরে।
ভারত থেকে আমদানি করা লাল মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা দরে। কয়েকদিন আগে তা বিক্রি হয়েছিল দুই’শ টাকা দরে। রমজান মাসে তা ২৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। দেশি লাল মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা দরে। কিছুদিন আগে তা ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। রমজানে তা বিক্রি হয়েছিল ২৪০ টাকা দরে।

গরম মসলা ছাড়াও কমেছে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী জাবেদ ইকবাল বলেন, ‘অন্যান্য বছর এ সময়ে প্রচুর বেচাবাট্টা ছিল। এ বছর নেই বললেই চলে। অনেকটা অলস সময় কাটাচ্ছি।’

ভারতীয় আমদানি করা ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০-২১ টাকা দরে। মধ্যমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা দরে। আদা বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ১১০-১১৫ টাকা দরে। কয়েকদিন আগে তা ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। গত মাসে ১৪০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা দরে। রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৬২ টাকা দরে। গত মাসে তা ৬৫-৭০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ঈদুল আজহায় মসলার বড় ব্যবহার কমে আসবে। বেচাকেনা কম থাকায় প্রতিটি পণ্যের দাম কমতি রয়েছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট