চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

কাস্টমসে করোনা ঠেকাতে আজ চালু হচ্ছে টোকেন সিস্টেম

টোকেন সিস্টেমে সুফল না মিললে বসানো হবে ডোকমেন্ট রিসিভিং বক্স

নিজস্ব প্রতিবেদক

৭ জুন, ২০২০ | ২:০৯ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস পণ্য খালাসের ডোকমেন্ট রিসিভিংএ টোকেন সিস্টেম চালু করছে। আজ রবিবার থেকে এটি কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম। করোনায় এক কাস্টমস কর্মকর্তা মারা যাওয়ায় ও এখন পর্যন্ত কাস্টমসের ১৩জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় সংক্রামন ঠেকাতে এই বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে টোকেন সিস্টেমে সুফল না মিললে ডোকমেন্ট রিসিভিং বক্স চালুর কথাও ভাবছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম পূর্বকোণকে বলেন, আজ রবিবার থেকে ডোকমেন্ট এসেসমেন্ট করতে আসা সিএন্ডএফ প্রতিনিধিকে একটি প্রিন্টেড টোকেন দেওয়া হবে। টোকেনে বিল অব এন্ট্রি নম্বর, তারিখ, সিএন্ডএফ এজেন্টে নাম ও ডোকমেন্ট সাবমিটকারী ব্যক্তির নাম এবং মোবাইল নম্বর থাকবে। একটি নির্দিষ্ট কাউন্টারে ওই টোকেনে সিরিয়াল নম্বর দিয়ে ডোকমেন্টগুলো রিসিভ করা হবে। এরপর সিএন্ডএফ এজেন্টের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সেখানে থাকার প্রয়োজন হবে না। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাদের ডোকমেন্ট এসেসমেন্টে শেষে সিরিয়াল অনুযায়ী ডেলিভারি দেবে। কোন প্রয়োজন হলে টোকেনে দেওয়া নম্বরে ফোন করে সিএন্ডএফ প্রতিনিধিকে ডাকা হবে। এই সিস্টেমের মাধ্যমে কাস্টমসের ভেতরে আসা সিএন্ডএফ এজেন্টদের সাথে সিএন্ডএফ এজেন্টদের এবং কাস্টমস কর্মকর্তাদের শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হবে।
তিনি আরো বলেন, করোনার মহামারি ঠেকাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এই সিন্ধান্তেও কাজ না হলে ভবিষ্যতে কস্টমস হাউসের সামনে বুথ বসিয়ে বক্সের মাধ্যমে ডোকমেন্ট রিসিভ করার পরিকল্পনা রয়েছে। কারণ করোনা ছড়ায় শারীরিক সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে। আর কাস্টমসের কার্যক্রমও বন্ধ রাখা যায় না। তাই শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করে আমাদের কাস্টমসের কার্যক্রম চালিয়ে রাখার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাস্টমসের অডিটরিয়াম, ট্রেনিং রুমসহ যেসব রুম সচরাচর ব্যবহার হয়না সেগুলোতে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টকে পাঠিয়ে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে। আশা করি এসব উদ্যোগে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু পূর্বকোণকে বলেন, কাস্টমস হাউজে প্রতিনিয়ত শত শত মানুষকে আসা যাওয়া করতে হয়। এর মাধ্যমে যাতে করোনাভাইরাস ছড়াতে না পারে সেজন্য চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস ও সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন যৌথভাবে এই টোকেন সিস্টেম চালু করেছে। আজ থেকে সেটি কার্যকর করা হবে। দুই সংস্থার প্রতিনিধি টোকেন সিস্টেম মনিটরিং করবে। এর মাধ্যমে অযথা শারীরিক সংস্পর্শে আসা ঠেকানো যাবে।
উল্লেখ্য, গত ৩জুন প্রথম করোনায় আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের একজন রেভেনিউ অফিসার জসিম উদ্দিন মজুমদার মারা গেলেন। এছাড়া এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ১৩ জন কর্মকর্তা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে ছয়জন রাজস্ব কর্মকর্তা, ছয়জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা এবং একজন কম্পিউটার অপারেটর। এছাড়া সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের এক উপদেষ্টা, এক সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ ৫ জন সদস্য করোনায় মারা গেছেন। এই সংক্রামন যাতে বাড়তে না পারে সেজন্যই চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস টোকেন বিষয়ক এই ব্যবস্থা চালু করেছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট