চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

করোনায় দুর্বল হচ্ছে অর্থনীতি
করোনায় দুর্বল হচ্ছে অর্থনীতি

করোনায় দুর্বল হচ্ছে অর্থনীতি

শিবুকান্তি দাশ, ঢাকা অফিস

১৩ মার্চ, ২০২০ | ২:০৬ পূর্বাহ্ণ

দেশের অর্থনীতির চাকা ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ছে। এতদিন অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে চাঙ্গা ছিল রেমিট্যান্স প্রবাহ তথা প্রবাসী আয়। কিন্তু ধীরে ধীরে এই সূচকও নিস্তেজ হয়ে আসছে। এছাড়া অন্যান্য ভালো সূচকও ক্রমেই গতি হারাচ্ছে। আর দুর্বল সূচকগুলো আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের প্রভাবে নতুন নতুন খাত সংকটে পড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, অর্থনীতির সব সূচকই এখন নিম্নমুখী ধারায় নেমে এসেছে। খোদ ব্যাংক খাতের পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, সরকারি একটি ব্যাংক তার কর্মকর্তাদের বেতন কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া ভেঙে পড়ার অবস্থায় রয়েছে আমদানি বাণিজ্য, বেহাল দশায় পড়েছে পুঁজিবাজার, ঋণ পাচ্ছে না বেসরকারি খাত। বন্ধ হচ্ছে গার্মেন্টস, সংকুচিত হচ্ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অধিকাংশ দুর্বল সূচক দিয়েই নতুন বছর শুরু হয়েছে। তবে করোনার কারণে দুর্বল সূচকগুলো বর্তমানে আরও দুর্বল হয়ে নতুন নতুন সংকট তৈরি করছে।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সার্বিকভাবে বলা যায়, দেশের অর্থনীতির কালো মেঘ আরও গভীর কালো হয়ে উঠছে।’ তিনি বলেন, ‘এতদিন একমাত্র রেমিট্যান্স বাড়লেও এখন সেটাও কমে এসেছে। এক কথায়, অর্থনীতি বড় ধরনের সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগ বাড়ছে না। বিনিয়োগ না বাড়লে কর্মসংস্থানও বাড়বে না। আর কর্মসংস্থান না বাড়া মানেই সামনে বিপদ।’ তিনি উল্লেখ করেন, সত্যি সত্যি সংকটের মুখে পড়েছে আমাদের অর্থনীতি। অর্থনীতির স্বাস্থ্য এখন খুবই দুর্বল। দিন যত যাচ্ছে, দুর্বলতা ততই বাড়ছে।
গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা বলছেন, তৈরি পোশাক খাতে চলমান সংকট রফতানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিজিএমইএ-র তথ্যমতে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে আর্থিক সমস্যার কারণে বিজিএমইএ-র সদস্যভুক্ত ৮৩টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক। এছাড়া এই বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে আরও ২৩টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়েছে। এদিকে করোনার প্রভাবে সবচেয়ে বেশি বিপদে আছে তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা। তারা বলছেন, বস্ত্র ও বস্ত্রজাতীয় পণ্য, গার্মেন্ট একসেসরিজসহ বিভিন্ন উপকরণে চীনের ওপর নির্ভরতা প্রায় ৫০ শতাংশ। এছাড়া অন্তত ৪০ শতাংশ যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশও আনতে হয় চীন থেকে। যদিও গত প্রায় দুই মাস ধরে চীন থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ ছিল। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি রুবানা হক বলেন, ‘এক কথায় রফতানি পরিস্থিতি ভালো না। গার্মেন্টস খাতের অবস্থা ভালো না। আর্থিক সংকটের কারণে গত বছর ও চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে (১৪ মাসে) শতাধিক কারখানা বন্ধ হয়েছে। তবে করোনার কারণে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও বলা যাচ্ছে না। ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হচ্ছে।
গত জানুয়ারি থেকে রেমিট্যান্সের গতি অব্যাহতভাবে কমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ডিসেম্বর মাসে রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি ছিল ৩৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ, আর জানুয়ারিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ৫৯ শতাংশ। শুধু তাই নয়, ডিসেম্বর মাসের তুলনায় জানুয়ারিতে প্রবাসী আয়ের পরিমাণও কমে গেছে। একইভাবে জানুয়ারি মাসের তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসী আয় আরও কম এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ১৪৫ কোটি ২০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আগের মাস জানুয়ারিতে তারা পাঠিয়েছিলেন ১৬৩ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে ১৮ কোটি ডলার কমে গেছে। প্রবাসীরা গত ডিসেম্বর মাসে পাঠিয়েছিলেন ১৬৮ কোটি ৭১ লাখ ডলার।
গত জুলাই-জানুয়ারি এই সাত মাসে বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অফ পেমেন্ট) ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫১ কোটি ৬০ লাখ (১.৫১ বিলিয়ন) ডলার। যদিও গত আগস্ট মাস শেষে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকে ২৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত দুই বছর ধরে অব্যাহতভাবে কমছে আমদানি ব্যয়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) আমদানি বেড়েছিল ২৫ দশমিক ২০ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছিল ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। অথচ গত সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) আমদানি ব্যয় কমেছে ৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
গত জানুয়ারি মাসে আগের বছরের জানুয়ারির তুলনায় আমদানি কমেছে ১২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অর্থাৎ ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ৫৬৬ কোটি ৩০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হলেও ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আমদানি ব্যয় হয়েছে ৪৯৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) প্রথম আট মাসে রফতানি আয় কমেছে ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এ সময়ে পণ্য রফতানিতে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ২ হাজার ৬৪১ কোটি ডলার। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ২ হাজার ১৮৪ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ কম। গত অর্থবছরে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়।
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ভেঙে পড়ার অবস্থায় রয়েছে দেশের আমদানি ও রফতানি বাণিজ্য। এছাড়া ঋণের টাকা যেমন আদায় করতে পারছে না, তেমনি ব্যবসায়ীদেরকে নতুন করে ঋণও দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। আবার সুদ কমিয়ে দেওয়ার কারণে ব্যাংকগুলো আমানতও পাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণের কারণে দেশের ১২টি ব্যাংক প্রয়োজনীয় মূলধন সংরক্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। একইভাবে মন্দ বা ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে দেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতের ১২টি ব্যাংক।
গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে বেসরকারি খাতে ঋণের হার কমছে। একক মাস হিসেবে গত জানুয়ারিতে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ২০ শতাংশ। আর অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। গত দুই যুগের মধ্যে এটিই সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ১৯৯৬ সালের পর বেসরকারি খাতে কখনোই ঋণের প্রবৃদ্ধি এত কম হয়নি। এমনকি বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনের সময়ও (২০১৩-১৪ সাল) বেসরকারি খাতে এত কম ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল না। এ দুই বছরে তা ছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং ১২ দশমিক ০৩ শতাংশ। শুধু তাই নয়, গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে ঋণ বিতরণ কমেছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা।
ব্যাংক খাতে আদায় অযোগ্য ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ব্যাংক খাতে আদায় অযোগ্য ঋণ এখন ৮১ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা। এই ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে শতভাগ প্রভিশন রাখতে হয়, যাকে অর্থনীতির ভাষায় মন্দ ঋণ বলা হয়, যা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। এক বছর আগে এই মন্দ ঋণের পরিমাণ ছিল ৮০ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। তবে ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংক খাতে আদায় অযোগ্য ঋণের পরিমাণ প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু খেলাপি হিসেবে ঘোষণা করা ঋণ রয়েছে ৯৪ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। এছাড়া অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণ (আগের খেলাপি) রয়েছে আরও প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার মতো। আর আদায় করতে না পেরে প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে। এর বাইরে আদালতের স্থগিত আদেশে আরও প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা রয়েছে আদায় অযোগ্য ঋণ।
২০১০ সালের ধসের পর নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেয়ারবাজার স্বাভাবিক হচ্ছে না। গত কয়েক মাস ধরে দেশের পুঁজিবাজারে ক্রমাগতভাবে দরপতন চলছে। পতনের কারণে ক্রেতা হারিয়েছে এই বাজার। আর ক্রেতা না থাকায় লেনদেন তলানিতে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর বিরাট ধসের কবলে পড়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সাত বছর আগে অর্থাৎ ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি নতুন এই সূচক চালু হওয়ার পর এত বড় ধস আর দেখা যায়নি। গত ৯ মার্চ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ পড়ে যায়। দিন শেষে ২৭৯ পয়েন্ট হারিয়ে বাজার ৪ হাজার ৮ পয়েন্টে এসে থেমেছে। তথ্য বলছে, ১০ ও ১১ মার্চ বাজার সামান্য বাড়লেও বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) ডিএসই’র প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ১০১ পয়েন্ট বা ২ শতাংশ কমেছে। এদিন অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ২২৮ পয়েন্ট।
অর্থনীতির সূচকগুলোর মধ্যে সরকারের আর্থিক জোগানদাতা রাজস্ব খাতের পরিস্থিতিও ভালো নেই। পরপর দুই মাস (নভেম্বর ও ডিসেম্বর) ধরে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বা রাজস্ব আদায়ের গতি বাড়লেও গত জানুয়ারি মাসে আবারও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সর্বশেষ গত জানুয়ারিতে রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১ দশমিক ২৫ শতাংশ। যদিও আগের মাস গত ডিসেম্বরে প্রবৃদ্ধি ছিল ২২ শতাংশের মতো। আর নভেম্বরে রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি কমছে। ওই মাসে রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে নেগেটিভ। শুধু তাই নয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যমতে, জুলাই থেকে অক্টোবরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আয়ের প্রধান তিন খাতেই আদায় কমেছে।
আমদানি ব্যয় কমার পরও বাণিজ্য ঘাটতি কমছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) পণ্য বাণিজ্যে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৬৪ কোটি ৩০ লাখ (৯.৬৪ বিলিয়ন) ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে (এফওবি-ভিত্তিক, ইপিজেডসহ) মোট তিন হাজার ২০০ কোটি ২০ লাখ (৩২ বিলিয়ন) ডলার ব্যয় করেছে বাংলাদেশ। আর পণ্য রফতানি থেকে (এফওবি-ভিত্তিক, ইপিজেডসহ) আয় করেছে দুই হাজার ২৩৫ কোটি ৯০ লাখ (২২.৩৬ বিলিয়ন) ডলার। এ হিসাবেই বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৬৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অর্থাৎ এই সাত মাসে আমদানি ব্যয় কমেছে ৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আর রফতানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ।
গত প্রায় ছয় মাস ধরে কমছে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি। সর্বশেষ জানুয়ারি (২০২০) মাসে নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। আগের মাস ডিসেম্বরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি ছিল ঋণাত্মক ৪০৮ কোটি টাকা। আর গত মাস নভেম্বরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি ছিল মাত্র ৩২০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা, যা পুরো অর্থবছরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২৯ শতাংশ।
গত জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংক থেকে সরকারের নেওয়া মোট ঋণের স্থিতির পরিমাণ হচ্ছে এক লাখ ৬৩ হাজার ২৫৫ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা ২০১৯ সালের জানুয়ারির চেয়ে ৬৫ দশমিক ০৫ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ৪৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা ঋণ নেবে বলে ঠিক করেছে। কিন্তু গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকার ৫২ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা ধার হিসেবে নিয়েছে। সাধারণত অর্থবছরের শেষ দিকে সরকারের টাকার টান পড়ে বেশি। কিন্তু এবার অর্থবছরের শুরুতেই টাকার টান পড়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট