চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সঞ্চয়পত্রে ফিরছে সুদিন

২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ১:২৬ পূর্বাহ্ণ

পুঁজিবাজারে দৈন্যদশা, ব্যাংক খাতে দুরবস্থার প্রেক্ষাপটে আবার বাড়ছে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি।চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। এই অঙ্ক গত সাত মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।এর আগে গত বছরের জুলাই মাসে ২ হাজার ২১২ কোটি ৪৭ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল।-বিডি নিউজ

অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর বলছেন, আমানতের সুদের হার ৬ শতাংশে বেঁধে এবং ব্যাংক খাতের দুরবস্থার খবরে সবাই আবার ‘সবচেয়ে নিরাপদ’ বিনিয়োগ হিসেবে পরিচিত সঞ্চয়পত্রে মুখ ফিরিয়েছে। ব্যাংকগুলোর আমানতের সুদের হার কম এবং পুঁজিবাজারে দীর্ঘ মন্দার কারণে গত কয়েক বছর ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল সঞ্চয়পত্র বিক্রি। এতে সরকারের ঋণের বোঝাও অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাচ্ছিল। বিক্রির চাপ কমাতে গত বছরের ১ জুলাই থেকে সঞ্চয়পত্রে মুনাফার উপর উৎসে করের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। একইসঙ্গে এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে টিআইএন (কর শনাক্তকরণ নম্বর) বাধ্যতামূলক করা হয়। ব্যাংক একাউন্ট না থাকলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি না করার শর্ত আরোপসহ আরও কিছু কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে কমতে শুরু করে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সঞ্চয়পত্র বিক্রির তথ্যে দেখা যায়- চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ৭ হাজার ৬৪৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিক্রি হয় ২ হাজার ২১২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আগস্টে বিক্রি হয় ১ হাজার ৪৯৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরে বিক্রির পরিমাণ ছিল ৯৮৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

অক্টোবরে ৮২২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। নভেম্বরে নিট বিক্রি নেমে আসে ৩২০ কোটি ৬২ লাখ টাকায়।
উন্নয়ন কর্মকা-সহ বাজেটের অন্যান্য খরচ মেটাতে গত এক দশকে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার যে প্রবণতা দেখা গেছে, বিক্রি কমে আসায় তার সঞ্চয়পত্রের উল্টো দিক দেখতে হয় সরকারকে। যে টাকার সঞ্চয়পত্র সরকার বিক্রি করে, তার চেয়ে ৪০৮ কোটি ৪৪ টাকা বেশি খরচ হয়ে যায় সুদ-আসল পরিশোধে। অর্থাৎ ডিসেম্বরে নিট বিক্রি ৪০৮ কোটি ৪৪ টাকা ঋণাত্মক (-) হয়।

তবে ২০২০ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে এসে আবার উল্টে গেছে হিসাব-নিকাশ। কেন আবার বাড়ছে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি- এ প্রশ্নের উত্তরে ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান মনসুর বলেন, খুবই স্বাভাবিক। ‘এপ্রিল থেকে ব্যাংকের যে কোনো স্কিমের আমানতের সুদ হার হবে ৬ শতাংশ। বেশ কিছুদিন ধরেই এই ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। শেয়ার বাজারের মন্দা তো লেগেই আছে। নানান খবরে ব্যাংকের প্রতিও আস্থা রাখতে পারছে মানুষ। ‘কড়াকড়ি আরোপ করায় এবং মুনাফার উপর করের হার বাড়ায় অনেকেই সঞ্চয়পত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। এখন মানুষ যখন দেখছে, অন্য যে কোনো বিনিয়োগের চেয়ে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে মুনাফা বেশি, ঝুঁকি নেই। সে কারণেই আবার সবাই সঞ্চয়পত্রই কিনছে।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট