চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

পুঁজিবাজারে সপ্তাহজুড়ে বড় দরপতন

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ১০:৪৯ অপরাহ্ণ

আরেকটি খারাপ সপ্তাহ পার করল বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। বড় দরপতনের মধ্য দিয়ে শেষ হল সপ্তাহ।

চলতি সপ্তাহের পাঁচ দিনের লেনদেনে পাঁচ দিনই সূচক পড়েছে। শেষ দিন বৃহস্পতিবার প্রধান বাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৯ পয়েন্ট বা দেড় শতাংশ কমেছে। সূত্র : বিডি নিউজ।

চলতি সপ্তাহে এই সূচক পড়েছে ২৫০ পয়েন্টের মতো। সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমছে প্রতিদিন।

টানা দরপতনে ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ফের হতাশা দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও কয়েক দিন যেতে না যেতেই ফের পতনের ধারায় ফিরে এসেছে।

গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছিল পতন। চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবারও সেই পতন অব্যাহত থাকে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে এই বৃহস্পতিবার- ছয় কর্মদিবসে ডিএসইএক্স সূচক ২৮০ পয়েন্ট কমেছে।

বাজার বিশ্লেষক ডিএসই’র পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রত্যেক ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেওয়ার ঘোষণা বাজারে আস্থা ফিরে আসতে শুরু করেছিল। সেই ঘোষণায় ডিএসইএক্স ৭০০ পয়েন্টের মতো বেড়েছিল। কিন্তু সেই টাকা এখনও বাজারে না আসায় সূচকের পতন হচ্ছে।

“বাজারে যে টাকা ছিল, সেই শক্তি দিয়ে ৭০০ পয়েন্টের মতো বেড়েছিল। এখন টাকা নেই; যে শক্তি ছিল সেই শক্তি শেষ হয়ে গেছে। ব্যাংকগুলোর বিশেষ তহবিলের টাকা আসলে বাজার ভালো হবে না।”

“এছাড়া ওয়ালটনের আইপিও’র টাকা জমা দেওয়া ৩ মার্চ থেকে শুরু হবে। এই আইপিও’র জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে সব বিনিয়োগকারী টাকা ধরে রাখছে। স্বাভাবিকভাবেই কিছু টাকা আটকে আছে।

‘এছাড়া ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ধরনের ঋণের হার ৯ শতাংশ বেঁধে দেওয়ার নেতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়েছে’ জানিয়ে শাকিল রিজভী বলেন, “ভোক্তা ঋণ ও এসএমই ঋণের হারও ৯ শতাংশ করায় ব্যাংকগুলোর শেয়ারের দাম কমছে। যে সব ব্যাংকে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করেছিল তারা বিক্রি করে দিচ্ছে। বাজার পড়ছে।”

আরেক বাজার বিশ্লেষক শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হাসান বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বাজারের তারল্য সংকট কেটে যাবার সম্ভাবনা দেখা দেয়। পুঁজিবাজারর সূচক বাড়ে। মুনাফা তুলে নিতে অনেকে শেয়ার বিক্রি করেছেন। বিক্রির চাপে সূচক কমেছে।

“গ্রামীনফোনের বিষয়টি মানুষ মনে করেছিল শেষ হয়েছে। কিন্তু ১ হাজার কোটি টাকা দেয়ার পরে আবার যখন ১ হাজার কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে, তখন বিষয়টি ঘোলাটে হয়ে গেছে। জিপির শেয়ারের দাম কমার বড় প্রভাব সূচকে পড়ছে।”

“যেসব ব্যাংকের ব্যবসা এসএমই নির্ভর সেসব ব্যাংকের দাম কমে যাচ্ছে। সে কারনে সূচকে প্রভাব পড়ছে।”

জানুয়ারিতে বড় ধসের পর পুঁজিবাজার জাগাতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় ব্যাংকগুলোকে ‘বিশেষ তহবিল’ গঠনের সুযোগ দেওয়ার পর থেকেই বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে।

টানা কয়েক দিন লেনদেনের পাশাপাশি সূচকও বাড়ে। কিন্তু গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার থেকে বাজারে লেনদেন ও সূচক কমছে।

বাজার পরিস্থিতি

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার ডিএসইএক্স ৬৮ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৪৮০ দশমিক ২২ পয়েন্টে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ১৫ দশমিক ৪১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৪৪ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ২৫ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৪৯২ পয়েন্টে।

৫৬১ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বুধবার লেনদেনের অংক ছিল ৬২৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।

লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৫৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬০টির।কমেছে ২৫০টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৬টি কোম্পানির শেয়ার দর।

অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বৃহস্পতিবার প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৯৮ দশমিক ১৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৩ হাজার ৭৪২ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে।

১৯ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বুধবার লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

লেনদেন হয়েছে ২৩৯টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৩টির, কমেছে ১৬২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টির দর।

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট