চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

আজারবাইজানের ইতিহাস

প্রবাস ডেস্ক

২৭ অক্টোবর, ২০১৯ | ১২:৪৮ পূর্বাহ্ণ

আজারবাইজান ইউরেশিয়ার ককাসাস অঞ্চলের একটি দেশ। আজারবাইজানের ইতিহাসে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সভ্যতার অবদান আছে। এগুলি হল ১১শ শতকের সেলজুক তুর্কি জাতি এবং প্রাচীন পারসিক জাতির সভ্যতা। আজারবাইজান নামটি সম্ভবত ফার্সি ভাষা থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘অগ্নিভূমি’। শব্দটি দিয়ে আজারবাইজানের খনিজ তেল সম্পদ (প্রাচীনকাল থেকেই এগুলি সম্বন্ধে জানা ছিল) এবং জরথুষ্ট্রবাদের একটি কেন্দ্র হিসেবে এর ভূমিকা-দুইই নির্দেশ করা হয়। ইরানীয় দুই প্রদেশ পূর্ব আজারবাইজান ও পশ্চিম আজারবাইজান স্বাধীন আজারবাইজান রাষ্ট্রের সীমান্তে অবস্থিত।

তবে আধুনিক যুগে এসে এই তিনটি একত্রে মিলে একটিমাত্র রাষ্ট্র গঠন করেনি। ৬৪২ খ্রিস্টাব্দে আরবদের আজারবাইজান বিজয় ও এখানকার লোকদের ইসলাম ধর্মে রূপান্তরের ঘটনার আগে আজারবাইজানের ইতিহাস কী ছিল, তা সম্বন্ধে সঠিক জানা যায় না। আরব সাম্রাজ্যের পতনের পরে মঙ্গোল জাতি আজারবাইজানে ধ্বংসলীলা চালায়। তবে ১৩শ-১৫শ শতকে মঙ্গোল ইল-খান, স্থানীয় শিরভান শাহ এবং পারস্যের সাফাভিদ রাজবংশের অধীনে এলাকাটি পুনরায় সমৃদ্ধি লাভ করে।

ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার মধ্যকার স্থল বাণিজ্যপথের ওপর এবং কাস্পিয়ান সাগরের তীরে অবস্থিত বলে বহু শতাব্দী ধরে রাশিয়া, পারস্য এবং উসমানীয় শাসকেরা আজারবাইজান দখলের লড়াইয়ে লিপ্ত ছিল। অবশেষে ১৮২৮ সালে তুর্কমেনচায় চুক্তির মাধ্যমে রুশরা আজারবাইজান অঞ্চলটি পারস্যের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়। একই সাথে স্থানীয় আজারবাইজানি খানদের রাজবংশের সমাপ্তি ঘটে। ওই সময়ে নির্ধারিত সীমান্তই আজারবাইজান ও ইরানের বর্তমান সীমান্ত নির্ধারণ করেছে। ১৮৭০-এর দশক থেকে আজারবাইজানের তেলক্ষেত্রগুলির আধুনিক নিষ্কাশন শুরু হয় এবং এর ফলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে একাকাটি অভূতপূর্ব উন্নতি লাভ করে।

স্বাধীনতা লাভ: ১৯১৭ সালে রুশ সাম্রাজ্যের পতন ঘটলে ১৯১৮ সালে আজারবাইজান নিজেকে একটি স্বাধীন প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে এবং এরপর আর্মেনিয়া ও জর্জিয়ার সাথে মিলে একটি আন্তঃককেশীয় প্রজাতন্ত্র গঠনের ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালায়।

১৯২০ সালের জানুয়ারি মাসে আজারবাইজান মিত্রশক্তির কাছ থেকে কার্যত স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। কিন্তু এপ্রিল মাসে রুশ সেনাবাহিনী এই স্বাধীনতার অবসান ঘটায়। ১৯২২ সালে প্রথমে দেশটি আন্তঃককেশীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের অংশে পরিণত হয় এবং পরে ১৯৩৬ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি ইউনিয়ন প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। ১৯৮০-এর দশকের শেষ দিকে আজারবাইজানে অরাজকতা বেড়ে যায়। ১৯৯০ সালের জানুয়ারি মাসে বাকুতে এক সহিংস সংঘর্ষে সোভিয়েত সেনারা ১৯০ জন জাতীয়তাবাদীকে হত্যা করে। ১৯৯১ সালের ৩০ আগস্ট আজারবাইজান সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট