চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সৌদিতে ২২ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিকের অনিশ্চিত জীবন

সৌদি আরব সংবাদদাতা

৬ জুন, ২০২০ | ১:০০ অপরাহ্ণ

সৌদি আরবে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে। এদিকে গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই দেশটিতে বেশ কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকর হওয়ার পর অনেক বাংলাদেশি শ্রমিকের কাজ করার সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। লকডাউনের কারণে বর্তমানে ২২ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক সৌদিতে অনিশ্চিত জীবন কাটাচ্ছেন।
সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, আজ শনিবার (৬ জুন) পর্যন্ত দেশটিতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার ৭৪৮ জন। মারা গেছেন ৬৪২ জন। এর মধ্যে ২২৫ জনই প্রবাসী বাংলাদেশি। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭০ হাজার ৬১৬ জন।
এদিকে দেশটিতে শনাক্ত হওয়া কোভিড-১৯ রোগী এবং করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশিদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক বলে মনে করছেন সৌদি আরবে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
তবে সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস মনে করছে, অন্য দেশের অভিবাসীদের তুলনায় সেখানে বাংলাদেশিদের আক্রান্ত হওয়ার হার কিছুটা বেশি হলেও তা অস্বাভাবিক বা আশঙ্কাজনক নয়।
সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ দৈনিক পূর্বকোণ কে বলেন, ‘দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত বাংলাদেশির সংখ্যা ১০ হাজার ৯০৫ জন। সৌদি আরবে প্রায় ২২ লাখ বাংলাদেশি বিভিন্ন পেশায় কর্মরত রয়েছেন। সেই অনুপাতে যে পরিমাণে বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, সেই হার খুব একটা বেশি নয়।’
এদিকে সৌদি সরকারের হিসেব মতে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ২২৪ জন প্রবাসী বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে ৮৭ জন নিশ্চিতভাবে কোভিড-১৯ রোগী ছিলেন। বাকিদের মৃত্যু সনদে কারণ হিসেবে ‘কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু’ উল্লেখিত ছিল। দেশটিতে করোনাভাইরাসে মৃতদের ১৫ ভাগই বাংলাদেশি বলে জানা গেছে।
এদিকে সৌদি আরবে কেন, বাংলাদেশিদের মৃত্যুর হার লাফিয়ে বাড়ছে- তা নিয়ে এ প্রতিবেদক কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশির সঙ্গে কথা বলেছেন।
মক্কা প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী বেলাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতার অভাব অথবা স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতার কারণেই সৌদি আরবের বাংলাদেশিদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি হচ্ছে।’
জেদ্দা প্রবাসী রফিক উদ্দিন বলেন, ‘সৌদি আরবে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের অধিকাংশই কম দক্ষতা সম্পন্ন শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তাদের অধিকাংশই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করেন। বদ্ধ জায়গায় একসাথে গাদাগাদি করে থাকতে হয় তাদের। এরকম পরিস্থিতিতে তাদের শারীরিক দূরত্ব মানা বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা প্রায় অসম্ভব।’
মদিনা প্রবাসী হাবিবুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘অনেকেই করোনাভাইরাস পরীক্ষা করাতে পারছেন না। অনেকের ব্যক্তিগত গাড়ি না থাকায় শ্বাসকষ্টের রোগী হাসপাতালে যেতে পারছেন না এবং চিকিৎসা না পেয়ে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।’
পূর্বকোণ/ এএ 

শেয়ার করুন