চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

করোনা: আমিরাতে লক ডাউনে থাকা বাংলাদেশিদের খাদ্য সংকট বাড়ছে

আরব আমিরাত প্রতিনিধি

১৩ এপ্রিল, ২০২০ | ১২:২১ অপরাহ্ণ

করোনার সংকটরোধে সংযুক্ত আরব আমিরাতে লকডাউনের সময় দীর্ঘতর হচ্ছে।এদিকে এতে দিন দিন খাদ্য সংকটে পড়া মানুষের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে।

তবে দুবাইয়ের যেসব এলাকায় আবাসিক ভবনে সম্পূর্ণরুপে লক ডাউন করা হয়েছে সেসব এলাকায় আমিরাত সরকার সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করে যাচ্ছে। অন্যান্য এলাকার অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশি খাদ্য সংকটে ভুগছে। যেসব প্রবাসী বাংলাদেশিরা খাদ্য সংকটে পড়েছে তাদেরকে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সাথে যোগাযোগ করার কথা বলা হলেও অনেকের অভিযোগ কনস্যুলেটের দেয়া নম্বরে ফোন করলে ঠিক মত ফোন রিসিভ করা হচ্ছেনা । কোনো কোনো প্রবাসীর অভিযোগ কমিউনিটি নেতাদের পক্ষ থেকে অনুরোধের দীর্ঘ তালিকা থাকার প্রেক্ষিতে ওই তালিকা অনুযায়ী কনস্যুলেট প্রাধান্য দিয়ে খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করে চলেছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি সত্যি নয় আমরা যাদেরকে খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করছি তাদের ব্যাপারে সঠিক ভাবে জাস্টিফাই করে খাদ্যদ্রব্য দিচ্ছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কনস্যুলেটে পাঁচটি টেলিফোন নম্বর ২৪ ঘন্টা খোলা রাখা হয়েছে। প্রকৃত অর্থে খাদ্যদ্রব্যের সংকটে পড়া মানুষগুলোকে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। কেননা অসহায় মানুষের হক একজন সাবলম্বী মানুষকে দিয়ে অন্যের হক নষ্ট করা যায়না। তবে দেখা গেছে যাদের বাসায় খাদ্যদ্রব্য মজুদ রয়েছে এবং যাদের খাদ্য দ্রব্য ক্রয় করার মত যথেষ্ট সামর্থ্য রয়েছে, তারাও খাদ্যের জন্য টাই স্যুট পরে লাইনে দাঁড়াতে । বাংলাদেশ কনস্যুলেটের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান মানুষের চাহিদার তুলনায় আমাদের কাছে খাদ্যের মওজুদ অপ্রতুল। তিনি বলেন, দুবাইতে এ মুহূর্তে আড়াই হাজার ব্যক্তি খাদ্যের জন্য আবেদন করেছে। শারজাহতে রয়েছে আড়াই থেকে তিন হাজার ব্যক্তির খাদ্যের চাহিদা। তবে সবচাইতে খাদ্যের চাহিদা বেশি রয়েছে আজমানে। এ অঞ্চলে ৫০০০ ব্যক্তি খাদ্যের জন্য আবেদন করেছে বাংলাদেশ কন্সুলেট দুবাইতে । পাশাপাশি উম্মুল কোয়েনে ১৫০০ ব্যক্তি খাদ্যের জন্য আবেদন করেছে। রাস-আল-খাইমায় খাদ্যের চাহিদা রয়েছে প্রায় ২০০০ ব্যক্তির।সবচেয়ে কম সংখ্যক চাহিদা রয়েছে ফুজাইরায়।এখানে খাদ্য সংকটে পড়া প্রবাসীর আবেদনের সংখ্যা ৪০০ মত হবে বলে ওই কর্মকর্তা উল্লেখ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ কর্মকর্তা জানান, যাচাই-বাছাইয়ে দেখা গেছে অধিকাংশ লোকজন খাদ্যসংকটে না পড়লেও পরিস্থিতি বুঝে তারা খাদ্য মজুদ করে রাখতে চায়। অনেকে আবার তাদের স্পন্সর থাকা সত্ত্বেও কন্সুলেটে খাদ্যের জন্য ধর্না দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরা এই অবস্থা বিবেচনায় রেখে অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি । যে সব ব্যক্তিরা প্রকৃত অর্থে নিঃস্ব এবং যাদের কোনো স্পন্সর নেই,তাদেরকে খাদ্যদ্রব্য দিয়ে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আর যারা সামর্থ্যবান তাদেরকে অনুরোধ করব এগিয়ে আসার জন্য এর সংকট মোকাবেলায়।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, কোভিট ১৯ প্রাদুর্ভাবে লক ডাউনের কারণে খাদ্য সংকটে পড়া বাংলাদেশীদের খাদ্যসংকট এড়াতে বাংলাদেশ সরকার আমিরাতের জন্য ২০ লক্ষ টাকার খাদ্যদ্রব্যের বরাদ্দ দিয়েছেন। তবে এখনো পর্যন্ত এই অর্থ পুরোপুরি আমিরাতের বাংলাদেশ মিশনগুলোতে এসে পৌঁছায়নি। সচেতন প্রবাসীদের বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর জন্য এ বরাদ্দ অত্যন্ত অপ্রতুল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পূর্বকোণ/এম

শেয়ার করুন