চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

ঈদের দিনের করণীয়

ড. মুহাম্মদ রুহুল আমিন হ সহকারী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

৪ জুন, ২০১৯ | ২:৪৬ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ ১ মাস রোজা ও আল্লাহর নির্দেশ যথাযথ পালনের আনন্দ উদযাপন করা হয় ঈদুল ফিতরের মাধ্যমে। ইসলামের অনন্য বৈশিষ্ট্য যে, এ জীবনবিধানে ঈদের আনন্দও ইবাদত হিসেবে গণ্য। এজন্য ঈদের আনন্দ পালনেরও রয়েছে নির্দিষ্ট বিধান। আল্লাহর প্রিয় হাবীব ও তাঁর সাথীরা ঈদের দিন যেসব আমল করতেন আমাদেরও সেসব আমল করা একান্ত কর্তব্য। তাঁরা ঈদুল ফিতরের দিন যা করতেন:
ঈদের দিনের মূল কাজ ঈদগাহে দুই রাকায়াত ‘ঈদের সালাত’ আদায় করা ও খুতবা শ্রবণ করা। ঈদের দিন সূর্য এক বর্শা পরিমাণ উদিত হওয়া থেকে এ নামাযের সময় শুরু হয় এবং যোহরের ওয়াক্তের পূর্ব পর্যন্ত অবশিষ্ট থাকে। রাসূলুল্লাহ সা. ঈদের দিন সকাল হলেই খেজুর খেতেন, এবং সেগুলো খেতেন বিজোড় সংখ্যায়।” (বুখারী, হাদীস নং- ৯৫৩) ঈদের নামাযের আগে বা পরে কোন নফল নামায আদায় না করা সুন্নাত। ইবনু আব্বাস রা. বলেন, “রাসূলুল্লাহ সা. ঈদুল ফিতরের দিন বের হয়ে দুই রাকায়াত নামায আদায় করলেন, এর আগে বা পরে অন্য কোন নামায আদায় করলেন না। এ সময় বিলাল (রা) তার সাথে ছিলেন।” (বুখারী, হাদীস নং- ৯৮৯; মুসলিম, হাদীস নং- ৮৮৪) ঈদের দিন উচ্চস্বরে অধিক পরিমাণ তাকবীর আদায় করা। কেননা আল্লাহ বলেন, “যাতে তোমরা নির্ধারিত সংখ্যা পুরণ করতে পার এবং তোমাদেরকে যে সুপথ দেখিয়েছেন তজ্জন্য আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর এবং যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।” (সূরা আল-বাকারাহ: ১৮৫) হাদীসে এসেছে, ‘রাসূলুল্লাহ সা. দুই ঈদে বের হতেন উচ্চস্বরে কালিমা ও তাকবীর পাঠ করতে করতে।” (বায়হাকী: আল-কুবরা, ৩/২৭৯) ঈদের নামাযে যাওয়া ও আসার পথ আলাদা হওয়া উত্তম। জাবির (র.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ সা. ঈদের দিন যাতায়াতের রাস্তা পরিবর্তন করতেন। গোসল করা, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া, খুশবু লাগানো, মেসওয়াক করা ও সুন্দর পোশাক পরিধান করা। সাঈদ বিন মুসাইয়্যেব রহ. বলতেন, ‘ ঈদুল ফিতরের সুন্নাত তিনটি: ঈদগাহে যাওয়া, নামাযে বের হওয়ার আগে খাওয়া, গোসল করা।’ নাফে’ (রহ) বলেন, ‘ইবনু উমর (র. ঈদুল ফিতরের দিন গোসল করতেন ও সুগন্ধী লাগাতেন।” (আল-ফারআবী: আহকামুল ঈদাঈন, পৃ- ৮৩) ঈদের দিন তাঁরা একে অপরের সাথে দেখা হলে বলতেন, “তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম” (আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের আমলসমূহ কবুল করুন)।
পুরুষের পাশাপাশি নারী, শিশু এমনকি ঋতুবতী মহিলারাও ঈদের আনন্দে শরীক হতে পারে। উম্মে আতিয়া রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘দুই ঈদের দিন আমাদের মধ্যকার ঋতুবতী মহিলা, পর্দানশীন সকলকে বের হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, তারা মুসল্লিদের জামায়াত ও তাদের দোয়ায় শরীক হতো, কিন্তু ঋতুবতীরা নামায থেকে বিরত থাকতো।’ (বুখারী, হাদীস নং- ৩১৫; মুসলিম, হাদীস নং- ৮৯০) মহিলারা বের হওয়ার সময় সুগন্ধী ব্যবহার করবে না, সৌন্দর্য প্রকাশিত হয় এমন পোশাক পরবে না, তারা পুরুষের সঙ্গে একই কাতারে দাঁড়াবে না বরং তাদের থেকে আলাদা এক পাশে দাঁড়াবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট