চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা জানুয়ারিতে !

সংক্ষিপ্ত হচ্ছে সিলেবাস

পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা জানুয়ারিতে !

শিবুকান্তি দাশ, ঢাকা অফিস

২৫ জুলাই, ২০২০ | ১:০৮ অপরাহ্ণ

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিভিত্তিক মৌলিক সক্ষমতা (কোর কম্পিটেন্ট) অর্জনের বিষয় চিহ্নিত করে নতুন করে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে শিক্ষাবর্ষ শেষ করার বিষয়ে জোর দিচ্ছে সরকার। আগামী সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হলে শিক্ষাবর্ষ না বাড়িয়ে ডিসেম্বরে তা শেষ করা হবে। তবে পঞ্চম বা অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা ২০২১ জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নেয়া হতে পারে।

অন্যদিকে সেপ্টেম্বরে যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না যায় তাহলে চলতি শিক্ষাবর্ষ বাড়িয়ে এবং পরবর্তী শিক্ষাবর্ষ কমিয়ে আনার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বর্তমান শিক্ষাবর্ষ আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া হবে। পরের শিক্ষাবর্ষে ছুটি কমিয়ে ডিসেম্বরে শেষ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপদে রাখতে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, ছুটি বাড়ানো ছাড়া কোনও বিকল্প নেই।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিভিত্তিক মৌলিক সক্ষমতা (কোর কম্পিটেন্ট) অর্জনের বিষয় চিহ্নিত করে নতুন করে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) মহাপরিচালককে নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ছুটির পর ওই সিলেবাস সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষাও নেয়া হবে। শিক্ষাবর্ষ কোনোভাবেই পিছিয়ে না যায় সেই লক্ষ্যেই এ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছি না। পরিস্থিতি ভালো হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেবো। দুই মন্ত্রণালয় একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা সেপ্টেম্বর মাথায় রেখে শ্রেণিভিত্তিক মৌলিক সক্ষমতা (পকার কম্পিটেন্ট) অর্জনের বিষয় চিহ্নিত করে নতুন করে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা অ্যাকাডেমির (নেপ) মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজিকেও অফিসিয়ালি বলেছি। ’

আর পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার বিষয়ে মো. আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা প্রয়োজনে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নেবো। পরবর্তী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করা সম্ভব হবে।’

যদি সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না যায় তাহলে কী হবে জানতে চাইলে সিনিয়র সচিব মো. আকরাম আল হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে পরে ভাবতে হবে। আমরা এখন সেপ্টেম্বরটা মাথায় রেখে কাজ করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘দুই মন্ত্রণালয় বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘সিলেবাস না কমিয়ে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করার মৌখিক প্রস্তাব করা হয়েছিল একটি বৈঠকে। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাবর্ষ করা হলে মার্চ থেকে ২০২১ সেশন যদি শুরু করি এবং ছুটি কমিয়ে দেই তাহলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হবে না।’ ওই বৈঠকে বিকল্প প্রস্তাবও উঠেছিল বলে জানান এনসিটিবি চেয়ারম্যান।

জানতে চাইলে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (পনপ) মহাপরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। সেপ্টেম্বরের দিকে প্রতিষ্ঠান খুলবে সেটিকে মাথায় রেখেই আমরা কাজ করছি। ‘আগামী রবিবার মন্ত্রণালয়ে আমাদের একটি বৈঠক আছে। সেখানে বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে’ বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসদর শশাংকমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হারুনুর রসিদ বলেন, আমরা পঞ্চম শ্রেণির পিএসসি পরীক্ষার্থীদের জুমের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করে তুলছি। তিনি বলেন শিক্ষাবর্ষ না বাড়িয়ে যথাসময়ে শেষ করতে পারলে ভালো হবে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন