চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মানসম্মত শিক্ষায় এগিয়ে চলছে পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

ড. মো. নূরল আনোয়ার

২ মার্চ, ২০২০ | ৩:১৭ পূর্বাহ্ণ

পিচ ঢালা পথ মাড়িয়ে চোখে পড়বে একটি শাখা সড়ক। এ সড়ক দিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়ে খোলা আকাশের নিচে বিস্তীর্ণ ছোট ছোট সড়ক যেখানে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা মুখর সড়কগুলো। সাথে দালানগুলোও আধুনিক স্থাপত্যের নিদর্শন। এ যেন শিল্পের কারুকার্যে রঙ তুলি দিয়ে এক ছোট নগর। চট্টগ্রামের অভিজাত এলাকা খুলশিতে গড়ে উঠেছে দীপ্তি স্ফুরক পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
চট্টগ্রামের খুলশিতে উচ্চশিক্ষায় উৎকর্ষ অর্জন স্লোগানকে সামনে রেখে ২০১৩ মালের ১৭ মে বন্দর নগরীতে যাত্রা শুরু করেছিল পোর্ট সিটি।
দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে ছয়টি বছর। এই ছয় বছরে শিক্ষা-সংস্কৃতির বিভিন্ন স্তরে স্বাক্ষর রেখেছে বন্দর নগরীর স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠান। মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন নাগরিক তৈরিতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ছয় বিভাগে ৬৯ জন শিক্ষার্থী নিয়ে নগরীর দক্ষিণ খুলশির নিজস্ব ক্যাম্পাসেই যাত্রা শুরু করেছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়। গত ছয় বছরে বিভাগের পাশাপাশি জ্যামিতিক হারে বেড়েছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ছয় হাজার। বিভাগগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স, ন্যাচারাল সায়েন্স, জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ, আইন, ইংরেজি, ফ্যাশন ডিজাইন ও ব্যবসায় প্রশাসন। প্রতিবছর তিন সেমিস্টারে ভর্তি করানো হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় ভবনে ঢুকতেই হাতের বামে চোখে পড়ে ক্যাফেটেরিয়া। সেখানে দলবেঁধে আড্ডা মুখর শিক্ষার্থীরা, কেউ বা খাচ্ছিল নীরবে, কেউবা গাইছিল গানের গিটারের সুরে সুরে। ক্যাফেটেরিয়ায় কথা হয় সাংবাদিকতা বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে। বললেন, আড্ডা, ক্লাস টেস্ট, এস্যাইনমেন্টের আলোচনা ছাড়াও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে জমে ক্যাফেটেরিয়ায়।
আন্তর্র্জাতিক নিয়ম মেনে আমাদের এখানে প্রতিটি ক্লাসরুমে সর্বোচ্চ ৫০ জন শিক্ষার্র্থীর আসন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, বলছিলেন সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তানিয়া সুলতানা পলি। বললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা বিষয় বস্তু। এখানে মেধা ও অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ১৯৪ জন পূর্ণ ও খ-কালীন শিক্ষক। এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শিক্ষার্থীদের পুঁথিগত বিদ্যার ওপরই গুরুত্ব দেয় না, উচ্চ শিক্ষায় উৎকর্ষ অর্জন কার্যক্রমকে হাতিয়ার করে শিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে একটি সুবিশাল পাঠাগার ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। যেখানে আছে প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি বই। আরও আছে দেশ বিদেশের জনপ্রিয় সব জার্নাল ও অসংখ্য গবেষণা প্রতিবেদন। যেগুলো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের গবেষণায় সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখছে।
পড়তে আসা ভিন দেশি শিক্ষার্থীদের সখ্যতাও গড়ে ওঠে বিভিন্ন সময়।
জানা গেছে, সাংস্কৃতিক কর্মকা- ও
খেলাধুলাতেও পিছিয়ে নেই বিশ্ববিদ্যালয়টি। গত বছর পিউরিয়া
আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল ২০১৯ এ অংশ নিয়েই আন্তর্জাতিক ইসলামিক ইউনিভার্সিটি (আইআইইউসি) কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। অবকাঠামোগত সুযোগ- সুবিধারও কমতি নেই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। উচ্চশিক্ষা লাভে শিক্ষকদের জন্য রয়েছে শিক্ষা ছুটিসহ নানা সুযোগ-সুবিধা। এছাড়াও মেধাবী গরীব, পার্বত্য অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত উপজাতি এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও একই পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বৃত্তির ব্যবস্থা। চলতি বছরের মার্চে অনুষ্ঠিত প্রথম সমাবর্তনে দু হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর সনদ প্রাপ্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো একটি সোনালী অর্জন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি রয়েছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম। ইতিমধ্যে নগরীর বাকলিয়া এলাকায় শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্যের সাথে যিনি ওতপ্রোত ভাবে জড়িত, যিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল
ইউনিভার্সিটি ইতোমধ্যে স্বতন্ত্র একটা স্থান করে নিয়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। কালিঙ্গা ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাষ্ট্রিয়াল টেকনোলজি (কওওঞ), ভুবেনেশ্বর, উড়িষ্যা, ইন্ডিয়া, প্যান প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি,
ফিলিপাইন, নানচাং
ইউনিভার্সিটি, চায়না, কানাডার নবল ইউনিভার্সিটিসহ বিদেশি স্বনামধন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে রয়েছে সমঝোতা স্মারক। একাডেমিক কালচারাল এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে করা হয়েছে এসব সমঝোতা স্মারক। কম খরচে কিভাবে মান সম্মত শিক্ষা প্রদান করা যায় সেক্ষেত্রে পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এক উজ্জ্বল দৃৃষ্টান্ত। অনেক গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীর জন্য লেখাপড়ার পাশাপাশি খ-কালীন চাকুরিরও ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। প্রতি বছর প্রেসিডেন্ট কনফারেন্সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতার সাথে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করার সুযোগ পান। প্রতিবছর শিক্ষকদেরকে ট্রেনিং এ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিতে আছেন দেশের খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। (অনুলিখন)

উপাচার্য
পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট