চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

যৌন হয়রানি বন্ধে চাই কঠোর পদক্ষেপ

সাইমুম চৌধুরী

১৫ জানুয়ারি, ২০২০ | ৪:০১ পূর্বাহ্ণ

শিশু সন্তান দের সাথে কাম বাসনা পূরণে নিয়ো জিত হওয়া, ইচ্ছা প্রকাশকরা বা সাহায্য করা দোষনীয় অপরাধ। ধর্মীয়ভাবে বিষয়টি চারিত্রিক দোষ এবং গুণাহের পর্যায়ে পড়ে। খুবই দুঃখজনক এ কাজটিই ঘরে বাইরে তথা সমাজে অহরহ ঘটে চলেছে এবং দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। এর সাথে সমাজে উঠতি বয়সের যুবকেরাও সমবয়সী মেয়েদের সাথে কামবাসনা পূরণের জন্য নানাভাবে হয়রানি করছে। অতি সম্প্রতি সে রকম কিছু ঘটনা দৈনিকের পাতায় ছাপা হয়েছে যা খুবই নিন্দনীয় এবং দুঃখজনক। বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ৫ জানুয়ারি বিকেলে আবাসিক হল থেকে এক বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার পথে কুর্মিটোলা রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে (রাস্তার পাশে ঘন কাটা ঝোপের মধ্যে নিয়ে) মজনু নামের এক যুবক। পত্রিকান্তে জানা যায়, ধর্ষক মজনুকে ৮ জানুয়ারি পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ভাবাই যায় না একটি দেশের খোদ রাজধানীতে মহাসড়কের পাশে জঙ্গলে একজন যুবতীকে টেনে নিয়ে ধর্ষণ করা। শুধু রাজধানী নয় সারাদেশের গ্রামে গঞ্জে উপজেলা জেলায় দিনে দুপুরে নারী ও শিশুরা ধর্ষণ সহ নানা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে।

অতি সম্প্রতি ৭ জানুয়ারি/২০২০ রাজধানীর ডেমরায় দুই শিশুর মৃত্যুবার্ষিকীতে এলাকার মায়েরা মানববন্ধন করে। জানা যায় দুই যুবক ৪ ও ৫ বছরের দুই শিশুকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে তাদের (শিশুদের) হত্যা করে। নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী মামলা প্রাপ্তির তারিখ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল বিচার কার্য সমাপ্ত করার কথা। কিন্তু মামলা করার পর ১ বছর (৩৬৫দিন) হয়ে যাবার পরও বিচার পাওয়া যায় নি। গেল বছর (২০১৮) একটি মামলা সারা দেশে নানা আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি করেছিল।

পত্রিকান্তে জানা যায় ফেনীর সোনাগাজী মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলার রায়ে বিজ্ঞ আদালত আলোচিত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদদৌলা সহ ১৬ জনকে মৃত্যুদ- দিয়েছিল। ওই আদালত প্রথমে গণমাধ্যমের সুবাদে ভয়াবহ ওই হত্যাকা-ের ঘটনা দেশবাসী জানতে পারে। উল্লেখ্য ৬১ কার্যদিবসে ওই মামলার কার্যক্রম সম্পন্ন য়। ২০১৯ সালটিকে শিশুদের জন্য ভয়াবহ একটি বছর বলে উল্লেখ করেছে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। সে বছর ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৯০২ শিশু। ২০১৮ সালে ওই সংখ্যা ছিল ৩৬৫। অন্যদিকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জানিয়েছে ২০১৯ এ ১ হাজার ৭০৩ জন শিশু ও নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৭৩জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।

একই পত্রিকার ৯ জানুয়ারি ধর্ষণের সংখ্যার জানা যায় প্রতি মাসে গড়ে ৮৪ শিশু ধর্ষণের শিকার হচ্ছে।
দেশে শিক্ষার হার বেড়েছে। প্রায় প্রতিটি মানুষের আয় রোজগার বেড়েছে, বেকারত্ব কমছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের মানবিকতা ও সামাজিক বন্ধন সে তুলনায় বাড়েনি। কোন অপরাধ বিশেষ করে যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটলে তার বিরুদ্ধে ভিকটিমের পাশে এসে দাঁড়ানোর লোক খুঁজে পাওয়া যায় না। সবার ভেতরে একটা চিন্তা কাজ করে ‘আমরতো কিছু হলো না’ অহেতুক বাড়তি গ্যাঞ্জামে জড়ানো ঠিক হবে না। আর এজন্য সমাজে বিশৃঙ্খলা এবং অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে চলেছে।
আসুন, সুন্দর সমাজ গঠনে যে কোন অন্যায় বিশেষ করে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানি থেকে আমাদের সন্তানদের রক্ষায় আমরা এক হয়ে এগিয়ে আসি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট