চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

ভেজাল ঔষধ : আমাদের করণীয়

২৬ নভেম্বর, ২০১৯ | ১:৫৮ পূর্বাহ্ণ

ঔষধ হলো এমন রাসায়নিক দ্রব্য যা প্রয়োগে প্রাণিদেহের স্বাভাবিক ক্রিয়া প্রভাবান্বিত হয় এবং যা দ্বারা রোগ নাশ বা প্রতিকার হয়। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় দিনের পর দিন ঔষধ সেবন করার পরও সুস্থতা লাভ করছে না। নিদিষ্টভাবে কিছু বলা না গেলেও বলা যায় ভেজাল ঔষধ সেবন রোগ দূরীকরণে কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না।

দেশে বর্তমানে প্রায় ৩০০টি ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বর্তমান বাজারমূল্য প্রতিবছর প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে মাত্র ৩% ঔষধ আমদানি করতে হয় আর ৯৭% দেশীয় চাহিদা অভ্যন্তরীণ উৎপাদন থেকেই মেটানো হচ্ছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে ১৫৭ টি দেশে বাংলাদেশ ঔষধ রপ্তানী করে। কিন্তু কিছু লাইসেন্সধারী ও লাইসেন্সবিহীন কোম্পানি অধিক মুনাফার জন্য ভেজাল ঔষধ তৈরি ও বাজার জাত করছে। যা মানুষের যেমনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে তারচেয়ে বেশি শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিবিসি নিউজে প্রকাশিত তথ্য মতে, বাংলাদেশে বছরে উৎপাদন হয় পঁচিশ হাজার রকমের ওষুধ, এর মধ্যে মাত্র চার হাজার ওষুধ পরীক্ষা করে দেখার সামর্থ্য আছে সরকারের। আর এর দুই থেকে তিন শতাংশ ওষুধ ভেজাল, নকল বা নি¤œমানের। বাকি একুশ হাজার ওষুধ কখনো পরীক্ষাই করা হয় না।

বাংলাদেশে ওষুধ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে মোট উৎপাদিত ওষুধের অন্তত দুই শতাংশ অর্থাৎ প্রতিবছর ৩০০ কোটি টাকার বেশি পরিমাণ অর্থের ভেজাল, নকল এবং নিম্নমানের ওষুধ তৈরি হয়। নামে বেনামে বিভিন্ন কোম্পানী ভেজাল ঔষধ বাজারজাত করে। এইসব ঔষধের লেবেলে কোনো ডিএআর নম্বর নাই। অনেক সময় থাকে না উৎপাদন ও মেয়াদের শেষ তারিখও। ঔষধ আইন ১৯৪০ ও জাতীয় ঔষধ নীতি ২০১৬ যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রয়োজন হলে আইন সংশোধন করে কঠোর শাস্তির বিধান করতে হবে যাতে কেউ এ ধরনের মানবতা বিধ্বংসী কাজ করার সাহস না পায়। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি ঔষধ শিল্প সমিতিরও এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে হবে। সুতরাং অভিজ্ঞ ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ভালো কোম্পানির ঔষধ লেবেলের নাম, মূল্য ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ইত্যাদি দেখে ক্রয় করতে হবে।

মুহাম্মদ আবু তালহা
লোক প্রশাসন বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট