চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

মহানবীর (সা.) জীবনাদর্শ সকলকে আলোকিত করুক

জসিম উদ্দিন মাহমুদ

১০ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:৩৭ পূর্বাহ্ণ

মহা ন আল্লা হ রাব্বুল আলা মিনে র সর্ব শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি, নিখিল বিশ্বের সর্বকা লের সকল মানুষের জন্য পরিপূর্ণ আদর্শ ও পথ প্রদর্শক রাহমাতুল্লিল আলামিন নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জন্ম, ইহকালীন জীবন ও ওফাত দিবস বিশ্ব মুসলমানের জন্য অতুলনীয় নিয়ামত-নিদর্শন।

আল্লাহ তায়ালার প্রিয় হাবীব হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমনে বিশ্বমানব লাভ করেছে অনুপম কল্যাণময় পথের দিশা, মানবিক মূল্যবোধ ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্য নিরূপণের ক্ষমতা। তাঁর অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্ব, অতুলনীয় সততা, ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ, আল্লাহর প্রতি পরম আস্থা ও নির্ভরতা, সৃষ্টি জগতের প্রতি অগাধ প্রেম ও ভালোবাসা, সৌভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্যনীতি তথা সর্বোত্তম জীবন ব্যবস্থা উপস্থাপনে তিনি বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ মহামানব হিসেবে দেশ-কাল-জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকলের নিকট মহিমান্বিত মর্যাদায় অভিষিক্ত ও অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তাঁর প্রচারিত দ্বীন ‘ইসলাম’ সর্বকালের সকল মানুষের একমাত্র মুক্তির পাথেয়। তাঁর অনুপম শিক্ষা ও আদর্শ দিতে পারে মানবতার মুক্তি।
পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) প্রতি বছর আমাদের ঈমান ও নবীপ্রেমে নিয়ে আসে এক নবতর সজিবতা। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের আরবী ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখ সোমবার প্রিয় নবীর শুভাগমন ছিল বিশ্বের সকল মানুষের মুক্তির ফজর-আযান। অসত্যের অন্ধকার থেকে মহাসত্যের নূরানী উদ্ভাস। দুনিয়া ও আখেরাতের মঙ্গলের বার্তা নিয়ে তিনি এসেছিলেন। এই অনুগ্রহ ও বরকত পেয়ে আমরা কী করব, তাও মহান আল্লাহ বলে দিয়েছেন, “বলুন, আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর করুণা লাভ করে তোমরা অবশ্যই আনন্দ-উৎসব করবে।” হযরত মুহাম্মদ (সা.) মহান আল্লাহর সর্বাপেক্ষা প্রিয় বন্ধু। তাঁর প্রতি আমাদের লাখো সালাম। আল্লাহ তায়ালার পবিত্র বাণী, “নিশ্চয়ই আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি সালাত প্রেরণ করেন, ওহে যারা ঈমান এনেছ, তোমরাও তাঁর উপর সালাত প্রেরণ কর এবং বিশেষভাবে সালাম দাও।” (সূরা আল-আযাব, আয়াত : ৫৬)। হযরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি আমার উপর একবার সালাত (দরূদ শরীফ) পড়ে আল্লাহ তার উপর দশটি রহমত নাযিল করেন।” (মুসলিম, সাহীহ, ২/৩২৭, আবু দাউদ, সুনান, ২/১১৯, তিরমিযী, জামি, ২/৩০৫, হাদিস নং ৪৪৬)। সারা জাহানের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি অবশ্যই অনুগ্রহ করেছেন যে, তিনি তাদের নিজেদের মধ্য হতে তাদের নিকট রাসুল প্রেরণ করেছেন, যে তাঁর আয়াতসমূহ তাদের নিকট পাঠ (তিলাওয়াত) করে, তাদেরকে পরিশোধন করে এবং কিতাব (মহাগ্রন্থ আল-কুরআন) শিক্ষা দেয়।” (আল-কুরআন, ৩:১৬৪)।

আল্লাহ তায়ালার মনোনীত ধর্ম পবিত্র ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন নবী রাসূলগণ। নবী রাসূল শব্দ দু’টির মধেই যে প্রচারের উদ্দেশ্যটি নিহিত। নবী করীম (সা.) সে দায়িত্ব কীভাবে পালন করবেন, তার দিকনির্দেশনাও আল্লাহ তায়ালা নিজে দিয়েছেন, “আল্লাহর পথে লোকজনকে আহ্বান করবে প্রজ্ঞা (হিকমত) পূর্ণ পন্থায় এবং সুন্দর উপদেশবাণীর সাহায্যে।” (নাহাল ১৬:১২৫)।
ইসলামের দাওয়াত ও তাবলীগের জন্য রাসূল (সা.) এর তায়েফ গমন এবং তায়েফবাসী কর্তৃক তাঁর প্রতি অমানবিক ও বর্বরোচিত অত্যাচার এবং নির্যাতন ইসলামের ইতিহাসে একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। তায়েফ হতে প্রত্যাবর্তনকালে রাসূল (সা.) নাখলাহ প্রান্তরে কয়েকদিন অবস্থান করেন। সেখানে রাতের অন্ধকারে একদল জিন রাসূল (সা.) এর কন্ঠে কুরআন তিলাওয়াত শুনে ইসলাম গ্রহণ করেছিল। মানব জীবনের অধ্যায় হলো দুটি। ইহলৌকিক ও পরলৌকিক। এই উভয় অধ্যায়ে সফলতার জন্য দীনি শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য প্রতিটি মুসলমানের জন্য দীনি শিক্ষা গ্রহণকে ফরয করা হয়েছে। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, “দীনি শিক্ষা অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিম (নর-নারী)’র জন্য ফরয।”
সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.)-কে আল্লাহ পাক এরূপ অনুপম চরিত্র মাধুর্য দান করে সৃষ্টি করেছেন, যাতে মহানবী (সা.)-এর যুগ থেকে কিয়ামত পর্যন্ত আগত জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পৃথিবীর যে কোন মানুষ তাঁর অনুপম চরিত্র মাধুর্য গ্রহণ করে ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ লাভ করতে সক্ষম হবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর রাসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ।” (সুরা আহযাব : আয়াত ২১)। অপর আয়াতে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেন, “এবং নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের উপর অধিষ্ঠিত।” (সুরা কালাম : আয়াত ৪)।
আল্লামা শেখ সাদী (রহ.) লিখেছেন :

বালাগাল উলা বিকামালিহি/কাশাফাদ্ দুজা বিজামালিহি/হাসুনাত জামীউ খিসালিহি/ সাল্লু আলাইহি ওয়া আলিহি। অনুবাদ : আরোহন করেছেন তিনি পূর্ণতার সর্ব শীর্ষে/তাঁর সৌন্দর্যে সমস্ত অন্ধকার আলোকিত হয়েছে/অপূর্ব চরিত্র তাঁর অনুপম সৌন্দর্যে ম-িত,/সালাম তাঁকে, সালাম তাঁর পরিবারবর্গকে।
নবীজির আদর্শ হলো জীবন্ত কুরআন। এতে রয়েছে জীবনের নিরাপত্তা। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, “যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবা পৃথিবীতে নৈরাজ্য সৃষ্টির কারণ ব্যতীত কাউকে হত্যা করে, সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে আর যে ব্যক্তি কারো জীবন রক্ষা করে, সে যেন সকল মানুষের জীবন রক্ষা করে।” (সুরা মায়িদা : ৩২)। এভাবে ইসলাম দিয়েছে সম্পদ, মান-মর্যাদা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, বসবাস, খাবার, ব্যক্তি স্বাধীনতা, ইনসাফ বা ন্যায়বিচারসহ জীবনের সকল ক্ষেত্রে সঠিক নিরাপত্তা। স্বাস্থ্য-শিক্ষায় প্রিয় নবী (সা.) গুরুত্ব দিয়েছেন। কারণ দৈহিক সুস্থতা আল্লাহ তায়ালার একটি নিয়ামত। এর প্রতি উদাসীন হওয়া যাবে না। ইসলাম সুস্থ জীবন কামনা করে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, “তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে নিক্ষেপ করোনা” (সুরা বাকারা : ১৯৫)। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা আল্লাহ খুব পছন্দ করেন। ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তওবাকারীকে ভালোবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকেন তাদেরকেও।

বেকার সমস্যা সমাধানে মহানবী (সা.) নিজে কাজ করে বেকার লোকদেরকে কাজের প্রতি উৎসাহ প্রদান করতেন। বেকার ও অলস জীবনের প্রতি নিরুৎসাহিত করতেন। তিনি বলেছেন, অকর্মন্য অলস ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার অপছন্দনীয় এবং উপার্জনকারী কর্মঠ ব্যক্তি রাব্বুল আলামীনের পছন্দনীয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, “সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ খোঁজ কর।” (সূরা জুমুয়া : ১০)। ইসলামের আবির্ভাব মুহূর্তে ও তার আগের বিশ্বের মানবসমাজে বিরাজমান ছিল চরম বৈষম্য। সুদ, ঘুষ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, হত্যাকা- প্রভৃতি অবাধে চলতো। মহানবী (সা.) যুদ্ধ-বিগ্রহ, কলহ-বিবাদ, রক্তপাত, অরাজকতা ইত্যাদি দূরীভূত করে মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির ভিত্তিতে একটি অনুপম আদর্শ কল্যাণমূলক সমাজ গড়তে সক্ষম হন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, “তোমরা ছিলে পরস্পর শত্রু, অতঃপর তিনি তোমাদের মধ্যে প্রীতি স্থাপন করে দিলেন আর তোমরা হয়ে গেলে পরস্পর ভাই ভাই।” (সূরা আলে ইমরান, আয়াত :১০৩)। হেরা গুহায় রাসূল (সা.) এর ওপর পবিত্র ওহী নিয়ে এলেন হযরত জিব্রাঈল (আ.)। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, “পড়–ন আপনার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে আলাক থেকে। পড়–ন, আর আপনার প্রতিপালক মহিমান্বিত, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানতো না।” (সূরা আলাক, ৯৬ : ১-৫)। রাসূল (সা.) এসেছেন দুর্নীতির মূলোৎপাটন ও সুনীতির প্রচলন ঘটিয়ে মানুষকে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছিয়ে দিতে। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেন, “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি এমন কিছু নয় যা তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করবে। তবে যারা ঈমান এনে সৎকর্ম করে তারাই তাদের কর্মের বহুগুন পুরস্কার পাবে আর তারা প্রসাদে নিরাপদ থাকবে। (৩৪ : ৩৭)।

সামাজিক বন্ধনের গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন : “মুমিনরা তো পরস্পর ভাই ভাই। অতএব তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে, যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও।” (সূরা আল হুজরাত, আয়াত : ১০)। শরীয়ত আইনের দৃষ্টিতে সকল নাগরিক সমান। নাগরিকদের মৌলিক মর্যাদা ও অধিকার সমান। এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ, ধনী-দরিদ্র, শেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ পার্থক্য করা হবে না। তবে শিক্ষা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী যার যতটুকু প্রাপ্য তাকে ততটুকু মর্যাদা, অধিকার, সামাজিক সুযোগ, রাষ্ট্রীয় সুবিধা ও কর্মের সুযোগ দেওয়ার বিধান রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, আমি পুরুষ নারী কারো কৃতকর্মের প্রতিফল বিনষ্ট করি না।” (আল-কুরআন, ০৩ : ১৯৫)।
দুনিয়ায় প্রেরিত সকল নবীকে আল্লাহ তাআলা অলৌকিক ক্ষমতা ও বিভিন্ন নিদর্শন দ্বারা অনন্য করেছেন। আমাদের প্রিয় নবী (সা.)-কেও মহান আল্লাহ বহু নিদর্শন ও মু’জিযা দিয়ে শেষ নবী হিসেবে সর্বশেষ উম্মতের নিকট প্রেরণ করেছেন। পবিত্র কুরআন ও মি’রাজ হলো শেষ নবীর শ্রেষ্ঠ নিদর্শন ও শক্তিশালী মু’জিযা।

হিংসার প্রতিক্রিয়ায় যা সংঘটিত হয় তাকে প্রতিহিংসা বলে। প্রতিহিংসা মানবচরিত্রে এক মারাত্মক ব্যাধি যা মানবমর্যাদাকে চরমভাবে ক্ষুন্ন করে এবং মানুষকে মনুষ্যত্বের স্তর থেকে পশুত্বের স্তরে নামিয়ে দেয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) হিংসা পরিহারের নির্দেশ দিয়ে বলেন, “তোমরা হিংসা পরিহার কর, কেননা হিংসা পুণ্যসমূহকে খেয়ে ফেলে, যেমন আগুন শুকনো লাকড়িকে খেয়ে ফেলে।” (আবু দাউদ)।

শ্রমিকশ্রেণী পৃথিবীর সবচেয়ে নির্যাতিত। ইসলাম এমন একটি সমাজব্যবস্থা কায়েমের ধারণা দেয় যাতে শ্রমিক ও নিয়োগকর্তার সম্পর্ক হবে সৌহার্দপূর্ণ। যেখানে থাকবে না যুলুম-শোষণ, থাকবে না দুর্বলকে নিষ্পেষিত করার মত ঘৃণ্য প্রবণতা। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “সাবধান! মজুরের শরীরের ঘাম শুকাবার পূবেই তার মজুরি মিটিয়ে দাও।”(তিরমিযী)। ইসলাম হচ্ছে কিয়ামত পর্যন্ত আগত অনাগত সকল মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা বিধানের একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছি স্পষ্ট প্রমাণসহ এবং তাদের সাথে দিয়েছে কিতাব ও ন্যায়নীতি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে।” (সূরা হাদিদ : ২৫)। প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, “ কিয়ামতের দিন সাত প্রকারের লোক আরশের ছায়ার নিচে অবস্থান করবে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ন্যায়পরায়ন শাসক। (বুখারী ও মুসলিম)। বিশ্বজগতের অনুপম, অনুসরণীয় ও সুমহান আদর্শ রাসূলুল্লাহ (সা.)। মহান আল্লাহ তাঁর সুমহান চরিত্রের সনদ দিয়েছেন এভাবে, ‘নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রে অধিষ্ঠিত’ (সূরা কলম : ৪)। স্বয়ং রাসূলে করীম (সা.) ইরশাদ করেন, “আমি উন্নত চরিত্রের পূর্ণতা দানের জন্যই প্রেরিত হয়েছি।” তিনি ছোটদের স্নেহ করা ও বড়দের সম্মান করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যে ছোটদের স্নেহ করে না এবং বড়দের সম্মান করে না, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়।” তিনি আরো ইরশাদ করেছেন, “তোমরা সন্তানদের (শিশুদের) স্নেহ কর, তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার কর এবং সদাচরণ ও শিষ্টাচার শিক্ষা দাও।”(তিরমিযী)। মহানবী (সা.)-এর আদর্শের একনিষ্ঠ অনুসরণ ও প্রচার-প্রসারে যদি আমরা নিরলসভাবে সমবেত উদ্যোগে কাজ করে যাই, তবে আশা করা যায়, বিভ্রান্তির বেড়াজাল ছিন্ন করে ‘সিরাজাম মুনিরা’র আলোকচ্ছটা অচিরেই সমগ্রবিশ্বকে উদ্ভাসিত করবে। আল্লাহ আমাদের তওফীক দিন। আমিন।

জসিম উদ্দিন মাহমুদ কথাসাহিত্যিক, ইসলামি চিন্তক

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট