চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

স্মরণ : ‘আমরা তখন যুদ্ধে’ খ্যাত ইদরিস আলম

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী

৬ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:০৭ পূর্বাহ্ণ

ইদরিস আলমের প্রতিভা ছিলো; কিন্তু বুদ্ধদেব বসু যাকে বলেছেন ‘প্রতিভার গৃহিণীপনা’- সেটা ছিলো না। ফলে তিনি কী হতে পারতেন, তা নিয়ে আমাদের কৌতূহলে শেষ হয় না, হতে চায় না। তাঁর প্রিয় শিক্ষক অধ্যক্ষ রেজাউল করিম চৌধুরী ছাত্রটির মধ্যে বুদ্ধির দীপ্তি ও প্রতিভার ঝলক দেখতে পেয়ে স¯েœহে প্রশ্রয় দিতেন। আগুন উস্কে দিতেন এই আশায় যে, ছেলেটি সিএসপি না হলেও জজ-ব্যারিস্টার, নিদেনপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তো হবে। চট্টগ্রাম সিটি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা জহুর আহমদ চৌধুরীর ভাবশিষ্য ছিলেন ইদরিস আলম, নিজেই লিখে গেছেন “আমি জহুর আহমদ চৌধুরীর মানস সন্তান”- জহুর আহমদ চৌধুরীও তাঁকে পুত্রবৎ স্নেহ করতেন। তিনি স্বপ্ন দেখতেন ইদরিস আলম একদিন পার্লামেন্টের মেম্বার হয়ে বক্তৃতায় পার্লামেন্ট কাঁপাবে। কিন্তু ইদরিস আলম সেসব কিছুই হননি, তিনি মজেছিলেন রাজনীতিতে। কারণ তাঁর রক্তে ছিলো রাজনীতির টান।
ইদরিস আলমের জন্ম চট্টগ্রামের একটি বিখ্যাত রাজনৈতিক পরিবারে। চট্টগ্রামে স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম পথপ্রদর্শক শেখ-এ-চাটগাম কাজেম আলী মাস্টার এই পরিবারে রাজনীতি আমদানি করেন বিশ শতকের গোড়ার দিকে। কাজেম আলীর দু’পুত্র একরামুল হক ও সিরাজুল হকও ব্রিটিশবিরোধী চেতনায় উদ্দীপ্ত ছিলেন। স্বদেশব্রতে উৎসর্গীকৃত একরামুল হকের ওপর পিতার ছায়া পড়েছিলো; তাঁকেও চট্টগ্রামের মানুষ ভালোবেসে একটা উপাধি দিয়েছিলো-‘শেরে চাটগাম’। সিরাজুল হক পিতার দুরন্ত সাহস পেয়েছিলেন।

একরামুল হকের তিন কন্যা শামসুন্নাহার, আইনুন নাহার, নুরুন্নাহার ছিলেন কবি, সম্ভবত চট্টগ্রামের প্রথম মহিলা কবি। অবশ্য হবীবুল্লাহ বাহারের বোন শামসুন্নাহার মাহমুদকে বাদ দিলে; তাঁরা নোয়াখালীর মানুষ, চট্টগ্রামে মাতাসহ আবদুল আজিজ বি.এ.-র আবাস ‘আজিজ মঞ্জিল’-এ শৈশব-কৈশোর কাটে তাঁদের। হবীবুল্লাহ বাহার বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের বন্ধু ছিলেন; নজরুল একবার চট্টগ্রাম সফরে এসে ‘আজিজ মঞ্জিল’-এ থেকেছিলেন। এবং নাহার-বাহার দুই ভাই-বোনকে নিয়ে কবিতাও লিখেছেন।

সে যা-ই হোক, একরামুল হকের পুত্র-রা রাজনীতি করেছেন কিনা সে সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে কাজেম আলী মাস্টারের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার এরপর দেখা গেল তাঁর ভাই মনুহর আলী মাস্টারের ঘরে। মনুহর আলী মাস্টারের চার পুত্রই রাজনীতিতে যোগ দেন। তাঁরা হলেন সাহেবুর রহমান, শাহ আলম, জানে আলম ও সৈয়দুর রহমান। কাজেম আলী ও তাঁর পুত্র একরামুল হক ছিলেন কংগ্রেসী, কাজেম আলীর ভ্রাতুষ্পুত্ররা করলেন মুসলিম লীগ। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর তাদের মোহমুক্তি ঘটে এবং তারা সকলেই যুক্তফ্রন্টের জন্য কাজ করেন। মনুহর আলী মাস্টারেরই নাতি ইদরিস আলম। তাঁর পিতা জানে আলম শেষ জীবনে আধ্যাত্মিক সাধক হয়ে যান। তাঁর দুই পুত্র ইদরিস আলম ও সিদ্দিক আলম আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত হয়ে পরিবারের রাজনীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন। জানে আলমের জ্যেষ্ঠপুত্র মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে শহীদ হন। ইদরিস আলমের পুত্র জাহেদুল আলমকে এখন আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত দেখা যাচ্ছে। সার্টিফিকেট অনুযায়ী ইদরিস আলমের জন্ম তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ১৯৪৪। তবে আত্মপরিচিতি দিতে গিয়ে তিনি আরো লিখেছেন, “আমার মাতার নাম মাবিয়া খাতুন। আমরা তিন ভাই ও দুই বোন। আমার নানার নাম হাজী মিন্নত আলী। আমার পৈত্রিক ও মাতামহের বাড়ি যথাক্রমে পূর্ব ও দক্ষিণ বাকলিয়ায়”।

বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনের সময় ইদরিস আলম দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র, বয়স পাঁচ। কিন্তু সেই বয়সেই ভাষা আন্দোলন তাঁর মনে রেখাপাত করেছিলো। চার বছর পর, অর্থাৎ ইদরিস আলমের বয়স যখন নয় এবং তিনি ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছেন মুসলিম হাই স্কুলে; ১৯৫৬ সালে কোন প্রশিক্ষণ ছাড়াই তিনি স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়ে ক্লাশ টেনের ছাত্র ফজলুল কাদের চৌধুরীকে (পরে অধ্যক্ষ) পরাজিত করে প্রথম স্থান দখল করেন। সে বছর তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেও পরিচিত হন এবং আমৃত্যু এই সম্পর্ক বজায় ছিলো। ইদরিস আলম এই দু’টি ঘটনাকে তাঁর জীবনে ‘আশ্চর্য ঘটনা’ হিসেবে দেখেছেন। ইদরিস আলম লিখেছেন, “তিনি (বঙ্গবন্ধু) আমার কাছে পত্র লিখেছেন।

১৯৬৬ সালে তিনি আমাকে প্রস্তাব দেন যে, আমি যেন তাঁর বত্রিশ নম্বরের বাসায় থেকে রাজনীতি করি এবং তিনি পকেট খরচ যাবত আমাকে মাসিক সাড়ে তিনশত টাকা দেবেন। কিন্তু জহুর আহমদ চৌধুরীর সান্নিধ্যের কারণে তা সম্ভব হয়নি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি আমাকে বিশ্ব সফরের আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু আমার দুই বন্ধু ছাড়া একলা সফরে যেতে অপারগতা প্রকাশ করি। ……বঙ্গবন্ধু প্রথমে আমাকে পৌরসভার চেয়ারম্যান ও পরে জহুর আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর সংসদ নির্বাচন করতে বলেন”।
ইদরিস আলম মুসলিম হাই স্কুলের জেনারেল ক্যাপ্টেনও নির্বাচিত হন। ইতিমধ্যে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। পরে ম্যাট্রিক পাস করে সিটি কলেজে ভর্তি হওয়ার পর তিনি ছাত্রলীগের সার্বক্ষণিক কর্মী হয়ে যান। সিটি কলেজে অধ্যয়নকালে তাঁর নেতৃত্ব বিকশিত হয় এবং বাগ্মিতা প্রকাশ পায়। এক সময় তিনি তুখোড় ছাত্রনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন, যিনি বক্তৃতার যাদুতে শ্রোতাদের মোহাবিষ্ট করে রাখতে পারেন। মুসলিম হাই স্কুলের ‘বিতার্কিক’ সিটি কলেজে এসে বাগ্মী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। চট্টগ্রামের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে তিনি প্রথমে সরকারী খরচে ঢাকা ও পরবর্তীকালে সরকারের খরচে সমগ্র পশ্চিম পাকিস্তান সফর করেন। ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত শিল্পমন্ত্রীর সভায় তিনিই একমাত্র বাংলাভাষী বক্তা ছিলেন।

সিটি কলেজ ছিলো ইদরিস আলমের জীবনের সুবর্ণ যুগ। তিনি সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের এজিএস ও জিএস নির্বাচিত হন। এ সময় তাঁর মধ্যে কবিত্ব শক্তিরও উন্মেষ ঘটে। পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হতে থাকে। বাগ্মিতায় ষাটের দশকে ইদরিস আলমের সমকক্ষতা দাবি করতে পারতেন আর মাত্র দু’জন ছাত্রলীগ নেতা আশরাফ খান ও এস.এম ইউসুফ। ফেরদৌস কোরেশীর কথা বললাম না, কারণ তিনি অনেক সিনিয়র। বেসিক ডেমোক্র্যাসির ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ইদরিস আলম ও আশরাফ খান চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে একনাগাড়ে ৩৩ ঘণ্টা বক্তৃতার রেকর্ড সৃষ্টি করেন। সেবার আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের প্রার্থী ছিলেন ফাতেমা জিন্নাহ। লালদিঘি ময়দানে তাঁর জনসভা ছিলো। সহস্রাধিক মানুষ তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য স্টেশনে জমায়েত হয়েছিলো। কিন্তু তাঁর আসতে বিলম্ব হচ্ছিলো, তাই উৎসুক জনতাকে ধরে রাখতে ম্যারাথন বক্তৃতা।

মেধায় তাঁকে টেক্কা দেবার মতো ছিলেন এসএম ইউসুফ। এক্ষেত্রেও শহীদ মুরিদুল আলম ও ফেরদৌস কোরেশীর নাম আসবে না সিনিয়রিটির কারণে। লেখালেখিতে ইদরিস আলমের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভাবা যেতে পারে শওকত হাফিজ খান রুশ্নি ও গোফরান গাজীকে। এ প্রসঙ্গ যে কারণে দীর্ঘায়িত করলাম, তা হলো আমি বুঝাতে চাচ্ছি ইদরিস আলম চাইলে কবি বা তার্কিক, কিংবা উপস্থাপক বা আবৃত্তিকারও হতে পারতেন। তাঁর বক্তৃতা ছিলো প্রতর্কোন্মুখ, অথচ আবেগময় বা কাব্যিক। বক্তৃতায় সাহিত্য, ইতিহাসের উদ্ধৃতি টেনে সভাস্থলে এমন রসঘন জমাট পরিবেশ সৃষ্টি করতেন যে, বাচিক শিল্পের অপূর্ব প্রদর্শনী প্রত্যক্ষ করে শ্রোতারা নালেঝোলে হয়ে যেতেন। বাংলা সাহিত্যের আলাওল, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ, উর্দু-ফারসি সাহিত্যের ইকবাল, হাফিজ, গালিব, সাদী, রুমী, জামী, ফেরদৌসী ছিলেন ইদরিস আলমের প্রিয় কবি। অসাধারণ স্মৃতিশক্তির অধিকারী হওয়ার কারণে উপর্যুক্ত কবিদের বহু কবিতা বা কাব্যাংশ তাঁর স্মৃতির ভা-ারে জমা থাকতো। বক্তৃতা বা লেখায় পরপর তারা ভিড় করে আসতো। সমসাময়িক ছাত্রনেতা ও রাজনৈতিক নেতাদের সাথে তাঁর পার্থক্য হলো তিনি ছিলেন এমন এক বহুমাত্রিক প্রতিভা, যাঁর একার জীবনে বহু গুণের সমাবেশ ঘটেছিলো।
ছাত্র রাজনীতি করতে করতে ইদরিস আলম আওয়ামী লীগে ঢুকে পড়েন। তিনিই একমাত্র রাজনৈতিক কর্মী- যিনি একাধারে ছাত্রলীগের নেতা, ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক এবং সিটি আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৪ সালে যখন তাঁকে সিটি আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক করা হয়, তখন ছাত্র রাজনীতিতে তাঁর ভরা যৌবন এবং তাঁর ছাত্রত্বও লোপ পায় নি।
“১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু ৬ দফা কর্মসূচি দেয়ার পর ইদরিস আলম প্রথম উক্ত কর্মসূচির ব্যাখ্যা পুস্তিকা লেখেন। ৬ দফাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য তিনি ডা. সৈয়দুর রহমান চৌধুরী, মানিক চৌধুরী, বিধান কৃষ্ণ সেন, কামাল, আশরাফ খান, বদন দীদারি, জয়নাল আবেদিন প্রধান, আবদুল মালেক প্রমুখের সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রথম সভার আয়োজন থেকে শুরু করে রাত-দিন প্রচার কার্য চালান।

ছাত্রলীগ করার অপরাধে ইদরিস আলম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠনসমূহের রোষানলে পতিত হন এবং তাদের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে এমনভাবে ছুরিকাহত হন যে তাঁর প্রাণ সংশয় উপস্থিত হয়। তিনি লিখেছেন ১৯৬৬ সালের ১৭ অক্টোবর আমাকে তৎকালীন সরকারী ছাত্র সাংগঠন এনএসএফ ও ছাত্র ইউনিয়ন যুক্তভাবে হামলা করে চাকু চালায় এবং হোটেল মিসকার দক্ষিণে রেস্ট হাউসের পেছনে কচুবনে ফেলে দেয়।”
ইদরিস আলম রাজনৈতিক কারণে তিনবার কারাবরণ করেন। ১৯৬৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর স্টেডিয়ামে আইয়ুব খানের নির্বাচনী সভা থেকে প্রথম গ্রেফতার হন। ১৯৬৬ সালে দ্বিতীয়বার এবং ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকা-ের পর সাবেক চসিক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরীসহ অনেকের সঙ্গে গ্রেফতার হন। ইদরিস আলম মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং ট্রেনিংপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন ।

ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে পূর্ব বাকলিয়া ও চরচাক্তাই এলাকায় কোন প্রাথমিক বা উচ্চ বিদ্যালয় ছিলো না। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যখন অনেকেই বিষয় সম্পত্তি দখলের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন, তখন ঊনবিংশ শতাব্দীর শিক্ষাব্রতী কাজেম আলী মাস্টার ও মনুহর আলী মাস্টারের নাতি ইদরিস আলম তাঁর এলাকায় শিক্ষার আলো জ্বালাবার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭২ সালের ১ জানুয়ারি চর চাক্তাই উচ্চ বিদ্যালয়, চর চাক্তাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ইউসেপ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ইদরিস আলম লিখেছেন, “আমার মনে হয় স্বাধীনতার সংগ্রাম ও এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আমার জীবনের মহত্তর অবদান”।

২০০৬ সালের ২ জানুয়ারি সড়ক দুর্ঘটনায় ইদরিস আলমের বাম হাত ভেঙে যায়। পরে তিনি পলিও আর্থারাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে পঙ্গু হয়ে পড়েন। ২০০৬ সালের ৬ নভেম্বর তাঁর জীবন থেমে যায়।

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধা, সিনিয়র
সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক সংগঠক।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট