চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

চাই বহুমাত্রিক উদ্যোগ সৌরজ¦ালানীর অমিত সম্ভাবনা

৩০ আগস্ট, ২০১৯ | ১:০৩ পূর্বাহ্ণ

বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন থেকেই সূর্যকে সকল শক্তির উৎস বিবেচনা করে আসলেও আমাদের প্রয়োজনে বিশেষ করে জ¦ালানির চাহিদা মেটাতে সৌরশক্তির ব্যবহার নিয়ে তেমন ভাবা হয় নি আগে। তবে বর্তমান সময়ে জ¦ালানি সংকটের প্রেক্ষাপটে সৌরশক্তির বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে ব্যাপক চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে বেশ অগ্রগতিও হয়েছে। সৌরবিদ্যুৎ এর জ¦লন্ত দৃষ্টান্ত। সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের সৌরজ¦ালানি ব্যবহারের একটি ঘোষণায় পৃথিবীবাসী ব্যাপক আশান্বিত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ বিষয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণা অব্যাহত থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে অভূতপূর্ব সাফল্য পাওয়া যাবে।
সম্প্রতি প্রকাশিত এমআইটির ‘সাইন্স’ জার্নালের একটি গবেষণা প্রবন্ধে সৌরজ¦ালানি বিষয়ে চমৎকার ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে। এতে সৌরশক্তিকে মওজুদ করে দক্ষতার সাথে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে যে সৌরশক্তির ব্যবহার রয়েছে তা খুবই সীমিত। সবক্ষেত্রে এবং দিন-রাত সর্বক্ষণ তা ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু বিজ্ঞানীরা চাইলে সৌরশক্তির সার্বক্ষণিক ও বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করে জ¦ালানিসংকট দূরীভূত করতে পারে। সৌরশক্তি নিয়ে ব্যাপক গবেষণাশেষে বিজ্ঞানীরা মত প্রকাশ করেছেন আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সৌরশক্তিকে বিদ্যুৎ হিসাবে ব্যবহার করা যাবে এবং অতিরিক্ত সৌরজ¦ালানি ব্যবহার করে পানি থেকে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন উৎপাদন করা সম্ভব হবে গৃহস্থালী জ¦ালানি কোষ তৈরিতে। এর ফলে কেন্দ্রীয় কোন উৎস থেকে তারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পাওয়ার বর্তমান প্রযুক্তিটি অতীতের বিষয়ে পরিণত হতে পারে।

উল্লেখ্য, উদ্ভিদের সালোক-সংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনের পদ্ধতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে দানিয়েল নোসেরার নেতৃত্বে এমআইটি’র একদল বিজ্ঞানী সৌরজ¦ালানি বিষয়ে গবেষণা চালান। সালোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মতো সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে তারা পানিকে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনে বিভাজন করেন। পরে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনকে একত্রে জ¦ালানি সেলে প্রবেশ করিয়ে কার্বনমুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।

সন্দেহ নেই, বিজ্ঞানীদের এই সফল গবেষণা সৌর জ¦ালানির উৎপাদন ও ব্যবহারে এক যুগান্তকারী বিপ্লব সাধন করবে। এতে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সারাপৃথিবীর মানুষই উপকৃত হবে, যদি তা সাম্যপূর্ণভাবে জনকল্যাণে ব্যবহারের সুযোগ পায় সব দেশ। এতে পেট্রোজ¦ালানির ওপর নির্ভরতা কমে যাবে বিধায় পণ্যমূল্যেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যাবে পরিবেশদূষণও। ফলে আবহাওয়া হয়ে উঠবে প্রাণবান্ধব। সংগতকারণে এ বিষয়ে আরো ব্যাপক গবেষণা দরকার। সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাপকভিত্তিক উদ্যোগের পাশাপাশি সৌরজ¦ালানির বৈচিত্র্যময় উৎপাদন ও ব্যবহারে বহুমাত্রিক পদ্রক্ষপ নিতে হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট