চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ

বাঙালি জাতির মুক্তির এক ঐতিহাসিক দলিল

মো. মোরশেদুল আলম

৭ মার্চ, ২০২০ | ৩:২১ পূর্বাহ্ণ

আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ২৩ বছরের শাসন, শোষণ, অত্যাচার, নিপীড়ন এবং বাঙালি জাতিকে ক্ষমতা হস্তান্তরে অনীহা ও কালক্ষেপণ প্রভৃতি কারণে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে এক ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণে পূর্ব বাংলার জনসাধারণের উপর পাকিস্তানি স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়নের চিত্র প্রতিফলিত হয়। তিনি বলেন, “…কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়।…কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, ২৩ বছরের করুণ ইতিহাস বাংলার অত্যাচারের, বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস। ২৩ বছরের ইতিহাস, মুমূর্ষু নর-নারীর আর্তনাদের ইতিহাস। বাংলার ইতিহাস এদেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস। ১৯৫২ সনে রক্ত দিয়েছে, ১৯৫৪ সনে নির্বাচনে জয়লাভ করেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই। ১৯৫৮ সনে আয়ুব খান মার্শাল ল’ জারি করে দশ বৎসর পর্যন্ত আমাদের গোলাম করে রেখেছিল। ১৯৬৬ সনে ৬ দফার আন্দোলনে, ৭ই জুনে আমাদের ছেলেদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।”

১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে এক নম্বর আসামী করে মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ এনে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের তীব্র আন্দোলনের মুখে পাকিস্তান সরকার ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে সকল রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের বৃহত্তম দল হিসেবে স্বীকৃত হয় এবং পি পি পি দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অভিনন্দন জানিয়ে ১১ ডিসেম্বর এক বিবৃতি দেন। এতে তিনি শাসনতন্ত্র প্রণয়নের কাজে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের আত্মনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক তারবার্তার মাধ্যমে অভিনন্দন বাণীর জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে ধন্যবাদ জানান। দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হয়: “আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান প্রেসিডেন্ট জেনারেল এ এম ইয়াহিয়া খানকে আবার আশ^াস দিয়েছেন যে, ছয় দফা ভিত্তিক শাসনতন্ত্রই সকলের প্রতি ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা বিধান করতে পারবে।…তিনি বলেন যে, বাংলাদেশের জনসাধারণ নজিরবিহীন ঐক্যের সাথে তাঁর দলের শাসনতন্ত্র-ফর্মুলা ছয় দফার অনুকূলে রায় দিয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রধান জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা অনুসারে শাসনতন্ত্র প্রণয়নের ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সাফল্যের জন্য মোনাজাত করেন।”

সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও জুলফিকার আলী ভুট্টো নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে পারেন নি। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ১২ জানুয়ারি রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনের জন্য ঢাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে জেনারেল ইয়াহিয়া খানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু আলোচনার কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ইয়াহিয়া খান ১৪ জানুয়ারি ঢাকা ত্যাগ করেন। ১৭ জানুয়ারি ইয়াহিয়া খান সিন্ধু প্রদেশের লারকানা জেলায় জুলফিকার আলী ভুট্টোর বাড়িতে এক গোপন বৈঠকে মিলিত হন। ভুট্টো গণপরিষদের প্রস্তাবিত অধিবেশন বয়কট করার ঘোষণা দেন। এভাবে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুর নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর না করে গড়িমসি করে। পাকিস্তানি জান্তা তাদের পেশাগত প্রবণতার দরুন সামরিক শক্তি প্রয়োগের পথকে বেছে নেয়।

পশ্চিম পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়, সাংবাদিক, আমলা ও কূটনীতিবিদগণ আওয়ামী লীগের ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগের সংখ্যাধিক্য থাকা সত্ত্বেও ইয়াহিয়া খান জুলফিকার আলী ভুট্টোর ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ১ মার্চ এক ঘোষণা জারির মাধ্যমে ৩ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার সাথে সাথে ঢাকাসহ সারা বাংলায় বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে। এমতাবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগ কার্যকরী পরিষদের জরুরী বৈঠকে ২ মার্চ ঢাকায় এবং ৩ মার্চ দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান করা হলে পূর্ব বাংলার জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এতে সাড়া দেয়। ২ মার্চ সবুজের মাঝে লাল বৃত্ত সোনালী দেশের মানচিত্র সংবলিত বাংলাদেশের মানচিত্র উত্তোলন করা হয়। ৩ মার্চ ঢাকার পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগের উদ্যোগে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে স্বাধীনতার ঘোষণা, ইশতেহার ও প্রস্তাব পাঠ করা হয়। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু বলেন, “…আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়, তোমাদের উপর আমার অনুরোধ রইল: প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সব কিছু, আমি যদি হুকুম দেবার না পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে।…কিন্তু আর আমার বুকের উপর গুলি চালাবার চেষ্টা কর না। সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবাতে পারবা না।” রেসকোর্সের জনসমুদ্র থেকে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ঐতিহাসিক এ ভাষণে বাঙালি জাতিকে মুক্তির আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে।…রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো।

এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।’ কোনো প্রকার পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই বঙ্গবন্ধু স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ ভাষণটি প্রদান করেছিলেন। রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লক্ষ জনতার উপস্থিতিতে তিনি যখন ভাষণটি দিচ্ছিলেন, তখন পাকিস্তানি বাহিনী সামরিক বিমান দিয়ে টহল দিচ্ছিল। কালজয়ী এ ভাষণে মুক্তিসংগ্রামের সকল রূপরেখা ও মুক্তির বাণী শুনিয়ে তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিলেন। অত্যন্ত নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক উপায়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকে অগ্রসর হয়েছেন, যাতে বিশ্ববাসীর নিকট এটি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত না হয়। বিশ্ববাসীর কাছে বঙ্গবন্ধু তুলে ধরতে চেয়েছিলেন যে, ইয়াহিয়া-ভুট্টো চক্রই ক্রমাগত তাঁকে বিকল্প পথে যেতে বাধ্য করেছে। এ ভাষণে বঙ্গবন্ধু তাঁর দেশপ্রেম, আঞ্চলিক স্বাধীনতা, যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, স্থানীয় স্বায়ত্বশাসন সম্পর্কে যে সুস্পষ্ট বক্তব্য প্রদান করেন তাতে তাঁর প্রখর বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। বিশ্বজনমত সৃষ্টিতেও তাঁর এ ভাষণ খুবই কার্যকরী হয়। ঞযব উধরষু ঞবষবমৎধঢ়য পত্রিকার প্রতিনিধি উধারফ খড়ংযধশ “ঞযব বহফ ড়ভ ঃযব ড়ষফ চধশরংঃধহ” শিরোনামযুক্ত এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন, ‘ঙহ ঝঁহফধু [গধৎপয ৭] ঝযবরশয গঁলরন পধসব ধং হবধৎ ঃড় ফবপষধৎরহম ঃযরং [ওহফবঢ়বহফবহপব] ধং যব পড়ঁষফ রিঃযড়ঁঃ রহারঃরহম রসসবফরধঃব যধৎংয ৎবধপঃরড়হ ভৎড়স ঃযব অৎসু’.

বঙ্গবন্ধু যখন এ কালজয়ী ভাষণ প্রদান করেন, তখন কিন্তু তিনি প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট ছিলেন না। অথচ তাঁর নির্দেশেই যেন পূর্ব বাংলার সবকিছু চলছে। ১১০৫ শব্দের ১৮ মিনিটের ঐতিহাসিক এ ভাষণটি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃত। ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ জ্যাকব এফ ফিল্ড গ্রিক নগররাষ্ট্র এথেন্সের রাষ্ট্রনায়ক পেরিক্লিস থেকে শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষেট্রর রোনাল্ড রিগান পর্যন্ত ২৫০০ বছরের বিশ্ব ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ৪১ জন সামরিক-বেসামরিক জাতীয় বীরের বিখ্যাত ভাষণ নিয়ে ডব ঝযধষষ ঋরমযঃ ড়হ ঞযব ইবধপযবং: ঞযব ঝঢ়ববপযবং ঞযধঃ ওহংঢ়রৎবফ ঐরংঃড়ৎু শিরেনামে একটি গ্রন্থ লিখেন; যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক এ ভাষণটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক পরামর্শক কমিটি (আইসি) বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণকে ‘মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড’ কর্মসূচির আওতায় বিশ্বের ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। মানুষকে জাগ্রত, উদ্দীপ্ত এবং তীব্র অধিকার সচেতন ও লড়াকু মানসিকতাসম্পন্ন করার জন্য সুদক্ষ বাগ্মীরা কতগুলো কৌশল অবলম্বন করেন। বঙ্গবন্ধুও তাঁর জীবনের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এ ভাষণে পরিচ্ছন্ন দক্ষতা ও সুগভীর আন্তরিকতায় তা করেছেন। ভাষণটির গঠনে কৌশলময়তা আছে, কূটনেতিক প্রজ্ঞা, ইতিহাস থেকে নেয়া শিক্ষা, সময়জ্ঞান ও শব্দচয়নের মুন্সিয়ানা আছে। মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক বঙ্গবন্ধুকে তাই ‘চড়বঃ ড়ভ চড়ষরঃরপং’ অর্থাৎ ‘রাজনীতির কবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রামের অগ্রনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক এ ভাষণ বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত, নিষ্পেষিত স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার আধার। ভাষণটি বঙ্গবন্ধুর অমর রচনা, বাঙালির মহাকাব্য। এ মহাকাব্য বাঙালির হাজার বছরের সংগ্রামের ধারা ও স্বাধীনতার লালিত স্বপ্ন থেকে উৎসারিত। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বাঙালি শত শত বছর ধরে যে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছে, সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে, অসংখ্য কৃষক বিদ্রোহে অংশ নিয়েছে এবং তার ফলে স্বাধীনতার যে প্রত্যাশাটি উন্মুখ হয়ে উঠেছে তাকে ভাষা দিয়েছেন এবং এ স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে প্রস্তুত একটি ঐক্যবদ্ধ বাঙালি জাতি সৃষ্টি করেছিলেন। তাই বলা যায়, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির ¯্রষ্টা এবং এ সংগ্রামের ফলে সৃষ্ট বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ বাঙালি জাতি তো বটেই, সমগ্র বিশ্বের শোষিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের মুক্তির এক ঐতিহাসিক দলিল।

মোঃ মোরশেদুল আলম, সহকারী অধ্যাপক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট