চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

রাষ্ট্রভাষা বিতর্ক ও বাংলা ভাষা

মো. মোরশেদুল আলম

২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ২:৩২ পূর্বাহ্ণ

হাসান হাফিজুর রহমানের ‘অমর একুশে’ কবিতার কয়েকটি চরণ দিয়ে আমি প্রবন্ধটি শুরু করতে চাই। “সালাম, রফিকউদ্দিন, জব্বারÑবি বিষণœ থোকা থোকা নাম; এই এক সারি নাম বর্শার তীক্ষè তীরের মতো এখন হৃদয়কে হানে,…যাঁদের হারালাম তাঁরা আমাদেরকে বিস্তৃত করে দিয়ে গেল দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত, কণা কণা করে ছড়িয়ে দিয়ে গেল দেশের প্রাণের দীপ্তির ভেতর মৃত্যুর অন্ধকারে ডুবে যেতে যেতে।”
১৯৪৭ সালে মুসলিম লীগ উত্থাপিত সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। নবগঠিত পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে তা নিয়ে বুদ্ধিজীবী মহল প্রথম বিতর্ক শুরু করেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে পাকিস্তানের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা সংস্কারের উদ্দেশ্যে করাচিতে পাকিস্তান এডুকেশনাল কনফারেন্স আহ্বান করেন। এ কনফারেন্সে উর্দুকে একমাত্র জাতীয় ভাষা হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে পূর্ব বাংলার প্রতিনিধিরা এর বিরোধিতা করেন। এ সভায় পূর্ব বাংলার পক্ষে আবদুল হামিদ ও হাবিবুল্লাহ বাহার বাংলাকে পূর্ব বাংলার শিক্ষার মাধ্যম করার প্রস্তাব দেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণ করার প্রস্তাব করলে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ জ্ঞানগর্ভ যুক্তি দিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পাল্টা প্রস্তাব করেন। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।

এটি কোনো আদর্শের কথা নয়, এটি বাস্তব কথা। যা প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারা ও ভাষায় বাঙালিত্বের এমন ছাপ মেরে দিয়েছেন যে, তা মালা-তিলক কিংবা টুপি দাড়িতে ঢাকবার জো-টি নেই।’ ড. মুহম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘ইহাতে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সর্বনাশ ঘটিবে।…উর্দু বহিয়া আনিবে পূর্ব-পাকিস্তানবাসীর মরণÑ রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয়, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মৃত্যু। এই রাষ্ট্রীয়ভাষার সূত্র ধরিয়া শাসন, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি সর্ববিষয়ে পূর্ব-পাকিস্তান হইবে উত্তর ভারতীয় এবং পশ্চিম পাকিস্তানি উর্দুওয়ালাদের শাসন ও শোষণের ক্ষেত্র, যেমন ভারত ছিল ইংরেজি রাষ্ট্রভাষার সূত্রে ইংরেজদের শাসন ও শোষণের ক্ষেত্র।’ এর ফলে পূর্ব বাংলার শিক্ষিত সমাজের মধ্যে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার সপক্ষে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি হয়। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখির পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেও বাংলা ভাষার দাবিকে জোরদার করা হয়। পূর্ব পাকিস্তানিদের অধিকাংশের মাতৃভাষা বাংলার উপর পশ্চিম পাকিস্তানিদের আগ্রাসনের কারণ হিসেবে তাঁরা যদিও ‘এক পাকিস্তানের সংহতি’র দোহাই দিয়েছিলেন, কিন্তু এর নেপথ্যে কাজ করেছিল ঔপনিবেশিক চিন্তাভাবনা।

সমগ্র পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মুখের ভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানের শাসকমহল সমাজ ও রাজনীতির মৌলিক বাস্তবতাকে অস্বীকার করে বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতির উপর নগ্নভাবে আক্রমণ শুরু করে। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে সম্মেলনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক যুবলীগ নামে একটি প্রগতিশীল যুব সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। এ সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে মাতৃভাষাকে সংস্কৃতি চর্চা এবং শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বেছে নেওয়ার দাবি জানানো হয়। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২ সেপ্টেম্বর ছাত্র-শিক্ষকদের যৌথ উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘তমদ্দুন মজলিস’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ে এ সংগঠনটি বাংলা ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম ও আইন-আদালতের ভাষা করার পক্ষে প্রচারণা চালায়। তমদ্দুন মজলিস ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা-না উর্দু? শিরোনামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে।
গণপরিষদের অধিবেশন শুরু হলে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ২৩ ফেব্রুয়ারি কংগ্রেসদলীয় সংসদ সদস্য কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত একটি সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করে ইংরেজি ও উর্দুর সঙ্গে বাংলাকেও গণপরিষদের সরকারি ভাষা রাখার প্রস্তাব করেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানসহ সরকারদলীয়রা এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে প্রচ- ক্ষোভ প্রকাশ করেন। খাজা নাজিমুদ্দিন বলেন যে, ‘পূর্ব পাকিস্তানের অধিকাংশ মানুষ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে দেখতে চায় এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার কোন যৌক্তিকতা পূর্ববঙ্গবাসী অনুভব করে না।’ ভাষা আন্দোলনের ব্যাপকতা এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতির বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে অনুষ্ঠিত সভায় ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। নবগঠিত এ পরিষদের আহ্বানে ১১ মার্চ সারা বাংলায় প্রতিবাদ দিবস পালিত হয়। এ প্রতিবাদ দিবসে পূর্ব পাকিস্তান সচিবালয়ের প্রথম গেটের সামনে বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন পরিষদের আহ্বায়ক শামসুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, অলি আহাদ, কাজী গোলাম মাহবুব প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। এ গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ১৩ মার্চ ঢাকা শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূর্ণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয় এবং ১৫ মার্চ পর্যন্ত এ ধর্মঘট অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৫ মার্চ খাজা নাজিম উদ্দিনের সাথে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের ৮ দফা সম্বলিত একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। পূর্ব বাংলার সরকারি ভাষা ও শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলা ভাষাকে গ্রহণ করার বিষয়টি প্রাদেশিক পরিষদে উত্থাপিত এবং গৃহীত হলেও ক্ষমতাসীন দল কেন্দ্রিয় সরকারের কাছে সুপারিশ করার বিষয়টি এড়িয়ে যায়। ২১ মার্চ রেসকোর্সের গণসংবর্ধনায় প্রদত্ত বক্তৃতায় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ব্যাপারে জোর দেন এবং যারা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার সংগ্রামে নিয়োজিত তাদেরকে দেশের শত্রু বলে আখ্যায়িত করেন। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ছাত্র-জনতা আন্দোলন করার কারণে নাজিমুদ্দিন সরকার আন্দোলনকারীদের ওপর যেভাবে জুলুম, নির্যাতন চালিয়েছে জিন্নাহ্ তার নিন্দা না করে বরং মুসলিম লীগ সরকারের কর্মকা- সমর্থন জানায়।

২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে ছাত্রদের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পুনরায় জিন্নাহ্ একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বলে ঘোষণা করার সাথে সাথে উপস্থিত ছাত্ররা আবারো তীব্র প্রতিবাদ করে। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান কেন্দ্রিয় সরকারের মন্ত্রী পূর্ব বাংলার ফজলুর রহমান পেশোয়ার শিক্ষা উপদেষ্টা বোর্ডের সভায় আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রস্তাব করেন। এ ঘোষণা প্রচারের পরই ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা তীব্র প্রতিবাদ জানায়। এরপরও পাকিস্তান সরকার আরবিকে অন্যতম রাষ্ট্রীয় বর্ণমালার মর্যাদা দেয়ার উপায় বের করতে মৌলানা আকরাম খাঁর নেতৃত্বে ১৬ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ব বাংলার ভাষা সংস্কার কমিটি গঠন করেন। এ কমিটি বাংলা ভাষা ব্যবহার ও প্রয়োগ সম্বন্ধে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াশীল উদ্যোগ নেয়ার প্রস্তাব করলেও আরবি হরফে বাংলা লেখার তীব্র বিরোধিতা করে প্রতিবেদন পেশ করলে এ পরিকল্পনাও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বছর। এ বছরের ২৭ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন বলেন, ‘কায়েদে আজম উর্দুকেই পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার কথা ঘোষণা করেছিলেন এবং সেই অনুযায়ী উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।’ নাজিমুদ্দীনের এ বক্তব্যের প্রতিবাদে ৩০ জানুয়ারি ঢাকা শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। এভাবে আন্দোলন ক্রমাগত শক্তিশালী হয়ে উঠার পটভূমিতে পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ৩১ জানুয়ারি ঢাকা বার লাইব্রেরি হলে অনুষ্ঠিত এক সভায় ‘সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শহরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী বিক্ষোভ মিছিলসহ ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’, ‘আরবি হরফে বাংলা চলবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মঘট পালন করে।
পূর্ব বাংলা ব্যবস্থাপক পরিষদের বাজেট অধিবেশনের দিন থাকায় পরবর্তী ধর্মঘটের জন্য ২১ ফেব্রুয়ারিকে বেছে নেওয়া হয়। এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল উক্ত বাজেট অধিবেশনে পরিষদের সদস্যদের সমর্থন আদায় করে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রস্তাব পাস করানোর জন্য কেন্দ্রিয় সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করা। কিন্তু মুসলিম লীগ প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা শহরে এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে সকল প্রকার সভা-সমাবেশ-মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে প্রাদেশিক পরিষদের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের বাধা দিতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং লাঠিচার্জ শুরু করে। একপর্যায়ে পুলিশ গুলি চালালে আবুল বরকত, আব্দুল জব্বার, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, রফিক উদ্দিন আহমদ, আবদুস সালাম, শফিকুর রহমান সহ নাম না জানা বেশ কয়েকজন শহিদ হন। ছাত্রদের উপর নির্বিচারে গুলির প্রতিবাদে মাওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ, আবুল কালাম শামসুদ্দীন প্রমুখ সদস্যগণ পূর্ববঙ্গ ব্যবস্থাপক পরিষদের অধিবেশন কক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন।

পরিশেষে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে রচিত পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের ভূমিকা অপরিসীম। এটা শুধু ভাষাগত কিংবা সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছিল না। এটা ছিল সামন্তবাদের তাঁবেদার পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক-শোষক শ্রেণির জাতিগত নিপীড়নের বিরুদ্ধে আপামর জনসাধারণের এক ব্যাপক গণআন্দোলন। ভাষা আন্দোলনের উপর ভিত্তি করে রচিত পূর্ব বাংলার প্রথম প্রতিবাদী নাটক কবর-এর রচয়িতা মুনীর চৌধুরী, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের সুরকার আলতাফ মাহমুদ, ভাষা আন্দোলনের উপর রচিত উপন্যাস আরেক ফাল্গুন-এর রচয়িতা জহির রায়হান, গণপরিষদের অধিবেশনে ইংরেজি ও উর্দুর সঙ্গে বাংলাকেও গণপরিষদের সরকারি ভাষা রাখার দাবি উত্থাপনকারী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত প্রমুখকেও মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নিকট জীবন দিতে হয়। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় বাঙালির এ আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। পৃথিবীর কোথাও ভাষার নামে কোনো দেশ নেই। কিন্তু বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি গঠিত হয়েছে ভাষার নামে। পৃথিবীর ইতিহাসে বাঙালিই একমাত্র জাতি যারা একই সাথে ভাষার মর্যাদা রক্ষা ও স্বাধীনতার জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে।

মো. মোরশেদুল আলম, সহকারী অধ্যাপক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট