চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নিষিদ্ধ ওষুধ

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ১২:৫৪ পূর্বাহ্ণ

অসুস্থ হলে মানুষ চিকিৎসকের কাছে যায়, চিকিৎসক রোগীকে দেখেশুনে প্রয়োজনীয় ওষুধ লিখে দেন, রোগী দোকান থেকে সে ওষুধ কিনে খায়- এটিই সাধারণ প্রক্রিয়া। কিন্তু দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ওষুধ খেয়েও রোগ সারে না। ভেজাল ও নি¤œমানের ওষুধ রোগ মুক্তি প্রলম্বিত করে, রোগের তীব্রতা বাড়তে থাকে, শেষ পরিণতি অনন্তনিদ্রায় আচ্ছন্ন করে। ভেজালের সমারোহে নতুন সংযোজন আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধ। বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ফার্মেসিতে। সম্প্রতি দেশব্যাপী এ ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে ওষুধ প্রশাসন। আটক করা হয়েছে সম্পূর্ণ অবৈধ বিদেশি বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেট ও ক্যাপসুল। শুধু ফার্মেসিতেই নয়, নগরীর বিভিন্ন হোমিওপ্যাথির দোকানে কিংবা হেকিমি দাওয়াখানায় দেদারছে বিক্রি হচ্ছে বলবর্ধক ও যৌনবর্ধক বিভিন্ন ওষুধ।
ফুড সাপ্লিমেন্ট নামে এগুলো অবাধে দেশে ঢুকছে। ওষুধ প্রশাসনের একটি ড্রাগ কন্ট্রোল কমিটি রয়েছে। কোনো ওষুধ বাজারজাত করার আগে অবশ্যই এ কমিটির অনুমতি প্রয়োজন। এক্ষেত্রে নীতি নৈতিকতার কাছে আমরা নিজেদের সম্পূর্ণ করে নির্ভার জীবন যাপন করছি।
ওষুধ হলো রাসায়নিক পদার্থ যা সঠিক পরিমাণ, সঠিক মাত্রা, সঠিক রোগের জন্য গ্রহণ সেবন এবং সঠিক মেয়াদ পর্যন্ত চালালে মানুষের জন্য কার্যকর। অপব্যবহারে জীবাণু ধ্বংস হয় না যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। জীবন রক্ষাকারী ওষুধ যদি মানসম্পন্ন না হয়, নি¤œমানের হয়, ভেজাল হয়, যথেচ্ছ ব্যবহার কিংবা নির্বিচারে প্রয়োগ, প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রি হয় কিংবা কম দামী অন্য ওষুধ দিয়ে দেয়া বিপজ্জনক। নকল ও নিষিদ্ধ ওষুধ উৎপাদন, বিপণন, পরিবহন ও মজুদ করার কাজে সমাজ বিরোধী চক্রের সাথে ওষুধের দোকানদার ও সহযোগিতা করে থাকে। এর পরিণামে ভয়ঙ্কর স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে আমাদের সহজ-সরল মানুষগুলো। মাদকাশক্তি আমাদের জাতীয় সমস্যা। তা এখন রাজধানী শহর অতিক্রম করে গ্রামের পাড়ায়, মহল্লায় প্রবেশ করেছে। এই দেশের তরুণ সমাজ ড্রাগ আশক্তি হয়ে সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট করছে। যা পরিবারের কর্তা, সমাজসেবক, জাতীয় কর্ণধারগণকে ভাবিয়ে তুলছে। তরুণরা ড্রাগগুলো গ্রহণ করছে অসাধু ওষুধের দোকানধারদের থেকে, ওষুধ বিজ্ঞানে তাদের প্রশিক্ষণ না থাকাতে জাতির প্রতি তাদের কোন কমিটমেন্ট নেই।
ওষুধের মতো সংবেদনশীল পণ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা করা একটি স্বাধীন জাতির জন্য মঙ্গলজনক নয়। হাসপাতাল ক্লিনিক ওষুধের দোকান পরিচালনা ও ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিগুলোতে ওষুধ প্রস্তুত কারণে ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্টদের হাতে ন্যাস্ত করতে হবে। কারণ ওষুধ উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও বিতরণ ব্যবস্থার মতো সর্বক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত দক্ষ দায়িত্বশীল ব্যক্তির উপরই নির্ভর করছে, আমাদের নিরোগ স্বাস্থ্য, প্রশান্ত দেহমন আর সুস্থ্যসবল সৃজনশল আগামী প্রজন্ম। এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ চাই।

মো. আবুল হাসান, খন রঞ্জন রায়,
ডিপ্লোমা শিক্ষা গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ।
৪৭, মতি টাওয়ার, চকবাজার, চট্টগ্রাম।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট