চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

চকরিয়ায় পোশাককর্মী তরুণী গণধর্ষণের শিকার

প্রতারক প্রেমিককে আটক চেয়ারম্যন পুত্রসহ পলাতক ৪

নিজস্ব সংবাদদাতা হ চকরিয়া

২১ জানুয়ারি, ২০২০ | ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ

সম্প্রতি মারা যাওয়া বড় ভাইয়ের চেহেলাম অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফের কর্মস্থলে ফেরার সময় গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৭ বছর বয়সী এক পোশাক কর্মী। রবিবার বিকাল ৪টায় লোক সমাগমে ভরপুর ডুলাহাজারা থেকে টমটমে তুলে নিকটস্থ বালুচরের স্থানীয় চেয়ারম্যানের খামার বাড়িতে নিয়ে তিন ঘণ্টা জিম্মি রেখে প্রতারক প্রেমিকসহ চার বখাটে ওই তরুণী পোশাক কর্মীকে গণধর্ষণ করে। এ সময় অপহরণ ও ধর্ষণে সহায়তা করে টমটম চালক। কক্সবাজারের চকরিয়ায় চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বেলাল উদ্দিন নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

গণধর্ষণের শিকার তরুণীকে রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় উদ্ধার করলেও সোমবার (গতকাল) দুপুরে উপজেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দিতে আনা হয়।
ওই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তরুণীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে ধর্ষণের প্রাথমিক লক্ষণ পেলে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওসিসিতে রেফার করেন। কিন্তু ধর্ষিতা তরুণীকে কক্সবাজার হাসপাতালে গতকাল (সোমবার) বিকাল পর্যন্ত নেয়নি তার অভিভাবকরা।
গণধর্ষণের শিকার তরুণীর বড় বোন মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমার ছোট বোন চট্টগ্রামের একটি গার্মেন্টে চাকরি করে। ১৬ দিন পূর্বে মারা যাওয়া আমার ভাইয়ের চেহলাম অনুষ্ঠানে গ্রামের বাড়িতে আসে সে’।

উল্লেখিত তরুণী গত রবিবার বিকালে উত্তর মেধাকচ্ছপিয়া থেকে ইজিবাইক (টমটম) করে ডুলাহাজারা স্টেশনে যায়। সেখান থেকে চট্টগ্রামে যেতে বাসে উঠার জন্য অপেক্ষায় ছিল। ওই সময় মোটর সাইকেলে করে এসে দুই তরুণ তাকে জোরপূর্বক ইজিবাইকে তুলে নেয়। আগে থেকেই ওই ইজিবাইকে চালকসহ আরো তিন বখাটে ছিল। তারা তরুণীকে বালুচর এলাকায় আমিন চেয়ারম্যানের খামার বাড়িতে জিম্মি করে চার বখাটে গণধর্ষণ করে। ধর্ষণকারী ৪ জনের মধ্যে ওই তরুণীর এক প্রতারক প্রেমিক বেলাল ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের ছেলে তারেকুর রহমান টিটুও জড়িত বলে পুলিশসহ স্থানীয় লোকজন জানায়।

ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ‘আমার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী শাহানা বেগমের প্রশ্রয়ে ছেলে তারেক ইতিপূর্বে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। তাকে সুপথে আনতে পুলিশে সোপর্দও করা হয়েছিল। কারাভোগ করে বের হয়ে আবারো নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়লে আত্মীয়স্বজন নিয়ে বৈঠক করে ছেলে তারেককে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিই। কিন্তু এর মধ্যেই জঘন্য ধর্ষণের ঘটনায় সেও অংশ নেয়। আমি তার উপযুক্ত শাস্তি চাচ্ছি। তার শাস্তি চেয়ে ওসিকেও জানিয়েছি’।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনাটি শোনামাত্রই পুলিশের একাধিক টিমকে মাঠে নামিয়েছি। ধর্ষিতা পরিবারের পক্ষ থেকে সোমবার (গতকাল) সন্ধ্যা পর্যন্ত লিখিত কোন অভিযোগ দেয়া হয়নি। মৌখিকভাবে শুনেই গণধর্ষণে জড়িত অভিযোগে বেলাল উদ্দিন নামের প্রতারক প্রেমিককে আটক করা হয়েছে। অন্য তিনজন ও ইজিবাইক (টমটম) চালককে আটক করতে পুলিশ অভিযানে রয়েছে’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট