চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

‘তরিক্বত কনফারেন্স’ ডাকায় রাউজান আবারো উত্তাল

মুন্সিরঘাটায় আড়াইঘণ্টা অবরোধ চট্টগ্রাম অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা

নিজস্ব সংবাদদাতা হ রাউজান

২০ জানুয়ারি, ২০২০ | ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

অরাজনৈতিক সংগঠনের নামে মুনিরিয়া যুব তবলীগ কমিটির রাজনৈতিক তৎপরতা, আলেম-ওলামা, মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ নেতার ওপর হামলায় জড়িতের অভিযোগের পরও কাগতিয়ার পীর মুনির উল্লাহকে গ্রেপ্তার এবং ওই সংগঠন নিষিদ্ধ না করে সোমবার (আজ) পুনরায় নগরীর বায়েজিদে ‘তরিক্বত কনফারেন্স’ ডাকার কথা উল্লেখ করে ফের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে রাউজানের জনতাসহ স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ।

এতে রাউজান আবারো উত্তাল হয়ে উঠেছে। রাউজানের সর্বস্তরের জনতাসহ স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের ডাকে গতকাল রবিবার রাঙামাটি সড়কের রাউজান সদরের মুন্সিরঘাটায় সড়ক অবরোধ করা হয়। এর আগে মুন্সিরঘাটা চত্বরে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। মিছিলটি রাঙামাটি সড়কে বিভিন্নস্থান এবং জলিল নগর প্রদক্ষিণ করে। সড়ক অবরোধের কারণে সড়কের দু’পাশে শত শত যাত্রীবাহী এবং মালবাহী শহর-রাঙামাটিমুখী গাড়ি আটকে পড়ে। মুন্সিরঘাটায় গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে, ফটকা ফাটিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে জনমনে আতংক সৃষ্টি হয়। বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে এবং গাছের গুঁড়ি ফেলে করা সড়ক অবরোধ উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের অনুরোধে এবং আশ্বাসে রাত প্রায় ৮টার দিকে (আড়াইঘণ্টা যাবৎ সড়ক অবরোধ চলে) তুলে নেয় আন্দোলনকারীরা। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হলেও দীর্ঘক্ষণ যানজট লেগেছিল। তবে রবিবার রাতের মধ্যে আজকের (সোমবার) বায়েজিদে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি আহূত ‘তরিক্বত কনফারেন্স’ বন্ধ করা না হলে সোমবার সকাল ১০টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বৃহত্তর চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট, সড়ক অবরোধসহ আরো কর্মসূচি ঘোষণা দেয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।

এ প্রসঙ্গে মুনিরীয়াবিরোধী আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও রাউজান পৌরসভার ২য় প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন ‘বায়েজিদে মাহফিলের নামে সন্ত্রাসীদের যে মিলন মেলা করা হচ্ছে তা বন্ধ, তাদের তালিকাভুক্ত ৬০ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার, মুনির উল্লাহকে গ্রেপ্তার এবং মুনিরীয়া তরিকত নিষিদ্ধ না করলে এ আন্দোলন চলবে। তবে রবিবার রাত ৮টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা মামনুন আহমেদ অনিক এবং ওসি কেপায়েত উল্লাহ এসে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন নগর প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সোমবার আহূত বায়েজিদের ‘তরিকত কনফারেন্স’ বন্ধের চেষ্টার আশ্বাস দেয়। একারণে আমরা আপাতত সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নিই। তবে আমাদের দাবি মানা না হলে ‘আমরা আজ সোমবার সকাল ১০টা অনির্দিষ্টকালের জন্য বৃহত্তর চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট, সড়ক অবরোধ, চট্টগ্রাম অভিমুখে লংমার্চসহ কঠিন কর্মসূচি শুরু হবে।’

এদিকে অবরোধের পূর্বে রবিবার বিকেল চারটায় মুন্সিরঘাটা চত্বরে মুনির উল্লাহকে গ্রেপ্তারসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং এরপর বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এতে আন্দোলনকারী, রাজনৈতিক সংগঠন, বিভিন্ন তরিকতপন্থী এবং হাজার হাজার সুন্নী জনতা অংশ নেয়। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি, মুনিরিয়াবিরোধী আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জমির উদ্দিন পারভেজের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আ.লীগের সভাপতি কাজী আবদুল ওহাব, সিনিয়র সহ সভাপতি আনোয়ারুল ইমলাম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ কফিল উদ্দিন চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক বশির উদ্দিন খাঁন, আ. লীগ নেতা জানে আলম জনি, সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানা, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস উদ্দিন আহমেদ, শফিকুল ইসলাম, বিএম জসিম উদ্দিন হিরু, তছলিম উদ্দিন চৌধুরী, জসিম উদ্দিন চৌধুরী, আহসান হাবিব চৌধুরী, দিদারুল আলম, শওকত হাসান, নুরুল আমিন, মো. ইউনুছ, মুছা আলম খাঁন চৌধুরী, আবদুল লতিফ, আজিজ উদ্দিন ইমু, মাওলানা খোরশেদুল আলম, এস.এম মহিবুল্লাহ্, শওকত হোসেন, হাসান মোহাম্মাদ রাসেল, আবু ছৈয়দ আলমগীর, জিয়াউল হক রোকন, আবদুল্লাহ্ আল্ মাসুদ, কামরুল ইসলাম বাচ্চু, আনোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা জিল্লুর রহমান মাসুদ, শাখাওয়াত হোসেন পিবলু, মোহাম্মদ আসিফ, সাইদুল ইসলাম, সাহেদ হোসেন, হাসান তানভীর চৌধুরী, সাবের হোসেন, নাছির উদ্দিন, আরমান সিকদার, ফয়সাল মাহমুদ প্রমুখ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট