চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

মোছলেম উদ্দিন আহমদ প্রধান কাজ হবে কালুরঘাট সেতু নির্মাণ

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

১২ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৪:২০ পূর্বাহ্ণ

প্রবীণ রাজনীতিবিদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ। ‘৬৬ সালে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতির হাতেখড়ি। মুসলিম হাইস্কুলের ছাত্রাবস্থায় শিক্ষা আন্দোলন করতে গিয়ে কারাবরণ করেন। শিক্ষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ ও মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, দক্ষিণ চট্টগ্রাম যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি এবং ২৬ বছর ধরে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, স্কুল-কলেজের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আপাদমস্তক একজন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠক।

মোছলেম উদ্দিন আহমদ চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, বায়েজিদ আংশিক) সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পটিয়া সংসদীয় আসন থেকে দলীয় প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। দুইবারই বিএনপি প্রার্থীর কাছে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। এবার নিজের সংসদীয় আসন থেকে দলীয় প্রতীক নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
গতকাল নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে কথা বলেন দৈনিক পূর্বকোণের সঙ্গে।

মোছলেম উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম-৮ নির্বাচনী এলাকায় জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। এজন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।
‘৭৩ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ দলীয় কোন প্রার্থী এই আসন থেকে এমপি হতে পারেনি। এতে আওয়ামী লীগ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একইভাবে এই এলাকার কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়নি। অথচ বর্তমান সরকারের আমলে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। সেই তুলনায় এই আসনের যে উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি থাকলে মানুষের প্রত্যাশিত উন্নয়ন সাধিত হত। আওয়ামী লীগের প্রার্থী এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আশা করছি, এবার মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারব। জননেত্রী শেখ হাসিনার আমার উপর যে আস্থা-বিশ্বাস রয়েছে, এই এলাকার মানুষ মনে করে আমাকে এমপি নির্বাচিত করা হলে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন হবে।

নিজেকে রাজনৈতিক কর্মী উল্লেখ করে মোছলেম উদ্দিন বলেন, মানুষ দিন-রাত আমাকে ব্যবহার করতে পারবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে আজীবন গণমানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। কিন্ত আমার কাছে অন্যান্য দলের মানুষও সম্মান-মর্যাদা পেয়েছেন। দেশ এবং দেশের মানুষকে ভালোবেসে আজীবন রাজনীতি করেছি। আমার কাছে মানুষের প্রত্যাশাও বেশি।
এবার আমার জন্মস্থান থেকে নির্বাচন করার সুযোগ পাওয়ায় আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করছি। এই আসন থেকে আমার নির্বাচন করার সুযোগ হয়নি। নেত্রী আমাকে যে সুযোগ দিয়েছেন, জীবনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করব।
দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী, বোয়ালখালী, পটিয়া, রাঙ্গুনীয়াবাসীর দুঃখ খ্যাত কালুরঘাটে নতুন সেতু নির্মাণের অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচিত হলে আমার প্রধান দায়িত্ব হবে কালুরঘাট সেতুর নির্মাণ কাজ দৃশ্যমান করা। এর জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করে যাবো। তিনি বলেন, কালুরঘাটে রেল সেতু নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সেতুমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, রেল সেতুর পাশে আরেকটি সড়ক সেতু নির্মাণ করা হবে। আশা করছি, তাও দৃশ্যমান করা হবে।

মোছলেম উদ্দিন বলেন, বোয়ালখালী হচ্ছে শহরতলী উপজেলা। উপ-শহর ঘোষণার স্বপ্ন আর শুনতে হবে না এলাকাবাসীকে। অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে যেমন বোয়ালখালী পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি, তেমনি বোয়ালখালীতে সত্যিকারের উপ-শহর রূপদানে আমৃত্যু কাজ করে যাবো। একইভাবে নদী ভাঙনরোধ, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, একটি সুদৃশ্য অডিটোরিয়াম নির্মাণসহ এলাকার সার্বিক উন্নয়নে আপ্রাণ চেষ্টা করবো।
আমি নীতি ও আদর্শের প্রতি কোন কম্প্রোমাইজ করিনি। তবে এমপি নির্বাচিত হলে শুধু আওয়ামী লীগের নয়, সর্বস্তরের মানুষের জন্য আমার দুয়ার খোলা থাকবে। এলাকার উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত মতামত নয়, সার্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করবে। এলাকাবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান, আমাকে একটি বার সুযোগ দিন, আমি আপনাদের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ করবো।
দুর্র্র্র্র্র্র্র্নীতিমুক্ত-শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। তাঁর সৈনিক হিসেবে আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জনগণের সেবা করার সুযোগ দিন।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে কিছু সমন্বয়হীনতা রয়েছে, দূরত্ব রয়েছে। এই মুহূর্তে সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার বিজয়ে কাজ করতে হবে। অন্যান্য দলের প্রতি আহ্বান, যারা এলাকার উন্নয়ন চান, দেশকে ভালোবাসেন-তারা যেন নৌকা মার্কায় ভোট দেন। কারণ এই ভোটে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পরিবর্তন হবে না। প্রধানমন্ত্রী বদল হবে না। নৌকার বিজয় হলে এলাকার উন্নয়নে গ্যারান্টি দিতে পারব। আমরা দায়বদ্ধ থাকব। আশা করছি, চট্টগ্রাম-৮ নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে জনগণ নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট