চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সরকারি ধান-চাল কেনা শুরু

শীতের শুরুতে নবান্নের ঘ্রাণ কৃষক পরিবারে

রাউজান উঁচু এলাকায় প্রায় শেষ, নিম্নাঞ্চলে চলছে ধান কাটার মহোৎসব

জাহেদুল আলম, রাউজান

১১ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ২:২৬ পূর্বাহ্ণ

রাউজানের ঘরে ঘরে এখন আমনের পাকা ধান ঘরে তোলার ব্যস্ততা। নবান্নের উৎসবে মেতে উঠেছে কৃষক পরিবারগুলো। ইতিমধ্যে উপজেলার পাকা ধান কাটা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। তবে এখন চলছে নিন্মাঞ্চলগুলোতে পাকা ধান কাটা ও মাড়াই। আগামী দু’এক সপ্তাহের মধ্যে এসব এলাকার পাকা ধান কাটাও শেষ হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৯ ওয়ার্ডের বিভিন্ন আবাদী জমির মধ্যে উঁচু অঞ্চল হিসেবে খ্যাত পৌরসভার বেশিরভাগ ওয়ার্ড এবং ডাবুয়া, হলদিয়া, নোয়াজিষপুর, গহিরা, চিকদাইর, কদলপুর, রাউজান ইউনিয়নের বিভিন্ন অংশে ইতিমধ্যে ধান কাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এখন ধান কাটা চলছে নিম্নাঞ্চল হিসেবে খ্যাত পূর্ব গুজরা, বিনাজুরী, পশ্চিম গুজরা, উরকিরচর, নোয়াপাড়া, পাহাড়তলী, বাগোয়ানে। তবে শ্রমিক অতিরিক্ত মজুরিতে বেশ ভোগান্তি পোহাচ্ছে কৃষকরা।

জানা যায়, প্রতিদিন ভোরের হালকা শীতে উপজেলার অনেক এলাকায় কৃষক কিংবা কামলারা নেমে পড়ছেন ধান কাটতে জমিতে। আশার কথা, এবার রাউজানে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। বেশ কিছুদিন আগে ‘বুলবুল’ নামের যে ঘূর্ণিঝড় দেশে বয়ে গেছে, তার প্রভাব তেমন একটা পড়েনি উপজেলার আমন ফসলে- এমনটাই জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা। তারা জানান, বৃষ্টি ও সামান্য বাতাসে কিছু এলাকায় কাঁচা-পাকা ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও ক্ষতির পরিমাণ খুব বেশি হয়নি। তারা আরো জানান, এ মৌসুমে সার্বিকভাবে আমন ফসল উৎপাদনের অনুকূল পরিবেশ ছিল। বিশেষ করে অতি বৃষ্টিপাত ও বন্যার পর বীজ, চারা রোপণ, সময়মতো বৃষ্টির পানি পাওয়া, পোকা মাকড়ের প্রতি কৃষকের সচেতনতা, রোগ-বালাই প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ ও কৃষি অফিসের মাঠকর্মীদের এলাকায় এলাকায় কৃষকদের যোগাযোগসহ নানা কারণে এবার রাউজানে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে মাঠ থেকে ধান ঘরে তুললেও কতটুকু নায্যমূল্যে পাবে, সে শঙ্কায় ভুগছেন উপজেলার কৃষকরা। এদিকে উপজেলায় ইতিমধ্যে সরকার নায্যমূল্যে আমনের ধান-চাল ক্রয় করেছে।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সঞ্জীব কুমার সুশীল বলেন, ‘ইতিমধ্যে উপজেলা প্রায় এলাকা আমনের ফসল কর্তন করা হয়েছে। বাকি ফসল কাটা হচ্ছে।’ তিনি জানান, এবার আমনের লক্ষ্যামাত্রা ছিল ১১ হাজার ২৭৬ হেক্টর। চাষ হয়েছে ১১ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে। জমিতে যে আকারে ফলন এসেছে, তাতে গত বছরের চেয়ে এবার ফসল উৎপাদন বেশি হবে। এতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। তিনি আরো জানান, রাউজানে আমনের আমন ফসলে বুলবুলের প্রভাব কিছুটা পড়লেও উল্লেখযোগ্য নয়।
উপজেলার কদলপুর এলাকার রহিম মিয়া নামের এক কৃষক বলেন, ‘বোরো চাষ করে লাভবান হইনি। আমন চাষ করে উৎপাদনের সঙ্গে খরচ উঠবে কিনা, মুনাফা হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।’

এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা জানান, ইতিমধ্যে সরকার কৃষকদের কাছ থেকে আমন ধান-চাল কেনা শুরু করেছে। পর্যায়ক্রমে সব ইউনিয়নে ধান চাল ক্রয় করা হবে। জানা যায়, সরকার এবার ২৬ টাকা দরে আমন ধান ও ৩৪ টাকা করে চাল কিনছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার কাজী আতিকুর রহমান বলেন, ‘বুলবুলের প্রভাবে মাটিতে নুয়ে পড়া ফসলের কিছু ক্ষতি হয়েছে। তবে এবার অন্যবারের চেয়ে উপজেলায় আমনের ফলন ভালো হয়েছে।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট