চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কৃষকও খুশি মূল্য পেয়ে

এবার অঢেল ফলেছে শীতকালীন সবজি বাঁশখালী

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁশখালী

১০ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৩:৪৭ পূর্বাহ্ণ

বাঁশখালীতে এবার অঢেল ফলেছে শীতকালীন সবজি । প্রতিদিন ভোরে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজিগুলো ক্ষেত থেকে তুলে এনে বাজারে পাইকারি দরে বিক্রি করছে। দাম ভাল পাওয়ায় বেজায় খুশি কৃষকরাও।

উপজেলার সাধনপুর, কালীপুর, বৈলছড়ি, পাইরাং, জঙ্গল জলদী, চাম্বল, শীলকূপ, নাপোড়ার পাহাড়ি এলাকায় ও সমতল ভূমিতে বিপুল পরিমাণ সবজির ফলন হয়েছে। কৃষকরা নিজস্ব পদ্ধতিতে চাষাবাদে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন বলে জানা যায়। উপকূলীয় লবণ সহিষ্ণু এলাকার গ-ামারা ও সরলে দেশি-বিদেশি জাতের টমেটোর ফলন হয়েছে সবচেয়ে বেশি। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সাতকানিয়া থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসব সবজি ক্রয় করে ট্রাকযোগে বিভিন্ন স্থানে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিপ্রতি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, ফুলকপি ৬০-৭০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০-৬০ টাকা, শশা (খিরা) ৬০-৭০ টাকা, দেশি আলু ৫০ টাকা, পুরাতন আলু ২৫-৩০ টাকা, শিম ৭০-৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, লাউ ৩০ টাকা, মূলা ৩০-৩৫ টাকা এবং বিভিন্ন শাকের প্রতি আঁটি ১০-২০ টাকা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে টমেটো চাষ হয়েছে ১৮০ হেক্টর, বরবটি ১৫০ হেক্টর, মূলা ১২৫ হেক্টর, বেগুন ২০০ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ৫৫ হেক্টর, বাঁধাকপি ২০০ হেক্টর, লাউ ১২০ হেক্টর, লাল শাক ৫০ হেক্টর, মূলা শাক ৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। এই উপজেলায় আবাদি জমির সংখ্যা পূর্বের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এক ফসলি আবাদি জমি ১ হাজার ৩৯৫ হেক্টর, দুই ফসলি ৯ হাজার ৫১৭ হেক্টর ও ৩ ফসলি ৭ হাজার ৬৫ হেক্টর। এবার শীতকালীন মৌসুমে রবি শস্যের চাষাবাদ হয়েছে ২২শ হেক্টর। তম্মধ্যে পাহাড়ি এলাকায় সবচেয়ে শীতকালীন সবজির চাষাবাদ হয় বেশি। মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৪৩ হাজার ৭২৪ হেক্টর। কৃষি পরিবারের সংখ্যা ৬৮ হাজার ২২৪ জন। এদিকে অন্য বছরের তুলনায় বাঁশখালীতে গতবার সবজির বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকরা অধিক মুনাফা পেয়ে সবজি চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। বিশেষ করে স্থানীয় উন্নতজাতের বেগুন ও বিদেশি জাতের টমেটো যথা- রতন, মানিক, বত, সুরক্ষা, উদয়ন ও কৃষি গবেষণাগার থেকে উৎপাদিত বীজ, বারি-১ হতে ৬ পর্যন্ত বীজ চাষাবাদে কৃষকরা আগ্রহী। উপজেলার জঙ্গল জলদী পাহাড়ি এলাকার কৃষক মো. নুরুল আমিন ও শীলকূপের কৃষক মো. ফরিদ জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ছড়ার পানি দিয়ে চাষাবাদ করা হয়েছে। এখানে কাঁচা মরিচ, টমেটো, বেগুন, ফুল কপি, বাঁধাকপি, মূলাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষাবাদ হয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে খোঁজখবর নিয়ে ভাল বীজ সংগ্রহ করে চাষাবাদে ব্যবহৃত হয়েছে। যার ফলে ফলনও ভাল হয়েছে। তাছাড়া গোবর সার ও বিষ সঠিক সময়ে সঠিক ভাবে প্রয়োগ করায় ভাল ফলনের মুখ দেখা গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সালেহ বলেন, বাঁশখালীতে এবার সবজির ভাল ফলন হয়েছে। আগাম উৎপাদিত সবজিগুলোর ন্যায্য দাম পাচ্ছে কৃষকরা। ভাল ফলনের জন্য কৃষকদেরকে চাষাবাদে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে কৃষকদের।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট