চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

৪৮ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা মহিআলম চৌধুরীর স্মরণসভা

বাঁশখালী সংবাদদাতা

১৭ নভেম্বর, ২০১৯ | ৫:১২ অপরাহ্ণ

বাঁশখালীতে স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত ফ্লাইট সার্জেন্ট মুক্তিযোদ্ধা এ.এইচ.এম মহিআলম চৌধুরীর ৪৮ বছর পর যুদ্ধকালীন স্থান ও কবর খুঁজে পাওয়ায় নিহত পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে সাধনপুর ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন চৌধুরী খোকা। বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া গ্রামের চৌধুরীর বাড়ীর কৃত্বি সন্তান ফ্লাইট সার্জেন্ট মুক্তিযোদ্ধা এ.এইচ.এম মহিআলম চৌধুরীর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, যুদ্ধকালীন সময়ে নিহত বরিশালের মহিআলম চৌধুরীর বড় ভাই মাসুদ চৌধুরী, ভাতিজী মারজান চৌধুরী, ভাতিজী জামাতা নাজমুল হাসান, নাতি সাইফুল ইসলাম ও ভগ্নিপুত্র মাসউদ উদ্দীন চৌধুরী।

সাধনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদুর রশীদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহেনা আক্তার কাজমী, স্মরণসভা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব ও সাধনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমান উল্লাহ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা আহমদ ছফা, মুক্তিযোদ্ধা আবুল বশর, মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চক্রবর্ত্তী, মুক্তিযোদ্ধা সরোয়ার আলম, সাধনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফেরদৌস, বাণীগ্রাম সাধনপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য সুশীল দে টুটুল, ইলিয়াছ, ইউপি সদস্য মো. দেলোয়ার, ওসমান, রহিম, সমশু উদ্দিন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ফ্লাইট সার্জেন্ট মুক্তিযোদ্ধা এ.এইচ.এম মহিআলম চৌধুরীর বড় ভাই মাসুদ চৌধুরী আবেগ আল্পুত হয়ে বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে আমার ছোট মহিআলম চৌধুরী সাড়া দিয়ে বাঁশখালীতে এসে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে এই বাঁশখালী উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ৪৮ বছর পর আমার ভাইয়ের মুক্তিযোদ্ধাকালীন সময়ের অবস্থান জানতে পেরেছি। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সে বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনেই মৃত্যু হয় বলে আমরা জানতে পেরেছি। পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার পূর্বে গহীন পাহাড়িয়া এলাকায় তার কবরের সন্ধান পাওয়া যায়। বাঁশখালীর মানুষ আমার ভাইকে স্মরণে রেখেছে এজন্য আমাদের পরিবার কৃতজ্ঞ।

সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন চৌধুরী খোকা বলেন, ফ্লাইট সার্জেন্ট মুক্তিযোদ্ধা মহিআলম চৌধুরীর মুক্তিযুদ্ধে যে অবদান রেখেছেন তা চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে সাধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার কবরস্থান যেহেতু সাধনপুরে তাই প্রতিবছর এখানেই স্মরণসভা করা হবে।  

অতিথিদের বক্তব্যে বক্তারা বলেন, বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া গ্রামের চৌধুরীর বাড়ীর কৃত্বি সন্তান ফ্লাইট সার্জেন্ট মুক্তিযোদ্ধা এ.এইচ.এম মহিআলম চৌধুরী স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীদের শক্তিশালী ও একত্রিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এই সাধনপুর পাহাড়ি এলাকায় বাঁশখালীর ৫ মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপ একত্রিত হয়ে অনেক রাজাকার আলবদরকে পরাস্থ করেছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের পূর্বে বিশেষ ট্রেনিং গ্রহণ করে বাঁশখালীতে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে পাক বাহিনীদের বিতাড়িত করার জন্য যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভে তাঁর অবদান আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। 

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট