চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

৮ পণ্যে গড় মূল্যবৃদ্ধি ১০৭%

ইমরান বিন ছবুর

১৭ নভেম্বর, ২০১৯ | ৩:৫০ পূর্বাহ্ণ

এক বছরের ব্যবধানে ৮টি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের গড়ে দাম বেড়েছে ১০৭ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৭১ শতাংশ দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। তার পরের অবস্থানে রয়েছে রসুন। এই পণ্যের দাম বেড়েছে ১২১ শতাংশ। এছাড়া আদার দাম বেড়েছে ৬৬ শতাংশ, বেগুন ৩৮ শতাংশ, আটা ২৪ শতাংশ, চিনি ১৮ শতাংশ, ডিম ১৩ শতাংশ এবং গুঁড়ো দুধের দাম ৮ শতাংশ বেড়েছে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।

এদিকে, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষের মাঝে বাজারভীতি দেখা দিয়েছে। মাসের বাজার খরচ মেলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিপাকে পড়েছেন নিন্ম আয়ের মানুষ।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত বছর এইদিনে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৪০ এবং আমদানি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৫ থেকে ৩২ টাকা দরে। গতকাল পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকা থেকে ২৩০ টাকায়। গত বছরের এই দিনে দেশি রসুন বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায় এবং আমদানি রসুন বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৯০ টাকায়। গতকাল বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। গত বছরের এই দিনে আদা বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১৩০ টাকায়। গতকাল চায়না আদা বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। বেগুন গত বছর এইদিনে ছিল ২০ থেকে ৪৫ টাকায়। গতকাল যা ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। গতবছর এই দিনে প্যাকেট আটা ছিল ২৬-২৮ টাকায়। গতকাল যা বিক্রি হয়েছে প্যাকেট আটা ৩২-৩৫ টাকা এবং খোলা আটা ২৭-৩০ টাকা। গত বছর এই দিনে চিনির মূল্য ছিল ৪৮-৫২ টাকা প্রতি কেজি। যার বর্তমান মূল্য ৫৮ টাকা। গত বছর এক ডজন ডিমের দাম ছিল ৮৫-৯০ টাকা। যার বর্তমান মূল্য ৯৫ টাকা। প্যাকেট গুঁড়ো দুধের দাম গত বছর এই দিনে ছিল ৫৭০ টাকা। বর্তমানে যা ৫৯০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের সাথে সাথে চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। অভিযান চালিয়েও এসব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। গত সপ্তাহের ১ হাজার ৯৫০ টাকার চিনি বর্তমানে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০ টাকায়। খুচরা বাজারে চিনি ৫৮ টাকায়। চায়না, তুরস্ক, মিশরের পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ থেকে ১৯০ টাকায়। এছাড়া, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ১৭০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
কনজিউমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, আমাদের দেশের অতি মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীরা সারা বছর কিছু না কিছু পণ্যের সংকট সৃষ্টি করে। ইচ্ছাকৃত এই সংকটের কারণে পণ্যের দাম দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামত দাম বৃদ্ধি বা মজুদ করলেও প্রশাসনের কোন নজরদারি নেই। মনিটরিং আরো জোরদার করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে শুধু পেঁয়াজের বাজার অস্তির নয়। এর সাথে সাথে সব ভোগ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি কেজি চালে ৭ থেকে ৮ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছে মত দাম বৃদ্ধি করে বলছে, প্রশাসনের অভিযানের কারণে দাম আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা বলা মানে এক ধরনের হুমকি দেয়ার মত। সরকারকে আমরা অনেকবার বলেছি, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশকে (টিসিবি) কাজে লাগানোর জন্য। কিন্তু সরকার তা করেনি।

চালের বাজার

সিদ্ধ বাশমতি চাউল (৫০ কেজির বস্তা) গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০ টাকায়। যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২৩০ টাকা থেকে ২ হাজার ২৫০ টাকা পর্যন্ত। পারি সিদ্ধ গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪৮০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। মিনিকেট সিদ্ধ গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৫৭০ টাকা থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ টাকায়। ইরি আতব (মোটা) গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৯০০ টাকা থেকে ৯২০ টাকায়। যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ টাকায়।

মশলার বাজার
এলাচি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২ হাজার ৬০০ টাকা। যা গত ১৫ দিন আগে ছিল ২ হাজার ১০০ টাকা। ভারতীয় মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ২১০ টাকা। গত সপ্তাহের ১০২ টাকার হলুদ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট