জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দ-িত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে করা হাইকোর্টের খারিজাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। গতকাল আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ১৪০১ পৃষ্ঠার আপিল আবেদন দাখিল করা হয়। খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য এডভোকেট সগীর হোসেন লিওন আপিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে চ্যারিটেবল মামলায় গত ৩১ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করেছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় জামিন চেয়ে হাইকোর্টের খারিজাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলেন বেগম জিয়ার আইনজীবীরা।
এদিকে গতকাল জাতীর সংসদের পঞ্চম অধিবেশনের সমাপনি দিনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য জামিনে মুক্তির ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন দলটির এমপি হারুনুর রশিদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩)। পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে তিনি স্পিকারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ অনুরোধ জানান।
প্রসঙ্গত ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দ-ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অর্থদ- স্থগিত এবং সম্পত্তি জব্দের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়ে দুই মাসের মধ্যে ওই মামলার নথি তলব করেছিলেন আদালত। এরপর ২০ জুন বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। গত বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করা হয়। ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদ- ও ১০ লাখ টাকার অর্থদ- দেন আদালত। এর পর ওই বছরের ১৮ নভেম্বর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে জামিন ও খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া।
দুদকের জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদ- নিয়ে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে খালেদা জিয়া।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে দুর্নীতির মামলা ৫টি- জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, নাইকো, গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতির মামলা। এ ৫টি মামলাই সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলের (১/১১)। অন্য ৩১টি মামলা ২০১৪ সালের পর হয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি ঢাকায়, কুমিল্লায় ৩টি এবং পঞ্চগড় ও নড়াইলে একটি।
মূলত রাষ্ট্রদ্রোহ, হত্যা, ইতিহাস বিকৃতি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি, ভুয়া জন্মদিন পালন ও ঋণখেলাপির অভিযোগে এসব মামলা হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে দুটি ছাড়া সবকটি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর হয়েছে। জিয়া চ্যারিটেবল ও অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় জামিন পেলেই খালেদা জিয়ার মুক্তির আশা করছেন তার আইনজীবীরা। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।