চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

লাখো মানুষের ঢল জশনে জুলুসে

নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:৩৩ পূর্বাহ্ণ

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.) আগমনে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) পালন করেছে চট্টগ্রামের মানুষ। ঘূর্ণিঝড়ের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছে লাখো মুসল্লি। রবিবার সকাল থেকেই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে নগরীর ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ থেকে বের করা হয় জশনে জুলস। আয়োজকদের দাবি এবারের জুলুসে ৬০ লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের আয়োজনে অনুষ্ঠিত জুলুসের নেতৃত্ব দেন পাকিস্তান থেকে আগত ধর্মীয় নেতা আওলাদে রাসুল আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মা.জি.আ)। বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর পৃথিবীতে শুভাগমনের এ দিনটি ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণভাবে উদযাপন করতেই এ জুলুসের আয়োজন করে থাকেন আনজুমান ট্রাস্ট।

এদিকে দোয়া, মাহফিল ও আলোচনা সভার মাধ্যমে পালন করা হয়েছে ১২ রবিউল আউয়াল তথা পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। মিলাদ, কোরআন হাদিসের আলোকে আলোচনার পাশাপাশি বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা ইসলামের বাণীকে আরও প্রতিষ্ঠিত করার গুরুত্ব তুলে ধরেন আলোচকরা।
রবিবার সকাল ১০টায় আওলাদে রাসুল আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মা.জি.আ)’র নেতৃত্বে হামদ, না’ত ও দরুদ সালাম পড়ে জশনে জুলুস বের করা হয় ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ্ শরীফ থেকে। তাঁর সাথে ছিলেন দুই সাহেবজাদা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ এবং আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ হামিদ শাহ্ (মা.জি.আ)।

মুরাদপুর হয়ে চকবাজার, দিদার মার্কেট, আন্দরকিল্লা, প্রেসক্লাব, কাজীর দেউড়ি, ওয়াসা, জিইসি, মুরাদপুর হয়ে পুনরায় জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ময়দানে বিকেল আড়াইটায় ফিরে আসে। এর আগে জুলুসটি কাজির দেউড়ি এসে পৌঁছালে সেখানে বক্তব্য রাখেন সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ। এসময় তিনি দেশের শান্তি-সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত করেন। এসময় পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান আলহাজ সূফি মিজানুর রহমানও বক্তব্য রাখেন।

জামেয়া ময়দানে জুলুসটি ফিরে আসার পর যোহর নামাজ শেষে আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মা.জি.আ) বক্তব্য ও আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয় জুলুস। এর আগে তিনি বাংলাদেশের উন্নতি, সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনায় বিশ্ববাসীর জন্য দোয়া কামনা করেন।
এদিকে, জশনে জুলুস উপলক্ষে ভোর থেকেই নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তারকা খচিত ধর্মীয় পতাকা নিয়ে অবস্থান নেয় নানা বয়সী মানুষ। জুলুসে অংশ নিতে ষোলশহরস্থ জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা ময়দান ও আশপাশের এলাকা ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। অন্যদিকে, লাখ লাখ মানুষের অংশ নেয়া বিশাল জুলুসের নিয়ন্ত্রণ করতে অতিরিক্ত পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল।
আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের উপদেষ্টা ও পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সূফি মিজানুর রহমান বলেন, ১৯৭৪ সাল থেকে চট্টগ্রামে জুলুস হচ্ছে। এবারের বিশ্বের সবচেয়ে বড় জুলুস। বিশ্বের অনেক দেশে জুলুস ছড়িয়ে পড়েছে। মিশরে রাষ্ট্রীয়ভাবে জুলুস বের করা হয়। আমরা আশা করবো, নবীজীর শানে আয়োজিত চট্টগ্রামের জুলুস গিনেস বুকে স্থান পাবে।

বক্তব্য রাখেন আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, সূফি মিজানুর রহমান, জেমস ফিনলের এম ডি আহমেদ কামরুল ইসলাম ওবিই, সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, আনজুমান ট্রাস্ট’র এডিশনাল সেক্রেটারি ও জুলুস সাব-কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ সামশুদ্দিন, জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ সিরাজুল হক, এসিস্টেন্ট জেনারেল সেক্রেটারি এস.এম. গিয়াস উদ্দিন শাকের, ফাইন্যান্স সেক্রেটারি মুহাম্মদ সিরাজুল হক, প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি প্রফেসর কাজী শামসুর রহমান, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ কমিশনার এবং জামেয়ার চেয়ারম্যান অধ্যাপক দিদারুল ইসলাম, আল্লামা মুফতি ওবাইদুল হক নঈমী, অধ্যক্ষ মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান, উপাধ্যক্ষ ড. মাওলানা লিয়াকত আলী, আল্লামা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান, হাফেজ মাওলানা সোলায়মান আনসারী, মাওলানা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফি, উপাধ্যক্ষ মাওলানা আবুল কাসেম মুহাম্মদ ফজলুল হক, অধ্যক্ষ মাওলানা বদিউল আলম রেজভী, অধ্যক্ষ মাওলানা আবু তৈয়ব চৌধুরী, মাওলানা মনিরুজ্জমান আলকাদেরী ওলামায়ে প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন এডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার ও মাওলানা হাফেজ আনিসুজ্জামান আলকাদেরী।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট