চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

অভিযোগ যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে

অবৈধভাবে সর্ত্তাখালের বালু উত্তোলন

রাউজান ভাঙ্গনের হুমকিতে দু শতাধিক পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাউজান

১৫ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:০৪ পূর্বাহ্ণ

রাউজানের হলদিয়া ইউনিয়নের সর্ত্তাখাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে এলাকার বহু পরিবার খালগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আরো কমপক্ষে দেড়-দুই শতাধিক পরিবার ভাঙ্গনের হুমকিতে পড়েছে। ট্রাকে, চাঁদের গাড়িতে করে বালু নেয়ার কারণে ভেঙ্গে যাচ্ছে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার সড়ক। অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে স্থানীয় সড়কগুলোও।

এ অবস্থায় চরম অস্বস্তিতে রয়েছে এলাকার মানুষ। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য এলাকার বহু মানুষ প্রতিকার চেয়ে বালু উত্তোলনকারী ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহেদুল আলম হিরুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গণস্বাক্ষর করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবীর সোহাগের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য প্রশাসন বরাবরে আবেদন দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত জাহেদুল আলম হিরু। গত ৮ অক্টোবর সকালে হিরু তার সহযোগীদের নিয়ে সর্ত্তা খাল থেকে বালু উত্তোলনের জন্য উপস্থিত হলে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা তাতে বাধা দেয়। এ সময় জাহেদুল আলম হিরু ও তার সহযোগীদের সঙ্গে এলাকার সাধারণ মানুষের সংঘর্ষ হয়। দু’পক্ষের মারামারিতে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা এবং জাহেদুল আলম হিরু আহত হন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, হলদিয়া ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের বড়–য়া পাড়া, সওদাগর বাড়ি, বাড়ি পাড়া, আজিজুর রহমান বাড়ি, বইজ্যার হাটসহ বিভিন্নস্থানে সর্তা খালের মধ্যে পাওয়ার পাম্প মেশিন বসিয়ে দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে জাহেদুল আলম হিরু। এতে এসব এলাকার শতাধিক পরিবারের বসতঘর, হলদিয়া বড়–য়া পাড়া সড়ক, হলদিয়া ভিলেজ রোড সর্ত্তা খালের মধ্যে বিলীন হয়ে পড়ছে। বড়–য়া পাড়া শ্মশান সড়কটি এমনভাবে বিলীন হয়ে গেছে যে, শ্মশানে লাশ নেয়ার মতো অবস্থা নেই। জাহেদুল আলম হিরুকে বারবার বালু উত্তোলনে বাধা দিলেও তা অমান্য করে আসছে- এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।

স্থানীয় মেম্বার সবুজ বড়ুয়া বলেন, এই একজন (জাহেদুল আলম হিরু) ৪-৫ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষকে জিম্মি করেছে। তার বালু উত্তোলনের কারণে এলাকার রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

সিএনজি চালক মাহাবুল আলম বলেন, বালু উত্তোলনের কারণে আমার সাড়ে ৭ গ-া জমি খালে ভেঙে গেছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোনায়েদ কবীর সোহাগ সাংবাদিকদের বলেন, এলাকার ক্ষতিগ্রস্তরা অবৈধভাবে সর্তার খাল থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য আবেদন করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হবে ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার কাজে জড়িত যেই হউক, তাকে শাস্তি দেয়া হবে।

ওসি কেপায়েত উল্লাহ বলেন, জাহেদুল আলম হিরুর বিরুদ্ধে এলাকার লোকজন বিভিন্ন সময় অভিযোগ করছে। তবে কেউ বাদি হয়ে এখনো কোন মামলা করেনি। এ ব্যাপারে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনছুর আলম বলেন ‘জাহেদুল আলম হিরু দলীয় শৃঙ্খলা মানছেনা। তাকে আগেও একবার সর্তক করা হয়েছিল। তার ব্যাপারে এলাকার মানুষ চরম ক্ষুব্দ’। এ ব্যাপারে জাহেদুল আলম হিরু বলেন ‘পূর্ব শত্রুতার কারণে আমার বিরুদ্ধে কয়েকজন অভিযোগ করছে’। এ অভিযোগগুলো মিথ্যা, বানোয়াট বলে দাবি করেন তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট