চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সত্যতা মিলেছে পরিদর্শক রেফায়েতের অবৈধ আয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ অক্টোবর, ২০১৯ | ১১:৩৯ অপরাহ্ণ

খুলনার খালিশপুর নতুন কলোনীর মরহুম আব্দুল খালেকের মেয়ে নাছরিন আক্তার রুমার সাথে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরীর ১৯৯৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বিয়ে হয়। তিনি রাজশাহী রেঞ্জের ইন্সপেক্টর হিসেবে বর্তমানে কর্মরত আছেন।

চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকাকালীন সময়ে রেফায়েত মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জড়িত হয়ে কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন। পরে হ্যাপী চৌধুরী নামের এক নারীর প্রতিও তিনি আসক্ত হয়ে পড়েন। এসব বিষয় ফাঁস হওয়ার পর প্রতিবাদ করায় স্ত্রী রুমাকে দিনের পর দিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন রেফায়েত। কেড়ে নেয়া হয় দুই কন্যা রাইসা বিনতে চৌধুরী (১৭) ও নানজীবা চৌধুরীকে (১১)। রুমার প্রয়াত বৃদ্ধ বাবাকেও নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হলে কারাগারেও যেতে হয় পটিয়া থানা থেকে ক্লোজড হওয়া রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরীকে।

স্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে রেফায়েত উল্লাহর অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরপর তার নামে এবি ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে ১২টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়া তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার রুমার নামে পাওয়া যায় ৬টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য।

ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ তার স্ত্রী রুমার নামে বিভিন্ন ব্যাংকে জমা করেন রেফায়েত। পরবর্তীতে স্ত্রী রুমার বিভিন্ন ব্যাংকে জমাকৃত টাকা নিজের নামীয়  ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে উত্তোলন করেন। এছাড়া ভাই আফতাব উল্লাহ চৌধুরীকে তার ব্যাংক হিসাব থেকে ৬৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকার ২টি পে-অর্ডার প্রদান করেন ও আফতাবের নামে ৪১ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট কেনেন।

ঘুষের টাকায় নগরের নাসিরাবাদ আবাসিক এলাকায় ২০১৬ সালে জুমাইরা গ্রান্ড ক্যানিয়ন নামীয় একটি আবাসন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের তৈরি ভবনের পঞ্চম তলায় ২১৫০ বর্গফুট আয়তনের এ-৪ ফ্ল্যাট কেনেন স্ত্রীর নামে। রেফায়েতের নামে ১০৫ বর্গফুট আয়তনের পার্কিংও রয়েছ। মহানগর দায়রা জজ আদালত অর্ধকোটি টাকায় কেনা ওই ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশও দেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সময়ে আয়বহির্ভূত দুই কোটি ৭৯ লাখ ২৫ হাজার ৬৬৩ টাকার সম্পদ অর্জন এবং এর মধ্যে এক কোটি ৬৯ টাকা স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তর করার সত্যতা মিলেছে।

রবিবার (১৩ অক্টোবর) পরিদর্শক রেফায়েত ও তার ২ ভাই মো. আফতাব উল্লাহ চৌধুরী এবং মো. হাফিজ উল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুদক চট্টগ্রাম-১ কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

পূর্বকোণ-রাশেদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট