চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বন্দরে জাহাজ চলাচল শুরু পণ্য খালাস বন্ধ

বহির্নোঙরে সব কন্টেইনার অফডকে পাঠান, জট দূর হবে : খলিলুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

৫ মে, ২০১৯ | ২:৫০ পূর্বাহ্ণ

বন্দরে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে, তবে বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। জট নিরসনে আমদানি পণ্যভর্তি সব কন্টেইনার অফডকে পাঠিয়ে দেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি শিল্পপতি আলহাজ খলিলুর রহমান।
বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানিয়েছেন, দুর্যোগ কেটে যাওয়ায় জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। ১৭৫ মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ জাহাজসমূহ গতকাল সন্ধ্যায় জোয়ারের সময় জেটিতে আসা আরম্ভ হয়। জেটিতে ভিড়ার পরপরই কন্টেইনার খালাস শুরু হয়েছে। ১৭৫ মিটারের অধিক দীর্ঘ জাহাজসমূহ আজ দিনের প্রথম জোয়ারের সময় জেটিতে আনা হবে। প্রায় ৩৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর জেটি থেকে মাল ডেলিভারি গতকাল বেলা ২ টায় পুনরায় চালু হয়। ঘূর্ণিঝড়ের আশংকায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বৃহস্পতিবার সকালের জোয়ারের সময় জেটি থেকে সব জাহাজ বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানে মাল ডেলিভারি বন্ধ হয় বৃহস্পতিবার রাতে। ফণীর প্রভাব কেটে যাওয়ায় গতকাল দুপুরে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব সতর্কতা সংকেত এলার্ট-থ্রি প্রত্যাহার করে। এরপর পর্যায়ক্রমে বন্দরের যাবতীয় তৎপরতা আরম্ভ হয়।
আমদানি পণ্যবোঝাই ৮৮ টি জাহাজ রয়েছে বহির্নোঙরে। এগুলোর মধ্যে ২২ টি কন্টেইনার জাহাজ। এগুলো কন্টেইনার নিয়ে চলে আসবে জেটিতে। অন্যগুলোর পণ্য বহির্নোঙরে লাইটারিং হবে। বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং এন্ড বার্থ অপারেটরস এসোসিয়েশন (বিএসবিওএ)’ এর চেয়ারম্যান এ কে এম শামসুজ্জামান ( রাসেল ) জানিয়েছেন, সমুদ্র উত্তাল থাকায় বহির্নোঙরে কোন লাইটার জাহাজ যায়নি। তবে, আজ সকাল থেকে বড় আকারের লাইটার জাহাজসমূহ যাবে। এগুলো লাইটারিং করবে মাদার ভেসেলের পণ্য।
চট্টগ্রাম বন্দর লাইটারিং ঠিকাদার সমিতির সভাপতি হাজি সফিক আহমেদ জানিয়েছেন, সব লাইটার জাহাজ শাহ আমানত সেতুর ওপাড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকূল হলে সাথে সাথে এগুলো বহির্নোঙরে পণ্য লাইটারিং করতে যাবে।
এদিকে, চিটাগাং মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি, শিল্পপতি আলহাজ খলিলুর রহমান গতকাল দৈনিক পূর্বকোণকে বলেছেন, বন্দর থেকে সরাসরি পণ্য ডেলিভারি অর্থাৎ লোকাল ডেলিভারির কারণে জেটিতে এবং বন্দর এলাকার রাস্তায় রাস্তায় মারাত্মক জট বিরাজ করছে সাম্প্রতিককালে। প্রতিদিন জেটিতে ৫ হাজার ট্রেইলার থাকে, রাস্তায় থাকে আরও ৫ হাজার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ( এনবিআর )’র নির্দেশনা না মেনে কাস্টমস হাউস কর্তৃক মহল বিশেষের স্বার্থে লোকাল ডেলিভারির ব্যবস্থা করার জেরে এই পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। অফডকের ট্রেইলারসমূহের যেখানে ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ৮টি ট্রিপ করা সম্ভব, সেখানে কোন কোন দিন দু’টি ট্রিপও পারছে না। সকাল ৮ টায় প্রবেশ করে রাত ৮ টায় জেটি থেকে বের হতে হয়। আলহাজ খলিলুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বহিবিশ্বে যে সুনাম অর্জন করেছিল গত কয়েক বছরে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে লোকাল ডেলিভারি চালু করার কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে। কোন দেশের বন্দরে জেটি থেকে ডেলিভারি দেয়া হয় না, ডেলিভারি দেয়া হয় অফডক থেকে। জেটির জটের কারণে জাহাজ থেকে কন্টেইনার খালাসে সমস্যা হচ্ছে এবং রপ্তানি কন্টেইনারও নামানো যাচ্ছে না।
মেট্রোপলিটন চেম্বার সহ সভাপতি এ এম মাহবুব চৌধুরী গতকাল বন্দরকে জটমুক্ত করতে ৬ টি সুপারিশ পেশ করেছেন বন্দর চেয়ারম্যান বরাবরে। তিনি উল্লেখ করেন, সুপারিশসমূহ কার্যকর হলে ১৫ দিনের মধ্যে জটমুক্ত হবে বন্দর।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট