চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মাইনিং পোর্ট ও ফিশ হারবার নির্মাণের পরিকল্পনা চবকের

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ আগস্ট, ২০১৯ | ১:৫২ পূর্বাহ্ণ

দেশের বিশাল সমুদ্র সম্পদ আহরণ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের লক্ষে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) মাইনিং পোর্ট ও ফিশ হারবার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সরকার ব্লু-ইকোনমির ওপর গুরুত্বারোপ করায় শীঘ্রই সমুদ্র সম্পদ আহরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সমুদ্রের গভীরে থাকা মূল্যবান মিনারেল মিশ্রিত মাটি-বালি সমুদ্র উপকূলের নির্দিষ্ট স্থানে তুলে সেমি প্রসেস করার জন্য মাইনিং পোর্ট প্রয়োজন। যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে। একইভাবে মূল্যবান টুনা ফিশসহ অন্যান্য মাছের জন্য ফিশ হারবার পোর্ট দরকার। উক্ত হারবারে থাকা প্রক্রিয়াজাত কারখানা থেকে মাছ সরাসরি বিদেশে রপ্তানি করা যাবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে বন্দর ভবনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল জুলফিকার আজিজ এ কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সিনিয়র সহসভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজা, সহসভাপতি মনজুর কাদের মনজু, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক রূপম চক্রবর্তী, ক্রীড়া সম্পাদক দেবাশীষ বড়–য়া দেবু, গ্রন্থাগার সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী, কার্যকরী সদস্য স ম ইব্রাহীম, কাজী আবুল মনসুর এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মোঃ জাফর আলম, সদস্য (ফিন্যান্স) কামরুল আমিনসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
বন্দর চেয়ারম্যান আরো বলেন, চবক ভবিষ্যত কর্মকা-ের জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার এলবাম তৈরি করার কাজ হাতে নিয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে বন্দরকে আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত করা হবে। আগামী ২০ থেকে ৩০ বছরের পরিকল্পনা এতে থাকবে। এ জন্য চবক নতুন জমি কেনার প্রতিও মনোনিবেশ করেছে। ইতোমধ্যে বে-টার্মিনাল ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের জন্য জমি নেয়া হয়েছে। মিরসরাই এলাকায় জমি কেনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যত উন্নয়ন পরিকল্পনায় জমির যেন কোন সংকট না হয় সেদিক লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
চবক চেয়ারম্যান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের ইকুইপমেন্ট সংযোজনসহ অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে বিশ্বের বন্দরের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ৬ ধাপ এগিয়ে এসেছে। গত বছর যেখানে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ছিল ৭০। এ বছর তা ৬৪ তে উন্নীত হয়েছে। তিনি বলেন, আগামী ২০২২ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বের শীর্ষ বন্দরের তালিকার ৫০-এর মধ্যে পৌঁছাবে। কারণ বন্দরের ইয়ার্ড ও টার্মিনাল সম্প্রসারণের ফলে হ্যান্ডলিং ক্ষমতা ৩১ লক্ষে উন্নীত হবে। এ বছর কন্টেনার হ্যান্ডলিং-এর পরিমাণ ছিল ২৯ লক্ষ ৩ হাজার।
তিনি বলেন, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল, ওভার ফ্লো-ইয়ার্ড নির্মাণ কাজ আগামী ২ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হলে হ্যান্ডলিং ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। বন্দরে আসা জাহাজ ৭২ ঘন্টার স্থলে ৩৬ ঘন্টার মধ্যে পণ্য খালাস ও বোঝাই কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। তিনি বলেন, বন্দর সম্প্রসারণ পরিকল্পনায় বে-টার্মিনাল হবে ফোকাল পয়েন্ট। বে-টার্মিনালে ডেলিভারি টার্মিনাল ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মিত হবে। যা আগামী দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। তিনি আগামী ২/৩ বছরকে চট্টগ্রামে বন্দরের জন্য ক্রিটিক্যাল সময় হিসেবে উল্লেখ করেন। কারণ এ সময়ের মধ্যে বন্দরের ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিনের মত কয়েক হাজার ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি প্রবেশ করবে না। সকল কন্টেইনার জাহাজ থেকে বে-টার্মিনালস্থ ডেলিভারি ইয়ার্ডে চলে যাবে। উক্ত স্থান থেকে ট্রাক, লরি ও কাভার্ডভ্যান পণ্য নিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে চলে যাবে। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে কোন ট্রাক প্রবেশ করতে হবেনা। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে মহাপরিকল্পনায় ভবিষ্যত প্রজন্মকে বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট