চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

ছবি: পূর্বকোণ

মতবিনিময় সভায় সেনাবাহিনীর ডিজি

নগরীর খালগুলো বাঁধমুক্ত করবে সেনাবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক

৪ মে, ২০১৯ | ৭:৫৬ অপরাহ্ণ

জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীর খালগুলো বাঁধমুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী। গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় দামপাড়া ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড আর্মি ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, ‘নগরীর বিভিন্ন খালে কাজের প্রয়োজনে বাঁধ দেয়া হয়েছে। তবে বর্ষা মৌসুমে খালগুলোকে বাঁধমুক্ত করা না হলে জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করবে। আর এই জলাবদ্ধতার হাত থেকে নগরবাসীকে বাঁচাতে প্রাথমিক পর্যায়ে শতভাগ বাঁধমুক্ত করা হবে খালগুলো। এছাড়া খালে ময়লা ফেললে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি’।
এসময় তিনি আরো বলেন,‘অনেক খাল থেকে ময়লা অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। যত্রতত্র ময়লা ফেলায় কিছুদিন পর আবারও খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে। যার চিত্র আপনাদের ‘স্লাইড শো’ এর মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে বর্ষায় আবারো জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। আর তাই যারা খালে ময়লা ফেলে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বেশ কয়েকটি সভায় এ জরিমানার বিষয়টি ওঠে এসেছে। এছাড়া জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সুফল পাওয়াও সম্ভব হবে না। কেননা এর আগে এ বিষয়ে সচেতনতার জন্য র‌্যালি, মাইকিং কিংবা সমন্বয় করলেও কোন সুফল আসেনি। এজন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এরপর যারা এধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা কিংবা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীর খালগুলোর ওপর গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদে অভিযান শুরু করা হবে বলেও জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সাথে কথা বলে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এছাড়া আগের তুলনায় আসন্ন বর্ষায় জলাবদ্ধতার প্রকোপ কিছুটা কম হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন,‘সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে জলাবদ্ধতার প্রবণতা কমাতে কাজ চলছে। আর এ নিয়ে ৪১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের সাথে চার দফায় বৈঠক করা হয়েছে। আমরা জলাবদ্ধতা নিরসনে তাদের পরিকল্পনাগুলো জমা দিতে বলেছি। এছাড়া শতভাগ কাজ সম্পন্ন করে সেনাবাহিনী দায়িত্ব শেষ করবে বলেও জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী।
সভায় পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে জলাবদ্ধতার ১২টি কারণ, প্রকল্পের আওতায় চলমান ৮টি কাজের সর্বশেষ তথ্য জানানো হয়। এ ছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নে ময়লা না ফেলার জন্য জনসচেতনা তৈরি, জরুরি ভিত্তিতে ব্রিজ বা কালভার্টের থেকে ইউটিলিটি লাইন অপসারণ, সমন্বয়ের মাধ্যমে অবৈধ উচ্ছেদ কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও জলাবদ্ধতা সমস্যা স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে প্রস্তাবিত ৪০টি টাইডাল রেগুলেটর একই সঙ্গে নির্মাণের সুপারিশ করা হয়।
এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল আবু সাদাত মোহাম্মদ তানভীর (পিএসসি), চসিক প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ, সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, প্রকল্প কর্মকর্তা (১) মেজর মাহমুদ হাসান (পিএসসি), প্রকল্প কর্মকর্তা (২) মেজর শাহনেওয়াজ মাহমুদ, প্রকল্প জেসিও ওয়ারেন্ট অফিসার মো. হেলাল উদ্দিন, প্রকল্প এনসিও সার্জেন্ট মো. আব্দুল হাইসহ বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট