চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সন্দ্বীপের উরিরচরে ১০ হাজার মানুষের বিপরীতে একটি আশ্রয়কেন্দ্র

নরোত্তম বনিক হ সন্দ্বীপ

৪ মে, ২০১৯ | ২:৩৫ পূর্বাহ্ণ

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে সন্দ্বীপে তেমন একটা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ফণী’র প্রভাব শুরুর আগেই আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে বেড়িবাঁধ এলাকায় লোকজন। গতকাল (শুক্রবার) সকাল থেকে বাতাস বাড়তে থাকে। তবে আকাশ ছিল পরিষ্কার। বিকাল থেকে আকাশ কালো হয়ে বৃষ্টি শুরু হয়। দুপুর থেকে সারিকাইত, মাইটভাঙ্গা, মগধরা, মুছাপুর, আজিমপুর, রহমতপুর, বাউরিয়া, আমানউল্ল্যাহ, সন্তোষপুর ও দীর্ঘাপাড় ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী বেড়িবাঁধ এলাকার মানুষ নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে যাওয়া শুরু করে। বিকাল ৪ টায় বাতাসসহ মাঝারি ধরণের বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির পর থেকে আশ্রয় কেন্দ্রমুখী মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অনেকে নদীর কূল থেকে সরে গিয়ে মধ্যখানে আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠে। দমকা বাতাসে গাছের ডালপালা ছিড়ে যেতে দেখা যায়। জোয়ারের সময় নদী কিছুটা উত্তাল থাকলেও রাত ৮টা পর্যন্ত নদীর অবস্থা স্বাভাবিক দেখা গেছে। সন্দ্বীপ থেকে মূলভূখ-ে যাতায়াত করা সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সকাল থেকে সিপিপি কর্মী ও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বেড়িবাঁধ এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসতে মাইকিং করা হয়। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোর নিচে গবাদিপশু রাখতে দেখা গেছে। তবে সারিকাইত ইউনিয়নের প্রায় ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ৩টি অংশে ছেড়া বেড়িবাঁধ দেখা গেছে।
মাইটভাঙ্গার বাসিন্দা মো. তাজুল ইসলাম রুমি বলেন, এর আগে কখনো জলোচ্ছ্বাস দেখিনি। তবে ফণী’র বিষয়ে সতর্ক আছি। নদীর কূল থেকে আত্মীয়-স্বজনদের সরিয়ে এনেছি।
গতকাল (শুক্রবার) সকাল থেকে শংকার মধ্যে ছিল উরিরচর ইউনিয়নের বাসিন্দারা। সন্দ্বীপ থেকে নদী বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন হওয়ায় তারা বেশী ঝুঁকিতে ছিল। চরের ৪০ হাজার মানুষের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে মাত্র ৪টি। অন্যদিকে চরের চারপাশে কোন বেড়িবাঁধ না থাকায় জনসাধারণের মাঝে ভয় ছিল বেশী। উরিরচর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, উরিরচরে ১০ হাজার মানুষের বিপরীতে একটি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে।
১৯৮৫ ও ১৯৯১ সালের বন্যায় বেড়িবাঁধ ও আশ্রয়কেন্দ্রের অভাবে চরের কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছে। প্রায় ৫০ হাজার গবাদিপশু বন্যায় ভেসে গেছে। এখন যদি আবার ৫ থেকে ১০ ফুট পানিও ওঠে তবে এখানে লাশের বন্যা বয়ে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল হুদা জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাবে যাতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেজন্য আশ্রয়কেন্দ্র, মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতা শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে সন্দ্বীপ এসে বেড়িবাঁধ এলাকার মানুষের সাথে কথা বলেন। এসময় তিনি মগধরা ইউনিয়নের একটি ছিড়ে যাওয়া বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামত করান। তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি দলীয় লোকজনকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট