চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় ফণী’র মৃদু প্রভাব চট্টগ্রামে

উৎকণ্ঠার পর স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

৪ মে, ২০১৯ | ৩:২০ পূর্বাহ্ণ

ঘূর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাব নিয়ে গত দুইদিন ধরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ও আতঙ্কে ছিল মানুষ। গতকাল শুক্রবার সকালে ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে আঘাত হানার পর কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। এরমধ্যেও জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে ।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গতকাল শুক্রবার দুপুরের পর থেকে তীব্র তাপদাহ বিরাজ করেছিল। ঘূর্ণিঝড় আতঙ্কে মানুষ ঘর থেকে বের হয়নি। রাস্তাঘাটে যানবাহন ও মানুষের চলাচল কম ছিল। তবে ঘূর্ণিঝড় ফণী বাংলাদেশে অগ্রসর হওয়ায় বিকেল থেকে আবহাওয়া শীতল হয়ে আসে। চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা ও মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত হয়। তবে খুলনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এদিকে, চট্টগ্রাম প্রশাসন ঘূর্ণিঝড় পূর্ব ও পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রস্তুত রেখেছে ২৭৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্র। এতে আট লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় গ্রহণের সুযোগ পাবে। ২৮৪টি মেডিকেল টিম গঠন করেছে সিভিল সার্জন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৬ হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক। এছাড়াও চট্টগ্রাম বন্দর, সিটি কর্পোরেশন, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, কোস্টগার্ড, পিডিবিসহ সরকারি-বেসরকারি, স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সংস্থা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। জেলা ও উপজেলাসহ বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকরিস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার মো. তৌহিদুল ইসলাম পূর্বকোণকে জানান, গতকালও বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে লোকজনকে সতর্ক করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকা ও পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে অনেকেই আত্মীয় স্বজনের বাড়ি ও নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে গেছে। কাট্টলী জেলে পাড়া ও সাগর তীরের প্রায় ৫-৬ হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও কিছুটা দুর্বল হয়ে ২১.৩ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬.১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থান করছিল। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত বলবৎ রয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন বলেন, প্রত্যেক উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। উপকূলীয় উপজেলা সন্দ্বীপ, সীতাকু-, মিরসরাই, আনোয়ারা ও বাঁশখালীতে বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে। লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় ও সাইক্লোন শেল্টারে চলে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি রয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট