চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

রাজাখালীতে নকল ট্যাংয়ের কারখানা

ট্যাং, চা-পাতা, চিনি ও টেস্টিং সল্ট তৈরি হচ্ছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩ মে, ২০১৯ | ৩:০৯ পূর্বাহ্ণ

রীতিমত কারখানা বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নগরীর চাক্তাই রাজাখালী রোডে নকল ট্যাং, চা-পাতা, চিনি ও টেস্টিং সল্ট তৈরি করছিল বদরুল আলম (২৯)। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) উপ-কমিশনার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে কারখানাটির সব পণ্য ও মেশিন জব্দ করেছে ডিবি পুলিশ। অস্বাস্থ্য ও নোংরা পরিবেশে তৈরি এসব পণ্যে মোড়ক ব্যবহার করে ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্রি করে আসছে তারা। রাজাখালী রোডের এস আলম টাওয়ারের ২য় তলা ও আলিফ টাওয়ারের ৩য় তলায় তিনটি রুম ভাড়া নিয়ে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে সাতকানিয়ার বদরুল আলম (২৯)। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবি পুলিশ।
এস আলম ভবন থেকে জব্দ করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে- প্রস্তুতকৃত ট্যাং ২০০ কার্টুন, ট্যাং এর গুড়া ৪ বস্তা, প্রস্তুতকৃত টেস্টিং সল্ট ১০ কার্টুন, বিভিন্ন সাইজের ১ হাজার ৮০০ খালি ট্যাং এর বোতল। এছাড়া, ৫৫ কেজির চা-পাতার ১২টি বস্তা, ২৫ কেজির টেস্টিং সল্টের ১২টি বস্তা। এছাড়া, ট্যাং প্যাকেজিং ২টি মেশিন, ১টি ওয়েট স্কেল, ১টি সিলিং মেশিন জব্দ করা হয়েছে।
আলিফ টাওয়ার থেকে জব্দকৃত পণ্যের মধ্যের রয়েছে- ১৪ কার্টুন টেস্টিং সল্ট, প্রতি কার্টুনে ৩ কেজি করে ৪২০ কেজি। খোলা টেস্টিং সল্ট ৩০ কেজি। প্রস্তুতকৃত ট্যাং ১ বস্তা, প্রায় ৫০ কেজি। সিয়াম চা-পাতা ৯ ব্যাগ। প্রতি ব্যাগে ১০ কেজি করে ৯০ কেজি। ৩২ কার্টুনে ১২৮ কেজি প্রস্তুতকৃত ট্যাং। ১৮টি চিনির বস্তা, প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি করে ৯০০ কেজি। প্রস্তুতকৃত ট্যাং ১০০ কেজি। ট্যাং প্রস্তুত এর লাল রং ২৫০ গ্রাম। এছাড়া, ১টি ট্যাং মিক্সার মেশিন, ১টি ড্রাইং মেশিন ও ১টি টেস্টিং সল্ট প্যাকেজিং মেশিন জব্দ করেছে ডিবি পুলিশ।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজাখালী থেকে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল পণ্য জব্দ করেছে ডিবি পুলিশ। জব্দ করা পণ্যে মধ্যে রয়েছে ট্যাং, চা-পাতা, চিনি ও টেস্টিং সল্ট। এছাড়া, এসব পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত সব মেশিন ও যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানতে পারি, এই কারখানার মালিক সাতকানিয়ার বদরুল আলম (২৯)। তিনি এইসব নকল পণ্য তৈরি করে বিপুল অর্থ আয় করেছেন।
তিনি আরো বলেন, আমরা কারখানার হিসাবের খাতা থেকে প্রাথমিকভাবে জানতে পারি এসব নকল পণ্য তৈরি করে মাসে ছয় থেকে আট লাখ টাকা মুনাফা করছে কারখানা মালিক। আসন্ন রমজান এবং গরমকে কেন্দ্র করে এসব পণ্য তৈরি করে আসছিল। বিশেষ করে প্রচুর পরিমাণে নকল ট্যাং তৈরি করেছে তারা। এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এসম্পর্কে মার্কেটের সিকিউরিটি গার্ড মো. মহসিন বলেন, আগে এই কারখানাটি চাক্তাই মদিনা মার্কেটে ছিল। এস আলম টাওয়ারে আসে দুই-তিন মাস হবে। যতটুকু জানি, হাল্কা মাল রাখার কথা বলে এই বাসা ভাড়া নিয়েছে। তারা যে এখানে নকল বা ভেজাল পণ্য তৈরি করেেছ তা আমরা জানতাম না।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট