চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

যৌতুক দাবি ও স্বর্ণালংকার চুরির অভিযোগ

নববধূ ও বরের পাল্টাপাল্টি মামলা, দু’জনই প্রধান আসামি

নিজস্ব সংবাদদাতা ,পটিয়া

১ জুলাই, ২০১৯ | ২:১২ পূর্বাহ্ণ

সদ্য বিয়ের পর পিতার বাড়িতে তিনদিনের মাথায় বেড়াতে এসে আর ফিরলেন না নববধূ সাহানা আকতার। উপরন্তু স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের অভিযোগ এনে মামলা টুকে দিলেন। এদিকে স্বামীও বসে থাকার মানুষ নন। তিনিও স্বর্ণচুরির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করলেন স্ত্রীর বিরুদ্ধে। আসামি করলেন কনের বাবা মা ও ভাইকে। পটিয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পটিয়া উপজেলার জিরি ইউনিয়নের কৈয়গ্রামের খাদেম আলী সওদাগর বাড়ির বাসিন্দা মৃত জাফর আহমদের প্রবাসী পুত্র মোহাম্মদ এয়াকুবের সাথে তারই আপন মামাত বোন কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলামের কন্যা সাহানা আক্তারের বিয়ে হয়। গত ২২ মার্চ কাবিননামা সম্পাদনের পর গত ১০ এপ্রিল বড়উঠানস্থ এক কমিউনিটি সেণ্টারে আকদ ও প্রীতিভোজ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এরপর সামাজিক ভাবে বরের হাতে কনে তুলে দেয়া হয়। বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে দু’দিন অবস্থানের করে ৩ দিনের মাথায় বেড়াতে যান নববধূ। এরপর স্বামীর বাড়িতে আর ফিরবেন না বলে কনে পরিবারের পক্ষ থেকে বর পক্ষের বাড়িতে জানিয়ে দেন। এ নিয়ে বড়উঠান ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল আলমের মধ্যস্থতায় কয়েক দফা সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কনে শ্বশুর বাড়িতে ফিরতে রাজি না থাকায় সমঝোতা সম্ভব হয় নি। এরপর ৫ মে স্বামী ও শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে যৌতুক দাবির অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুন্যালে স্বামীকে প্রধান আসামি করে ৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পটিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুব্রত সরকার তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে মামলায় উল্লেখিত যৌতুক দাবির সত্যতা মেলেনি এবং কনের অমতে বিয়ে দেয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে কনে ৩ দিনের মাথায় বাবার বাড়ি যাওয়ার সময় উপহারের স্বর্ণ ব্যতীত স্বামীর বড় বোনের ১০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করার অভিযোগে গতকাল পটিয়া জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক বিশ্বেশ্বর সিংহ মামলাটি পটিয়া থানা ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য আদেশ দেন। বরপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট জসিম উদ্দিন জানান, মামলায় অভিযোগ করা হয়, কনে বাবার বাড়ি যাওয়ার দিন বিয়েতে তাকে দেয়া স্বর্ণালংকার ছাড়াও আরো ১০ ভরি অলংকার নিয়ে গেছেন। তাকে পিতা, মাতা ও ভাই চুরিতে সহযোগিতা করেছে। এ অভিযোগে মামলা দায়েরের পর আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পটিয়া থানাকে নির্দেশ দেন। তাতে কনের পিতা নুরুল ইসলাম, মা ফিরো খাতুন ও ভাই তসলিম উদ্দিনকে আসামি করা হয়। কনে সাহানা আক্তার জানান, বিয়ের পর তার উপর যৌতুকের জন্য নির্যাতন করা হয়েছে। এ জন্য তিনি স্ব^ামীর বাড়িতে ফিরতে রাজি নন এবং তিনি যৌতুক দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে বর মোহাম্মদ এয়াকুব জানান, কোন ধরণের নির্যাতন বা যৌতুক দাবি নয়, চুরি হওয়া স্বর্ণ ফেরত না দিতেই তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট