চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ব্যবসায়ী লিটু হত্যার রায়স্বামীর মৃত্যুদ- স্ত্রীর যাবজ্জীবন

আদালত প্রতিবেদক

২৯ এপ্রিল, ২০১৯ | ২:৩৫ পূর্বাহ্ণ

ঋণের টাকা হাতিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে পোশাক কারখানা ব্যবসায়ী সাহেদুল আলম লিটু হত্যার দায়ে আদালত স্বামীর মৃত্যুদ- ও স্ত্রীর যাবজ্জীবন কারাদ- ও একলাখ টাকা অর্থদ-ের আদেশ দিয়েছেন। গতকাল রবিবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. আবদুল হালিম এ – রায় দেন।
দ-াদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, আমজাদ হোসেন শাওন ওরফে অপু ও তার স্ত্রী সায়েরা হক মৌ। আমজাদ জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন। তার স্ত্রী গতকাল রায় ঘোষণার সময় হাজির ছিলেন। রায়শেষে তাকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।
ট্রাইবুনাল পিপি এডভোকেট মো. আইয়ুব খান পূর্বকোণকে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পারায় আদালত এ রায় দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, সাহেদুল ও আসামি আমজাদ একে অপরের বন্ধু ছিলেন। লিটু হালিশহরে তার শ^শুরের পোশাক কারখানা দেখাশোনা করতো। বন্ধুত্বের সূত্রে সাহেদের কাছ থেকে আসামি আমজাদ বিভিন্ন ব্যবসায়িক সুবিধা ভোগ করতেন। আমজাদের কাছে লিটু অনেক টাকা পাওনা ছিল বলে জানান পিপি।
আসামিরা হালিশহর থেকে ফোনে বেড়াতে রাঙামাটি ডেকে নেয় লিটুকে। তারা পাওনা টাকা থেকে হাতিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে লিটুকে খুনের পরিকল্পনা করে । আসামিদের নিমন্ত্রণে লিটু রাঙামাটির উদ্দেশ্যে রওনা হলে আসামি, তার স্ত্রী ও শ্যালিকা ফারিয়া হক পদ্ম রাঙামাটি শহরে প্রবেশপথে লিটুকে অভ্যর্থনা দিয়ে নিজেদের গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর তারা ৪ জন রাঙামাটি কোতোয়ালী থানা এলাকার মোটেল জাজ এ ৯ ও ১০ নম্বর কক্ষটি ভাড়া নেয়। দুটি রুমই ভাড়া নেয়া হয় আসামি আমজাদের নামে। কিন্তু আমজাদ প্রথম থেকেই হোটেলের রেজিস্ট্রারে তার নিজের নাম ঠিকানা না দিয়ে আইনুল হক নামে নিজের পরিচয় ও ভুয়া ঠিকানা লিপিবদ্ধ করে। এরপর ২০১৫ সালের ১৪ আগস্ট লিটুকে কক্ষের ভেতর বৈদ্যুতিক ওয়ার পেচিয়ে শ^াসরোধ করে হত্যা করে। এরপর তিনজন মিলে বস্তায় করে নিজেদের গাড়িতে করে লাশ ফেলে দেয়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তু হোটেলে বাইরে পাহারা থাকায় তাতে ব্যর্থ হয়ে মৃতদেহ বেডশিটে বেঁধে বাথরুমে ফেলে রাখে। এরপর তিন আসামি চলে যাওয়ার সময় তাদের গতিবিধি হোটেল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। এরপর তাদের আটক করে পুলিশে খবর দিলে খুনের ঘটনা ধরা পড়ে। এ ঘটনায় রাঙামাটি কোতোয়ালী থানায় তিন আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই রুহুল আলম। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়। অপরদিকে, আমজাদের শ্যালিকা ফারিয়ার অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তার জন্য পৃথক মামলা চলছে রাঙামাটি শিশু আদালতে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর তিন আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর আসমিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এ রায় দেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট