চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

অন্তর্কোন্দলে এক জাহাজের পণ্য খালাস ১১ঘণ্টা ধরে বন্ধ!

নিজস্ব প্রতিবেদক

২ ডিসেম্বর, ২০২০ | ১২:৫২ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরের ২ নম্বর জেটিতে এমভি সি লিও নামের একটি জাহাজ বার্থিং পাওয়ার ১১ ঘণ্টা পর পণ্য খালাস শুরু করছে ওই জেটির দায়িত্বে থাকা বার্থ অপারেটর রুহুল আমিন এন্ড ব্রাদার্স। গতকাল দুপুর ১টায় জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের ২ নম্বর জেটিতে বার্থিং করে। চীনের সাংহাই থেকে পণ্য নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর জাহাজটি বন্দরের বহির্নোঙ্গরে আসে। ১২ দিন পর প্রায় ১১ হাজার ৭০৭ মেট্রিক টন জিআই কার্গো পণ্য নিয়ে বার্থিং পেয়ে বন্দরের ২ নম্বর জেটিতে খালাসের জন্য জাহাজটি ভিড়ে। কিন্তু জাহাজ ভেড়ানোর ১১ ঘণ্টা পর ওই জাহাজের পণ্য খালাসের সিদ্ধান্ত নেয় জেটিতে দায়িত্বরত বার্থ অপারেটর।

এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অনুরোধ করে ওই জাহাজের আমদানিকারক শিপিং এজেন্ট এমস ইন্টারন্যশনাল। চিঠির সূত্রে জানা যায়, ওই জাহাজে কর্ণফুলী টানেলের ১০ হাজার ৪৭৩ মেট্রিক টন পণ্য খালাসের অপেক্ষায় আছে। কিন্তু বার্থ অপারেটরের কারণে ওই পণ্যও খালাস হচ্ছে না। তাতে সরকারের মেগা প্রজেক্টের কাজে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এছাড়া প্রতিদিন একটি জাহাজ অপেক্ষায় থাকলে প্রায় ১৫ হাজার ডলার ক্ষতি হবে। একই সাথে অন্যান্য জাহাজকেও বার্থিং পেতে অপেক্ষায় থাকতে হবে। যার কারণে প্রতিটি জাহাজ বিপুল ক্ষতির সম্মুখিন হবে। পণ্য খালাস বন্ধ রাখার কারণ জানতে চাইলে বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক পূর্বকোণকে বলেন, এমভি সি লিও নামের যে জাহাজের পণ্য খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে সেই জাহাজের দেশীয় এজেন্টের সাথে বার্থ অপারেটরদের মধ্যকার একটি কোন্দল চলমান রয়েছে। কিন্তু তাদের অন্তর্কোন্দলে যাতে বন্দরের পণ্য খালাস ব্যাহত না হয় তা সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সাথে দুই সংস্থাকেই পারস্পরিক সমঝোতার জন্য বন্দরে ডাকা হয়েছে। এ ব্যাপারে দ্রুত সমাধান করা হবে।

এদিকে একই বিষয়ে জানতে চাইলে বার্থ অপারেটরস এসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলে ইকরাম চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, আজকে চট্টগ্রাম বন্দরের যে সাফল্য তার পেছনে বার্থ অপারেটরেরা ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। বার্থ অপারেটরেরা নিষ্ঠার সাথে কাজ করেছে বলেই বন্দরের প্রডাকটিভিডিও বেড়েছে। তাই এই সাফল্যে বার্থ অপারেটরেরা শিংহভাগ দাবিদার। আজকে (গতকাল) যে জাহাজের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে তা বার্থ অপারেটরেরা সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ বন্ধ রেখেছে। কিন্তু এই ধরনের কাজ বন্ধ রাখার কোন নজির বার্থ অপারেটরদের অতীতে ঘটেনি। এর পেছনে নির্দিষ্ট একটি মানুষের নির্দিষ্ট একটি শিপিং এজেন্টের কিছু কটূক্তি ও মন্তব্যের কারণে শুধুমাত্র তার জাহাজের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ওই জাহাজে অন্য পণ্য থাকায় বন্দরের অনুরোধে রাত ১২টা থেকে পণ্য খালাস করা হবে।

জানা যায়, এক শিপিং এজেন্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গত ৩ নভেম্বর বার্থ অপারেটরদের নিয়ে কটূক্তি প্রকাশ করে। যার কারণে সব বার্থ অপারেটর সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় ওই শিপিং এজেন্ট এর কোন জাহাজের পণ্য বার্থ অপারেটরেরা খালাস করবে না। এ ব্যাপারে গত ৩০ নভেম্বর বন্দরকে চিঠিও দেয়া হয়।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট