চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাঁশখালী পৌরসভা: জটিল সমীকরণে আওয়ামী লীগ, সুবিধায় বিএনপি

অনুপম কুমার অভি, বাঁশখালী

২৮ নভেম্বর, ২০২০ | ৩:০০ অপরাহ্ণ

চার ভাগে বিভক্ত বাঁশখালী আওয়ামী লীগ। তিন গ্রুপ মাঠে সক্রিয়। আরেক গ্রুপ নিষ্ক্রিয় হলেও কৌশলে সক্রিয়। এর মধ্যে রয়েছে আবার উপ-দলীয় কোন্দল। বহুধা বিভক্ত আওয়ামী লীগ এবার দলীয় প্রার্থিতা নিয়ে জটিল সমীকরণে রয়েছে।

অন্যদিকে, অনেকটা খোশ মেজাজে রয়েছে বিএনপি। আর কৌশলে মাঠে থাকতে চায় জামায়াত।  মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করলেও নীবর রয়েছে বিএনপি। সরকারদলীয় প্রার্থীরা পোস্টার, ব্যানার সাঁটিয়ে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ত্যাগী নেতাকর্মী ছাড়াও বিএনপি-জামায়াত থেকে দলছুট হাইব্রিড আওয়ামী লীগও নৌকা প্রতীক পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। এ নিয়ে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। বাঁশখালী আসনের সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা আ. লীগ আবদুল্লাহ কবির লিটন, জেলা আ. লীগের অর্থ সম্পাদক মুজিবুর রহমানকে ঘিরে তিন ধারায় বিভক্ত আ. লীগের রাজনীতি।

এছাড়াও মাঠে রয়েছে আ. লীগের বর্ষিয়ান নেতা সাবেক সাংসদ প্রয়াত সুলতানুল কবির চৌধুরীর সমর্থকেরা। সুলতানুল পুত্র উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী গালিব নীবর এই গ্রুপটি নিয়ন্ত্রণ করেন। দলীয় কোন্দলের কারণে আ. লীগের প্রার্থীর তালিকা দীর্ঘ। পূর্বকোণ অন্তত ১২-১৫ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন। সকলে মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানান। চার ভাগে বিভক্ত আ. লীগ পছন্দনীয় লোকদের মেয়র পদে প্রার্থিতা করাতে দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। দলীয় কোন্দলের কারণে দলীয় প্রার্থী ছাড়াও বিদ্রোহী প্রার্থিতার কথাও শোনা যাচ্ছে। এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে ঘায়েল করার জন্য মাঠে সক্রিয় রয়েছে। বাঁশখালী পৌরসভা নির্বাচনে নবীন-প্রবীণ মিলে অন্তত দুই ডজন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। সরকারি দল আ. লীগ প্রার্থী জটিলতায় রয়েছে। মেয়র পদে এখন পর্যন্ত অন্তত ১২-১৫ জনের নাম মাঠে রয়েছে। তারা হলেন বর্তমান মেয়র ও বাঁশখালী পৌরসভার আ. লীগের আহ্বায়ক শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী। উপজেলা মহিলা আ. লীগের সভাপতি ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা আক্তার কাজেমী, সাবেক মেয়র শেখ ফখরু উদ্দিন চৌধুরী, পৌরসভা আ. লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাঁশখালী আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এসএম তোফায়েল বিন হোছাইন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী নুর হোসেন, আ. লীগ নেতা আক্তার হোসেন, উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এম মনসুর আলী, পৌরসভা যুবলীগের আহ্বায়ক হামিদ উল্লাহ হামিদ ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোহামুদুল ইসলাম, আ. লীগ নেতা জামাল উদ্দিন, পৌরসভা আ. লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নীলকন্ঠ দাশ মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে বর্তমান মেয়র শেখ সেলিমুল হকের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশে হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। যা দলীয় সমর্থন আদায়ে তাকে এবার বেগ পেতে হবে।

আ. লীগে প্রার্থী জটিল থাকলেও অনেকটা খোশ মেজাজে রয়েছে বিএনপি। জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক মেয়র কামরুল ইসলাম হোসাইনী এবারও অনেকটা নির্ভার রয়েছেন। তিনি দুইবার পৌরসভার প্রশাসক ও মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তবে বিএনপি নেতা রাসেল ইকবাল মিয়া ও জামায়াতের মো. ইসমাইলের নামও শোনা যাচ্ছে।

সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম হোসাইনী বলেন, ‘বিগত দিনে নির্বাচন করেছিলাম। কারচুপি করে আমাকে পরাজিত করা হয়েছিল। এছাড়াও দু’বার দায়িত্ব পালনে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। এসব বিবেচনায় দল এবারও আমাকে মনোনয়ন দেবে-এটা নিশ্চিত।’

বর্তমান মেয়র শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী বলেন, ‘বাঁশখালী পৌরসভায় দলীয় মনোনয়ন গুরুত্ব পাবে। নৌকা প্রতীক আমাকেই প্রদান করা হবে।’

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা আক্তার কাজেমী বলেন, বাঁশখালীর উন্নয়নে আমি কাজ করে যাচ্ছি। এই জন্য মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি।

এডভোকেট তোফায়েল বিন হোসাইন বলেন, দলীয়ভাবে আমাকে মনোনয়ন দেবে এই আশা করছি। সিনিয়র নেতাদের আশ্বাসে আমি মাঠে রয়েছি।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট