চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

কক্সবাজারে আগাম সবজি, স্বপ্নপূরণ কৃষকের

উৎপাদন ভালো হলেও দাম কমেনি

কক্সবাজারে আগাম সবজি, স্বপ্নপূরণ কৃষকের

আরফাতুল মজিদ

২৭ নভেম্বর, ২০২০ | ৭:৫১ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারে আগাম শীতকালীন সবজি চাষে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। হাটে ভালো দাম পাওয়ায় স্বপ্নও পূরণ হচ্ছে তাদের। খরুলিয়ার প্রতিটি জমিতে মাচায় ঝুলছে লাউ, শিম, পটল, শসা ও করলা। কোথাও আবার বেগুন, কপি, লালশাকসহ নানা রকমের শীতের সবজি।

এমন সবুজ ক্ষেতের দৃশ্য এখন হরহামেশাই চোখে পড়ছে কক্সবাজারের খরুলিয়া, রামু ও চকরিয়ায়। এ বছর অসময়ে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে অনেকে আবার পড়েছেন ক্ষতির মুখে।

কৃষি অফিসসূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কক্সবাজার জেলায় ৮ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, শিম, মিষ্টি কুমড়া, খিরা, মরিচসহ অবশিষ্ট জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করেছে কৃষক। এছাড়া জমিতে আগাম জাতের আলু ও পেঁয়াজ চাষও হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর সবজির আবাদ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

কক্সবাজার খরুলিয়া এলাকার কলিম উল্লাহ নামে এক কৃষক বলেন, ধান চাষ করে লোকসান গুনতে গুনতে কৃষক যখন দিশাহারা, তখন বিকল্প উপায়ে সবজি চাষ বেছে নিয়েছে। আমরা এখন সবজি চাষ করে অনেক বেশি লাভবান হচ্ছি। আমাদের জেলার সবজি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ও শহরে সরবরাহ হচ্ছে। এরইমধ্যে এখন শীতের আগমন ঘটেছে। সবজির চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, মিষ্টি ও চালকুমড়া, ঢেঁড়স, শসা, করলা, ডাঁটা, মিষ্টি আলু, পটল, কাঁকরোল, চিচিঙ্গা, বরবটি, গাজর, মুলা, শালগম, কলা, বেগুনসহ নানান জাতের সবজি চাষে ব্যস্ততার মধ্যদিয়ে দিন পার করছে চাষিরা।

কৃষক হোসাইন বলেন, আমি চলতি মৌসুমে ২৫ কাঠা জমিতে বেগুন ও বাঁধাকপির চাষ করেছি। ব্যয় হয়েছে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। অসময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে ফসল তৈরি করতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। ফুলকপিতে পচন রোগ ধরছে। বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ প্রয়োগ করেও সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। বেগুন জমি থেকেই ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। ভালো দাম পাওয়ায় এ ফসল থেকে লাভের আশা করছেন তিনি। এক বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলুর চাষ করেছেন। একই গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম দুই বিঘা জমিতে ফুলকপির চাষ করেছেন। তার জমিতে কপির চারাগুলো সবে সতেজ হয়ে উঠছে।

কৃষক আলী আকবর বলেন, ১০ কাঠা জমিতে লাউয়ের চাষ করেছেন। গাছগুলো এর মধ্যে অনেক বড় হয়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে এসব লাউ জমি থেকে তুলে বাজারে বিক্রি করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। গ্রামের মাঠে প্রচুর লাউয়ের চাষ হলেও এবার অনেকটা কম হয়েছে।

বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের নতুন সবজি বেগুন ৬০ টাকা, ফুলকপি ১০০, বাঁধাকপি ৫০, মুলা ৫০, শিম ৮০, মিষ্টি কুমড়া ৪০, পালংশাক ৪০, গাঁজর ১০০ ও শসা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

কক্সবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কাশেম বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় কক্সবাজারে এবার আগাম শীতকালীন সবজি চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ চাষ সফল করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কৃষকদের মধ্যে উন্নত জাতের বীজ, সার ও কীটনাশক সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংক কৃষকদের মধ্যে কৃষিঋণ প্রদান করেছে। ফলে দিন দিন আগাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে স্থানীয় চাষীরা।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট