চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

টেকনাফে শুঁটকি উৎপাদনের ধুম

হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ

২৬ নভেম্বর, ২০২০ | ৩:৫৩ অপরাহ্ণ

শুঁটকি উৎপাদন মৌসুমকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন টেকনাফের আড়তদার থেকে শুরু করে শুঁটকি উৎপাদনের সাথে জড়িত শ্রমিকেরা।

জানা যায়, টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়া, নাইট্যংপাড়া, কায়ুকখালীপাড়া টেকনাফ সদর ইউনিয়নের রাজারছড়া, মিঠাপানিরছড়া, সাবরাং ইউনিয়নের নয়াপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, জালিয়াপাড়া, পশ্চিমপাড়া, বাহারছড়া ইউনিয়নের উত্তর শিলখালী, হাজামপাড়া, শামলাপুর, সেন্টমার্টিনের শুটকিমহালে শুটকি উৎপাদনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে জেলেরা। নারী পুরুষ মিলে ছুরি মাছ, পোয়া মাছ, রূপচাঁদা, মাইট্টা মাছ, লইট্টা মাছ, হাঙর মাছ মাচাং বেঁধে প্রখর রোদে শুকিয়ে শুটকি উৎপাদন করছেন। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও।

সরেজমিনে দেখা যায়, টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের দু’ পাশে অন্তত ১০ থেকে ১৫টি পল্লীতে সাগরের মাছ শুকানোর কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। এছাড়াও টেকনাফের পৌর এলাকা, হ্নীলা, হোয়াইক্যং ও শাহপরীরদ্বীপেও শুঁটকি মাছের বড় পল্লী রয়েছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপে আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে কাঁচা মাছ শুকানো হয়। মৌসুম শুরুর পর থেকে জেলে পরিবারের নারী-পুরুষসহ শিশুরাও সাগরের কাঁচা মাছ রোদে শুকানোর কাজে নেমে পড়েছে। কয়েকজন জেলে জানান, শুষ্ক মৌসুম হচ্ছে কাঁচামাছ শুকানোর মোক্ষম সময়। আর এ সময় সাগরে জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়ে প্রচুর। কম মূল্যে সাগরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কিনে রোদে শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে শুঁটকি মাছে পরিণত করে তারা। কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকা শহরের অনেক ব্যবসায়ী মহাজন অগ্রিম টাকা দেয় শুঁটকি পল্লীতে। প্রতিদিন পিকআপ ও মিনি ট্রাক ভর্তি করে শুঁটকি মাছের চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে ছুরি মাছ প্রতি মণ ২৬ থেকে ২৮ হাজার টাকা, পাইস্যা মাছ ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা, লইট্টা মাছ ১৫ হাজার থেকে ১৭ হাজার টাকা ও পোয়া মাছ ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকারী জেলেরা জানান, কেবল লবণের পানি ব্যবহার করে মাছগুলো রোদে শুকানো হয়। কীটনাশক বা রাসায়ানিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় না। প্রক্রিয়াজাতকরণে বাস্তবসম্মত প্রশিক্ষণ দেয়া হলে গুণগত মানসম্পন্ন শুঁটকি উৎপাদন সম্ভব হতো বলে মনে করে তারা। অথচ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা কিংবা কোনো প্রকার সহযোগিতা ছাড়াই এখানকার প্রান্তিক মৎস্যজীবীরা মাছ রোদে শুকিয়ে শুঁটকি মাছে রূপান্তর করছে। এখানকার মাছ বেশি স্বাদ ও মজাদার হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে এ শুঁটকির চাহিদা রয়েছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট